• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
মানবতাবিরোধ অপরাধ

বাঙালি পাকিস্তানি সেনার বিরুদ্ধে তদন্ত চূড়ান্ত


আদালত প্রতিবেদক মার্চ ২১, ২০১৭, ০৩:০৭ পিএম
বাঙালি পাকিস্তানি সেনার বিরুদ্ধে তদন্ত চূড়ান্ত

ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে এই প্রথম কোনো বাঙালি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এক সদস্যের বিরুদ্ধে তদন্ত চূড়ান্ত করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা অভিযুক্ত ওই সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত চূড়ান্ত করে।

কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার আমিরাবাদ গ্রামের আসামি ক্যাপ্টেন মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ (৭৫) মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগে থেকেই পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ঢাকা সেনানিবাসে পাকিস্তান দখলদার সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। পরবর্তীতে ঢাকা সেনানিবাস থেকে কুমিল্লার সেনানিবাসে যোগ দিয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিয়ে নিজ এলাকা দাউদকান্দি সদরে ক্যাম্প স্থাপন করেন।

মুক্তিযুদ্ধের সময় ওই এলাকাতেই আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুন্ঠন, অগ্নিসংযোগ ও হত্যাসহ অন্যান্য মানবতাবিরোধী অপরাধ করেন।

মঙ্গলবার (২১ মার্চ) ধানমন্ডির তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান।

এ সময় জ্যেষ্ঠ সমন্বয়ক সানাউল হক ও এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেডএম আলতাবুর রহমানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।   

সংবাদ সম্মেলনে তদন্ত সংস্থার প্রধান হান্নান খান বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কর্মরত বাঙালি কোনো সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এটিই প্রথম তদন্ত প্রতিবেদন। আর তদন্ত সংস্থার এটি ৪৯ তম প্রতিবেদন। মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ না দেওয়ায় তার বিষয়ে কোনো রেকর্ড সেনাবাহিনীর কাছ থেকে পাওয়া যায়নি। তবে আসামি এখনও এলাকায় ক্যাপ্টেন নামেই পরিচিত।”

প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, “২০১৫ সালের ১১ অক্টোবর এ আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়। দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে তদন্ত চলেছে। আজই তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের কাছে তা দাখিল করা হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে সানাউল হক বলেন, “গত বছরের ২৪ জুলাইয়ের এক আবেদনের প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২ আগস্ট এ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। ওই দিনই কুমিল্লা জেলা পুলিশ আসামিকে গ্রেফতার করে। পরদিন অর্থাৎ ৩ আগস্ট আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করলে ট্রাইব্যুনাল তাকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেয়। আসামি বর্তমানে কারাগারে আছেন।”

এক প্রশ্নের জবাবে সানাউল হক বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে থেকে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে এমন অনেক অনেক বাঙালি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আমাদের তদন্ত অব্যাহত। তদন্তের সার্থেই তাদের নাম-ঠিকানা বা পরিচয় প্রকাশ করতে চাই না। আশাকরি পরবর্তীতে ধাপে ধাপে আপনাদের কাছে তা তুলে ধরা হবে।”  

সংবাদ সম্মেলনে তদন্ত কর্মকর্তা আলতাফুর রহমানের দেওয়া তথ্যমতে, এ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষি করা হয়েছে ১৯ জনকে। এছাড়াও জব্দ তালিকার সাক্ষি করা হয়েছে আরও তিন জনকে। মোট সাক্ষি ২১ জন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইউ

Wordbridge School
Link copied!