• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাবার ‘নোংরা পেশাটা’ জেনেই গেল কলেজছাত্রী, তারপর...


নিউজ ডেস্ক মে ১০, ২০১৭, ০১:০১ পিএম
বাবার ‘নোংরা পেশাটা’ জেনেই গেল কলেজছাত্রী, তারপর...

তার নাম ইদ্রিস। একজন খেটে খাওয়া দেশবাসী। প্রতিটা ঘামের বিন্দু খরচ করেছেন যাতে মেয়েরা কলেজে যেতে পারে। কিন্তু সন্তানদের কাছে প্রকাশ করেননি নিজের জীবিকার পরিচয়। 

তিনি পাবলিক টয়লেটের সাফাইকর্মী। আরও কটু ভাষায় বলতে গেলে মেথর। রোজ কাজের পরে পাবলিক টয়লেটে গোসল সেরে বাড়ি ফিরতেন। বলতেন কাজ করেন শ্রমিকের। তৃপ্ত চোখে দেখতেন মেয়েরা কলেজে যাচ্ছে। খুশি হতেন এই ভেবে যে তিনি যেভাবে সমাজে হেনস্থা হয়েছেন‚ মেয়েদের জীবনে সেই অভিজ্ঞতায় পড়তে হবে না। কিন্তু একদিন মেয়ে জানতে পারলেন বাবার পেশা।

সেদিন মেয়ের কলেজের টাকা জোগাড় করতেই হবে। কিন্তু কম পড়েছে কিছু টাকা। হতোদ্যম হয়ে পড়েছিলেন সাফাইকর্মী। মনে হল‚ মেয়ের আর বুঝি কলেজে পড়া হল না। এগিয়ে এলেন সহকর্মীরা। তুলে দিলেন একদিনের রোজগার। বললেন‚ আমরা একদিন না খেয়ে থাকতে পারি। কিন্তু আমাদের মেয়েদের নাম যেন কলেজের খাতা থেকে কাটা না যায়।

সেদিন আর কাজের শেষে গোসল করেননি তিনি। অন্যের বর্জ্য সাফ করে নোংরা পোশাকেই গেলেন বাড়ি। মেয়ের হাতে টাকা তুলে দিয়ে বললেন নিজের কাজের কথা। জানালেন কারা তুলে দিয়েছে বাড়তি টাকা। নিজেরা না খেয়ে। শুনে মেয়ের চোখে জল। বাবার পেশা বা পোশাক‚ কোনওটাই আর অপরিচ্ছন্ন মনে হচ্ছিল না। বরং সেখান থেকে ভেসে আসছিল পবিত্র সুবাস।

সফল হয়েছে বাবার সংগ্রাম। বড় মেয়ে পাশ করেছেন কলেজ। ছোট মেয়েরা এখনও কলেজে পড়ে। তবে মেয়েরা সবাই পার্টটাইম কাজ করছেন। এখন বড় মেয়ে মাঝেমাঝেই যান বাবার কাজের জায়গায়। তার বাবা ও অন্য কর্মীদের জন্য খাবার নিয়ে। কোনও একদিন যারা অভুক্ত থেকে পূর্ণ করেছিলেন তার কলেজপাঠের স্বপ্ন। সাহায্য করেছিলেন নিজের পায়ে দাঁড়াতে। তাদের তৃপ্তির সঙ্গে খেতে দেখে তরুণীর মনে হয়‚ কলেজের ডিগ্রির থেকেও এই সাফল্য অনেক বড়।

মেয়েকে দেখে বাবার মনে হয়‚ এরকম মেয়ে থাকলে নিজেকে দরিদ্র বলার কোনও মানেই হয় না!

কাহিনিটি ফেসবুকে শেয়ার করেছেন সাংবাদিক জিএমবি আকাশ। মাত্র কয়েকদিনে চার লাখের বেশি মন্তব্য ও কয়েক লাখ শেয়ার হয়েছে।

Wordbridge School
Link copied!