• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন ও হাইকোর্টের রায় মানছেন না অনেকেই


আদালত প্রতিবেদক এপ্রিল ২৪, ২০১৭, ০৬:৫৭ পিএম
বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন ও হাইকোর্টের রায় মানছেন না অনেকেই

ঢাকা: রাজধানীতে বাড়ির সংখ্যা প্রায় চার লাখ। তারপরও আবাসন সঙ্কট কাটছে না। প্রতিনিয়ত বাড়ছে আবাসনের চাহিদা। এ শহরের সোয়া কোটি লোকই বসবাস করছে বিভিন্ন ভাড়া বাড়িতে। মাথা গোঁজার ঠাঁই নিতে অসহায়ের মতো মেনে নিচ্ছেন বাড়িওয়ালাদের অবৈধ সিদ্ধান্ত। হু হু করে বাড়ানো হচ্ছে ভাড়া। শতকরা ৭০ ভাগ মানুষের আয়ের ৬০ শতাংশের বেশি ব্যয় করতে হচ্ছে বাড়ি ভাড়া বাবদ। বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন ও হাইকোর্টের রায় মানছেন না অনেকেই।

সহনীয় পর্যায়ের চেয়ে বেশি বাড়িভাড়া আদায় করলে দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থদণ্ড দিতে হবে বাড়ির মালিককে। এটি একমাস পার হয়ে গেলে তা দাঁড়াবে তিনগুণে। এছাড়া বাড়িভাড়া আদায়ের বিষয়ে উচ্চ আদালতের একটি রায় আছে। তাতে বলা হয়েছে, বাড়িওয়ালা স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনার, ভাড়াটিয়াকে সাথে নিয়ে বাড়িভাড়া নির্ধারণ করবেন। কিন্তু এ শহরের বাস্তব অবস্থা হলো বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন ও উচ্চ আদালতের রায় অমান্য করছেন অনেক বাড়ির মালিক। জানান সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী আব্দুল্লা আল বাকী।

এদিকে বাড়িওয়ালারা শুধু ভাড়ার টাকা আদায়ের জন্যই ব্যস্ত থাকেন। বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের প্রতি তাদের নজর একেবারেই কম। কোনো নোটিশ ছাড়াই প্রতিবছর তারা ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা প্রতিটি ফ্লাটে বাড়িয়ে দিচ্ছেন। বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়ার মধ্যে সম্পাদিত চুক্তিটি সরকারের ‘ভাড়া নিয়ন্ত্রণ’ বিভাগে জমা দেয়ার নির্দেশ রয়েছে। সেটিও মানছেন না অনেকেই।

কোম্পানি চাকরীজীবী খাদেমুল ইসলাম। থাকেন যাত্রবাড়ী এলাকায়। সীমিত বেতনে চাকরি করে মাসের খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হয় তাকে। বলেন, মাসে যে অর্থ রোজগার করি তার বড় একটা অংশ বাসা ভাড়া দিতে হয়। বাড়িতে বাবা-মার জন্য কিছুই পাঠাতে পারি না। দাবি জানান বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণে মনিটিরিং সেল গঠনের।

অতিরিক্ত নয়, সহনীয় পর্যায়ে বাড়িভাড়া রাখার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ মেস সংঘের মহাসচিব আয়াতুল্লাহ আকতার। বলেন, রাজধানী ঢাকায় সকল অফিস আদালত এ কলকারখানা থাকায় এখানে শিক্ষিত যুবকরা আসছে কর্মের তাগিদে। চাকরি করে মাস শেষে যে বেতন পাচ্ছেন সেটি চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। অথচ মাসিক আয়ের বড় একটা অংশ বাড়ির মালিককে দিতে হয়। এ ব্যাপারে আদালতের রায় অনুসরণ করার দাবিও জানান তিনি।

তবে, এসকল অভিযোগ অস্বীকার করছেন বাড়ির মালিকরা। বলছেন, প্রতিবছর সরকার বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স বৃদ্ধি করছে। পানির বিল, গ্যাস বিল, বিদ্যুৎ বিল হু হু করে বাড়ছে। এছাড়া বিদ্যুৎ গেলে জেনারেটরের ব্যবস্থা করতে হয়। তেল কিনতে হয় অনেক টাকার। লিফট খরচ হয় প্রতি মাসে। তারা আরো অভিযোগ করেন, গত বছরের তুলনায় সরকার এবার হোল্ডিং ট্যাক্স বৃদ্ধি করেছে অনেক বেশি। এ জন্য স্বাভাবিকভাবেই বাড়িভাড়া বাড়াতে হচ্ছে। জানান সেগুনবাগিচা এলাকার একটি বাড়ির মালিক আনোয়ার হোসেন।

বাড়িভাড়া নিয়ে বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়ার মধ্যে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে জন্য ১৯৯১ সালে বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন করে সরকার। সেখানে উল্লেখ রয়েছে ‘কোনোভাবে মানসম্মত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করা যাবে না।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!