• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাজেটের পরে জিনিস-পত্রের দাম বৃদ্ধির শঙ্কা


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ২৭, ২০১৭, ০৮:৩৮ পিএম
বাজেটের পরে জিনিস-পত্রের দাম বৃদ্ধির শঙ্কা

সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির পক্ষ থেকে পর্যালোচনা তুলে ধরছেন

ঢাকা: বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) বলছে, নতুন বাজেটের প্রস্তবানায় জিনিস-পত্রের দাম বাড়বে। সামষ্টিক অর্থনীতির ব্যবস্থাপনা এখন ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়েছে, কমেছে রেমিটেন্স। পূরণ হওয়ার নয় রফতানি লক্ষ্যমাত্রা। রাজস্ব আয়ে বিরাট ঘাটতি তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে ব্যাংক ব্যবস্থাপনা শৃংখলা রক্ষার জায়গাটি আগের চেয়ে অবনতি ঘটেছে। এর বিষক্রিয়া গোটা অর্থনীতিতে ছড়িয়ে পড়েছে বলে মনে করনে সংস্থাটির গবেষকরা।

শনিবার (২৭ মে) রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টার ইন-এ এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলা হয় সিপিডির পক্ষ থেকে। চলতি অর্থবছরের (২০১৬-১৭) অর্থনৈতিক পরিস্থিতি(তৃতীয় সংস্করণ) বিশ্লেষণ প্রকাশ উপলক্ষ্যে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সিপিডির পক্ষ থেকে বলা হয়, নতুন মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট হার ১২ শতাংশে নামানো উচিত। একবারে না হলেও ধাপে ধাপে ভ্যাট কমিয়ে আনা যেতে পারে। নতুবা এই নতুন ভ্যাট আইন উৎপাদক ও ভোক্তার ওপর চাপ বাড়াবে। কোনো দাম না বাড়িয়ে ভ্যাটসহ বিদ্যুতের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করা উচিত। স্থানীয় শিল্প সুরক্ষায় সম্পূরক শুল্ক বহাল রাখার সুপারিশও করেছে সিপিডি। পেট্রোলিয়াম পণ্য, সিমেন্ট ও মোবাইল ফোন সেবার ওপর সম্পূরক শুল্ক না বসানোর কথাও বলেছে এই গবেষণা প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া আয়করের নিম্নতম স্তরটি ১০ শতাংশের পরিবর্তে সাড়ে ৭ শতাংশ করার সুপারিশ করেছে সংস্থাটি।

সামষ্টিক অর্থনীতি নিয়ে সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হচ্ছে, শিল্পের উন্নতি হচ্ছে। কিন্তু সেভাবে কর্মসংস্থান হচ্ছে না। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, যে পরিমাণ তৈরি পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানি হচ্ছে, সেই অনুসারে কর্মসংস্থান হচ্ছে না। তার মতে, অর্থনীতিকে অতিমাত্রায় প্রবৃদ্ধিনির্ভর দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা হচ্ছে। এটি অর্থনীতির অত্যন্ত খণ্ডিত ও অসম্পূর্ণ চিত্র। সবচেয়ে দুস্থ মানুষটি অর্থনীতি থেকে কতটা পেল, সেটা বিবেচ্য হওয়া উচিত।

বিনিয়োগ সম্পর্কে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগের ব্যূহ ভেদ করতে পারছি না। জিডিপিতে যে বাড়তি বিনিয়োগ আসছে, তা আসছে রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ থেকে । ভোগের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত অংশটি আসছে, তাও রাষ্ট্রের ভোগ। ভোগ ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এই মুহূর্তে অর্থনীতি ধাবিত হচ্ছে রাষ্ট্র দিয়ে। ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগের দুর্বলতা সম্পর্কে তিনি বলেন, অবৈধ উপায়ে অর্থ দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। নির্বাচন যত সামনে আসবে, অর্থ পাচার তত বাড়বে। আবার আফ্রিকার দেশগুলোতে বিনিয়োগই বেশি লাভজনক মনে করেন এ দেশের ব্যবসায়ীরা। পুঁজি দুর্ভিক্ষের দেশ এখন পুঁজি রপ্তানির দেশে পরিণত হচ্ছে। আর ব্যয়বহুল ভোগ কাঠামোর দিকে যাচ্ছি। এর উদাহরণ, এ দেশে বিএমডব্লিউ ব্যান্ডের বিলাসবহুল গাড়ি বিক্রিতে এশিয়ায় পঞ্চম বাংলাদেশ।

সিপিডির পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনে দরকার পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান। কিন্তু অর্থনীতিতে সেই কর্মসংস্থান প্রবৃদ্ধির সঙ্গে তাল রেখে হচ্ছে না। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান। বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ও মোস্তাফিজুর রহমান। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিপিডির পরিচালক আনিসাতুল ফাতেমা ইউসুফ।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/তালেব

Wordbridge School
Link copied!