• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাড়ছে মধ্যবিত্তদের চালের দর


জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৮, ০৬:২৫ পিএম
বাড়ছে মধ্যবিত্তদের চালের দর

ঢাকা: চালের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি গত বছর জুড়েই ছিল আলোচনার শীর্ষে। মাঝখানে দাম বৃদ্ধি হওয়া কিছুটা কমলেও সেই বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না নতুন বছরেও। মোটা চালের দাম না বাড়লেও এবার বৃদ্ধি পাচ্ছে মধ্যবিত্তদের পছন্দের চাল মিনিকেটের। কয়েকদিনে কেজি প্রতি দুই টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

দুই কোটি মানুষের এই ঢাকায় অধিকাংশই মধ্যবিত্তের শ্রেণিতে। খেটে খাওয়া অনেক মানুষ দাম বেশি হলেও মিনিকেট চালই কেনেন। আয় না বাড়লেও বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে ওই চাল।

ভারত থেকে চাল আমদানি শুল্ক কমানোতে মোটা চালের সরবরাহ ঠিক রয়েছে। কিন্তু দাম যেভাবে কমার কথা ছিল, তা কমেনি। বর্তমানে চালের পর্যপ্ত সরবরাহ থাকলেও সিন্ডিকেট বাণিজ্যের কারণে দাম পূর্বাস্থায় ফিরে আসেনি। এরইমধ্যে অবশ্য বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, চালের দাম ৪০ টাকার নিচে নামানো ঠিক হবে না।

রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় গত এক সপ্তাহ ধরে দেশের বিভিন্ন মিলে মিনিকেটের দাম কেজিতে দুই টাকা করে বেড়েছে বলে কয়েকজন বিক্রেতা জানিয়েছেন।

কারওয়ানবাজারে চালের খুচরা বিক্রেতা বাচ্চু মিয়া বলেন, বিভিন্ন মিলের মিনিকেট চালের বস্তায় (৫০ কেজি) একশ টাকা করে দাম বেড়েছে। ফলে চালের দাম কেজিতে দুই টাকা করে বাড়াতে হচ্ছে। উত্তর বাড্ডার চালের আড়ত সাঁতারকুল রাইস এজেন্সির কর্মী বিপ্লব হোসেনও সপ্তাহের ব্যবধানে মিনিকেটের দাম বস্তাপ্রতি অন্তত ১০০ টাকা বাড়ার কথা জানিয়েছেন।

বাজারে তিন হাজার টাকা থেকে ৩১০০ টাকায় বিভিন্ন মানের মিনিকেটের ৫০ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে। সে হিসাবে প্রতি কেজি মিনিকেট চালের দাম পড়ছে ৬০-৬২ টাকা। তবে পাড়া-মহল্লার দোকান থেকে চাল কিনতে হলে কারওয়ানবাজারের এই দামের থেকে আরও দুই-তিন টাকা বেশি লাগছে।

তবে আমদানি করা মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি বস্তা ২৬০০ থেকে ২৭০০ টাকায়। মিনিকেটের দাম বাড়লেও আরেক সরু চাল নাজিরশাইলের দাম কমার কথা জানিয়েছেন মিরপুর-১ নম্বর বাজারের জননী রাইস এজেন্সির ব্যবস্থাপক মো. মহিউদ্দিন হারুন। তিনি বলেন,সম্প্রতি মিনিকেটের দাম বাড়তে থাকলেও গত এক মাস ধরে নাজির চালের দাম কমছে। প্রতি বস্তায় ৫০ থেকে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে এই চালের দাম।

হারুন জানান, শেরপুরের নাজিরশাইলের ৫০ কেজির বস্তা ৩১৫০ টাকা থেকে কমে ৩০৫০ টাকা হয়েছে। আর  উৎসব কোম্পানির নাজির ৩৩০০ টাকা থেকে কমে ৩২০০-৩২৫০ টাকা হয়েছে। শুক্রবার কারওয়ানবাজার ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ শাক-সবজি-তরকারির দাম স্থিতিশীল। নতুন করে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম ডজন প্রতি ১০ টাকার মতো কমেছে। তবে পেঁয়াজের দাম কমেছে অতি সামান্য।

ভারত পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানিমূল্য নিয়ে শর্ত তুলে নেওয়ার এক সপ্তাহ পরেও দেশের বাজারে এর প্রভাব পড়েনি বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানিমূল্যের সীমা প্রতি টন ৭০০ ডলারের শর্ত বাতিল করে গত শুক্রবার প্রজ্ঞাপন জারি করে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ফলে সেদেশের স্থানীয় বাজারের দামেই পেঁয়াজ আমদানির সুযোগ পেতে শুরু করে বাংলাদেশি আমদানিকারকরা।

ভারতে এখন ২৫ রুপি থেকে ৩৫ রুপির মধ্যে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে বলে টাইমস অব ইন্ডিয়াসহ দেশটির অন্যান্য সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের বাজারেও আমদানি পেঁয়াজের দাম কমে আসবে বলে আশা করছিলেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

পেঁয়াজ বিক্রেতা মোশাররফ হোসেন বলেন, বাজারে দেশীয় পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় দামও কমেছে কেজিতে ৫ টাকা করে। ভারতীয় পেঁয়াজের দাম কমবে বলে শোনা গেলেও তেমনটি কমেনি।

বিক্রেতা সুমন বলেন, কারওয়ান বাজারে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৪৪ টাকা থেকে ৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক্ষেত্রে সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে কমেছে ৫ টাকা। আমদানি পেঁয়াজের দামও কেজি প্রতি ৪৫ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে রয়েছে।

তবে সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবি বলছে, গত এক সপ্তাহে আমদানি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। আগে ৫৫ টাকা বিক্রি হলেও এখন ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে শুক্রবারই রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে একটি মুদি দোকানে প্রতি কেজি ৬০ টাকাতে আমদানি পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা গেছে। 

বাজারে শাক-সবজি ও অন্যান্য তরকারির দাম গত সপ্তাহের মতোই অপরিবর্তিত রয়েছে। শিম ৬০ টাকা, বেগুন ৩০ টাকা, টমেটো ২০ থেকে ৩০ টাকায় প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে। ফুল কপি প্রতিটি ৪০ থেকে ৪০ টাকা, বাঁধা কপি ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ানবাজারের ইসলাম সুপার মার্কেটের মুদি দোকানি শাজাহান বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই মুদিমালের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। ফলে আমরাও স্বস্তিতে ব্যবসা করতে পারছি।

সোনালীনিউজ/তালেব

Wordbridge School
Link copied!