বায়োমেট্রিকে প্রথম নিবন্ধিত রোহিঙ্গা নারী

কক্সবাজার: মিয়ানমার সরকারের নির্যাতনের শিকার হয়ে আরাকান (রাখাইন) থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধন শুরু হয়েছে। এই কার্যক্রমে প্রথম যিনি নিবন্ধিত হয়েছেন রুবিয়া খাতুন। সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে নয়টায় তিনি প্রথম নিবন্ধিত হন।

রুবিয়া খাতুনের বয়স ৬০। তার বাবার নাম নাগু ও মায়ের নাম সুফিয়া খাতুন। জন্মতারিখ: অজানা। জন্মস্থান: মিয়ানমার। দেশ: মিয়ানমার। জাতীয়তা: রোহিঙ্গা।

মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে এই বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুর রহমান খান বলেন, গতকাল পরীক্ষামূলকভাবে বায়োমেট্রিক নিবন্ধন শুরু হওয়ার পর ২০ জন রোহিঙ্গার নিবন্ধন করা হয়। এর মধ্যে আটজনকে আমরা পরিচয়পত্র তুলে দিয়েছি।

গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নতুন করে সহিংস দমন-নিপীড়ন শুরু হয়। সহিংসতার মুখে আশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশে ছুটে আসছে রোহিঙ্গারা।

আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তাকারী সংগঠনগুলোর জোট ইন্টার সেক্টর কো-অর্ডিনেশন গ্রুপ (আইএসসিজি) তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, রাখাইন থেকে এবারের সহিংসতায় ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩ লাখ ১৩ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে।

চলতি দফায় বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে চলে আসার পর সরকার বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের পরিকল্পনা নেয়। রোহিঙ্গাদের এই বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুর রহমান বলেন, ‘ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের কাজ করছে। এতে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান টাইগার আইটি।’

রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের জন্য তিন ধরনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান টাইগার আইটি সূত্র জানায়। প্রক্রিয়া অনুযায়ী, প্রথমে রোহিঙ্গাদের ব্যক্তিগত তথ্য নেওয়া হচ্ছে। এতে থাকছে নাম, বাবা-মার নাম, দেশ, ধর্ম, লিঙ্গসংক্রান্ত তথ্য। এরপর তাদের ছবি তোলা হচ্ছে। নেওয়া হচ্ছে আঙুলের ছাপ।

টাইগার আইটির উপমহাব্যবস্থাপক (বিক্রয় ও বিপণন) রাজীব চৌধুরী জানান, জার্মানিতে যেভাবে সিরিয়ার কয়েক লাখ শরণার্থীকে নিবন্ধন করা হয়েছে, এখানে রোহিঙ্গা নিবন্ধনের ক্ষেত্রে তারা সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ করছেন।

সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের ফলে এবার আসা তিন লাখের বেশি রোহিঙ্গা সম্পর্কে তথ্য সরকারের কাছে থাকবে। পাশাপাশি নিবন্ধনের পর রোহিঙ্গাদের যে কার্ড দেয়া হবে, তা রেশন, খাবার, স্বাস্থ্যসুবিধা, শীতবস্ত্রসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের কাজে লাগবে।

পাসপোর্ট অধিদপ্তর যে প্রক্রিয়ায় নিবন্ধন করে, রোহিঙ্গাদের নিবন্ধনের ক্ষেত্রে সেই প্রক্রিয়ার অনেক কিছুই মেনে চলা হচ্ছে বলে জানান কর্মকর্তারা।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই