• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাবার লাশ চার মেয়ের কাঁধে, সমাজপতিদের রোষানলে যা ঘটলো


নিউজ ডেস্ক আগস্ট ১৫, ২০১৮, ০৪:০৩ পিএম
বাবার লাশ চার মেয়ের কাঁধে, সমাজপতিদের রোষানলে যা ঘটলো

ঢাকা: বাবার অন্তিম ইচ্ছা ছিল মৃত্যুর পর মেয়েরাই তার সৎকার করবে। বাবার শেষ ইচ্ছা বলে কথা! তাই বাবার শব কাঁধে করে শশ্মানে নেয়া থেকে শুরু করে মুখাগ্নি পর্যন্ত যাবতীয় অন্তিম ক্রিয়াকর্ম সম্পন্ন করেন তার চার মেয়ে। কিন্তু এ ঘটনায় সমাজপতিদের রোষানলে পড়েছেন ওই চার কন্যা। তাদের করা হয়েছে একঘরে।

বাবার শেষ ইচ্ছা ছিল মৃত্যুর পর তার মেয়েরাই তার সৎকারের কাজটি করবে। মৃত্যুর পর বাবার কথাই সত্যি হলো। শব কাঁধে নিল চার কন্যা। মুখাগ্নি পর্যন্ত সব আনুষ্ঠানিকতাই পালন করলেন তার চার মেয়ে। তবে সমাজ কি আর তা অত সহজে মেনে নেয়, সমাজপতিদের সিদ্ধান্তে তাদের করা হয়েছে একঘরে।

এ ঘটনা ঘটেছে ভারতের রাজস্থান রাজ্যের বুন্দি জেলায়।

বুন্দি জেলার এক প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন দুর্গাশঙ্কর রেগার (৫৮)। কোন পুত্রসন্তান ছিল না তার। মারা যাওয়ার আগেই ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন, তার অন্তিম ক্রিয়াকর্ম করবে চার মেয়ে।

মেয়েরাও কোনও সমস্যা দেখেননি তাতে। কিন্তু সেটা জানাজানি হতেই মোড়ল-মাতব্বররা হুমকি দিতে থাকেন যে, এ কাজ করলে ফল ভাল হবে না।

দুর্গাশঙ্কর গত শনিবার (২৮ জুলাই) মারা যান। এরপরই ঘটে সেই ঘটনা যা এলাকাবাসী আগে কখনো দেখেনি। বাঁশের মাচায় শোয়ানো বাবার মরদেহ চার বোন কাঁধে করে শ্মশানে বয়ে নিয়ে যান। সেখানে মুখাগ্নি থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজকর্ম সারেন তারাই।  

কিন্তু এতেই ক্ষেপে উঠেছেন স্থানীয় মাতুব্বররা। তারা ওই চার বোনকে একঘরে ঘোষণা করেছেন। গোটা গ্রামের কেউ তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে পারবে না। তাহলে একঘরে করা হবে তাদেরকেও। শুধু তাই নয়, গ্রামের কমিউনিটি বাথরুমে স্নান করাও নিষিদ্ধ ওই চার মেয়ের জন্য।

তবে ক্ষেপে উঠেছেন স্থানীয় মাতুব্বররা। তারা ওই চার বোনকে এক ঘরে করার ঘোষণা দিয়েছেন। নিয়মটা এমন যে গোটা গ্রামের কেউই তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে পারবে না। এমনকি গ্রামের কমিউনিটি বাথরুমও নিষিদ্ধ করা হয়েছে ওই চার বোনের জন্য।

তবে সমাজপতিদের এসব পদক্ষেপে মোটেও ভীত নন চার কন্যা। বড় মেয়ে মিনা বলেন, ‘বাবার কাজ সেরে আসার পরই আমাদের ক্ষমা চাইতে বলেন মোড়লরা। কিন্তু আমরা ক্ষমা চাইনি। কারণ, আমরা কোনও অন্যায় করিনি, কোনও অপরাধও করিনি, এই মনোভাব বাকি তিন বোনেরও। তাদের কাছে সমাজ নয়, বড় তাদের পিতার শেষ ইচ্ছা।

বলে রাখা ভালো,  হিন্দু ধর্মে সাধারণতঃ মৃতের সৎকার ও অন্তোষ্টিক্রিয়ার যাবতীয় কর্ম সম্পাদনের দায়িত্ব পালন করে থাকেন মৃত ব্যক্তির ছেলেরা। ছেলে না থাকলে যে কোনো  নিকটাত্মীয় পুরুষ তা করে থাকেন। মেয়েদের এক্ষেত্রে তেমন ভূমিকা থাকে না। তবে এই ভিন্নমাত্রিক ঘটনাটি নারী অধিকার আদায়ের দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে মনে করছেন অনেকেই।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!