• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপি কি জনমত গড়ে তুলতে পারবে?


হৃদয় আজিজ ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৭, ০৩:০৭ পিএম
বিএনপি কি জনমত গড়ে তুলতে পারবে?

ঢাকা: এক দশক ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির সামনে এখন তিনটি চ্যালেঞ্জ। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে নির্ভুল কৌশলে আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারলে জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। আর এসবের জন্য প্রথমে গড়ে তুলতে হবে জনমত।

বিশেষ করে সামনে থাকা খালেদা জিয়ার মামলা, নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনকে (সিইসি) বির্তকে ফেলা ও ইভিএম বা ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন প্রবর্তনে বিরোধিতা করা এবং সহায়ক সরকারের প্রস্তাবনা নিয়ে গড়ে তুলতে হবে জনমত।

এসব ইস্যুকে সামনে রেখে রাজপথ সরগরম করে তুলতে পারলে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিশ্বাস ফিরে আসবে। তারা আগামী নির্বাচনের জন্য শক্তি নিয়ে মাঠে নামতে পারবে। এতে মাঠ পর্যায়ে সরকারবিরোধী ইস্যুগুলোর গ্রহণযোগ্যতা তৈরিতে ভূমিকা রাখতে পারবে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।

দলের একাধিক নেতার কথা, এসব ইস্যু এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে তারা জনমতকে পক্ষে নেবেই। বিশেষ করে এ দেশের ভোটাররা ক্ষমতার পালাবদলে বিশ্বাসী। তাই তারা এ দিকটার আনুকুল্য পেলেই আগামী নির্বাচনে সরকার গঠন করা নিয়ে আশায় বুক বাঁধছেন।

তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা অবশ্য দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা ও বিগত নির্বাচনে ভুল কৌশলের শিকার হওয়া বিএনপিকে নিয়ে কিছুটা সংশয় প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, বিএনপি যদি ইস্যুগুলো নিয়ে জনমত গড়ে তুলতে পারে তাহলে রাজনীতির দৃশ্যপট পাল্টে যেতে পারে। একই সঙ্গে তারা সংঘাতের আশঙ্কাও করছেন। ইস্যুগুলো নিয়ে রাজনৈতিক নেতারা যেভাবে বাকযুদ্ধ করছেন তা থেকেই তাদের এমন শঙ্কা।

আবার দীর্ঘদিন ধরে অভ্যন্তরীণ কোন্দল আর সরকারের দমন পীড়নে শক্তিহীন হয়ে পড়া নেতাকর্মীরা রাজপথ সরগরম কীভাবে করবেন সেটা নিয়ে যেমন প্রশ্ন রয়ে গেছে, তেমনি বিএনপির ইস্যুগুলো জনগণের সামনে কীভাবে উপস্থাপন করলে সেটা ফলপ্রসু হবে- তা নিয়েও থেকে গেছে নানা প্রশ্ন।

তাছাড়া ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠছে। তারাও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাদের হাতেও আছে বড় বড় অস্ত্র। বিশেষ করে বিগত সময়ে রাজনৈতিক সহিংসতায় ব্যাপক প্রাণহানি, বিদেশি নাগরিকদের হত্যাকাণ্ড, সাম্প্রদায়িকতা ছড়িয়ে দেয়া, জঙ্গিবাদ- এসব ইস্যুতে ঘায়েল করতে পারে বিএনপি ও শরীক দল জামায়াতকে। এসব নিয়ে এমনিতেই জনগণের মধ্যে নেগেটিভ ধারণা আছে। ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা মাঠ পর্যায়ে এসব ইস্যু কাজে লাগালে আরো বেশি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতে পারে বিএনপিকে।

দলীয় সূত্রমতে, সহায়ক সরকারের প্রস্তাব, খালেদা জিয়ার মামলা এবং ইভিএম নিয়ে রাজপথে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। দলীয় প্রধান খালেদা জিয়াকে কারাগারে যেতে হবে এমন প্রতিকূল বিষয় মাথায় রেখেই আন্দোলনমুখী পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে।

এর বাইরে দলের শূন্য পদ পূরণ, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, জেলা এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কমিটি গঠনের কাজও দ্রুত এগিয়ে নিতে কাজ করছেন। স্থায়ী কমিটির তিন শূন্যপদসহ ছাত্র-বিষয়ক ও সহছাত্র-বিষয়ক সম্পাদক, দুজনকে আন্তর্জাতিক সম্পাদক এবং দুজন বিশেষ সম্পাদক পদে নিয়োগের বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত করছেন দলীয় প্রধান।

এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রবীণ সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ইস্যুগুলোর নৈতিক ভিত্তি রয়েছে কি না, এটার বিচার করবে জনগণ। কারণ দেশের অধিকাংশ মানুষের ভাবনাটাই হলো মুখ্য।

এদিকে, সরকার যেভাবে চাচ্ছে, তাতে একটি ভালো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে না বলে মনে করছেন নেতারা। তারা অভিযোগ করছেন, সরকারের এসব অপকৌশলে দেশের মানুষ ভোট দেয়া ভুলে যাচ্ছে। ভোটের অধিকার রক্ষায় বিএনপি যে সহায়ক সরকারের কথা বলছে তাতে দেশের অধিকাংশ মানুষের সায় থাকবে।

তবে বিগত দিনের অভিজ্ঞতার আলোকে অনেকেই সন্দিহান যে, এসব ইস্যুতে রাজপথে নেমে জনমত গড়ে তুলতে বিএনপি কতটা সক্ষম হবে? হলেও আগামী নির্বাচনে জয় নিয়ে ঘরে ফেরার মতো জনপ্রিয়তা নিয়ে তৈরি করতে পারবে কিনা তা তাদের প্রস্তুতিই প্রমাণ করবে।

সোনালীনিউজডটকম 

Wordbridge School
Link copied!