• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিএনপিকে চালাচ্ছেন কারা?


নীলা বুলবুল জানুয়ারি ১১, ২০১৭, ১০:৩৬ পিএম
বিএনপিকে চালাচ্ছেন কারা?

ঢাকা: জাতীয় সংসদ নির্বাচন হাতছাড়া করে ক্ষমতা থেকে দূরে সরে যাওয়া, সহিংস আন্দোলনে জড়িয়ে বিতর্ক সৃষ্টি, সর্বোপরি রাজপথের আন্দোলনে বার বার সুসংগঠিত হতে ব্যর্থ হওয়ার দায় কার? এমন প্রশ্ন নিজেদের দিকেই ছুঁড়ে দিচ্ছেন আত্মসমালোচনায় অভ্যস্ত নেতাকর্মীরা।

হামলা, মামলা, সরকারের নির্মম নিপীড়নের মধ্য থেকেও শক্তি সঞ্চয় করে সফলতার দিকে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে দলের কোথায় প্রতিবন্ধকতা তা নিয়েও ভাবছেন অনেকে। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে দলকে সঠিক পথে পরিচালিত করার ক্ষেত্রে নির্ভুল সিদ্ধান্ত নেয়া এখন সময়ের দাবি। তাই দলের চালিকা শক্তি হিসেবে যারা আছেন বা থাকছেন তাদের ওপরই নির্ভর করছে গোটা দলেরই ভবিষ্যৎ।

তবে অভিজ্ঞমহলের অভিমত, বেশ কিছুদিন ধরে বিএনপির চালিকাশক্তি হিসেবে পরিগণিত বুদ্ধিজীবীরা আপাত নীরবতা পালন করে চলেছেন। সভা- সেমিনার-টকশোতে আগের মতো তাদের সরব উপস্থিতিও চোখে পড়ছে না। এমনকি আগে যেভাবে দলীয় কর্মসূচিতে তাদের চোখে পড়তে, তাও দেখা যাচ্ছে না। গেল ছয় মাস ধরেই চলছে এমন নীরবতা।

সূত্রমতে, বিএনপির নীতিনির্ধারক তথা থিংকট্যাংক হিসেবে পরিচিত বুদ্ধিজীবীদের তালিকায় রয়েছেন রাষ্টবিজ্ঞানী অ্যধাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ, অধ্যাপক ড. মোস্তাহিদুর রহমান, ডা. জাফর উল্লাহ চৌধুরী, ফরহাদ মাজহার, শফিক রেহমান প্রমুখ। নানা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি এসব বুদ্ধিজীবীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে দলের। এ কারণে বেশ কয়েক মাস ধরেই তারা নীরব রয়েছেন। আগে দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে তাদের উপস্থিতি দেখা গেলেও গেল ৬ মাসে তাদের চোখে পড়েনি।

দলীয় সূত্রমতে, বেশ কয়েকমাস আগে জামায়াত ইস্যু নিয়ে মন্তব্য করার ঘটনায় অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদের সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দূরত্ব তৈরি হয়। এরপর থেকে অনেকটা নীরব হয়ে যান এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী। ঘটনার পর নীতিনির্ধারকদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তালিকায় উঠে আসেন ড. মাহফুজ উল্লাহ, ড. মাহবুব উল্লাহ, সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রো-ভিসি সদরুল আমিন প্রমুখের নাম।

যদিও দলের একটি বিশেষ সূত্র জানায়, সর্বশেষ কাউন্সিলে অনুমোদিত বিএনপির গবেষণা সেলে কর্মরত পেশাদার লোকজনই অদৃশ্যভাবে ‘থিংকট্যাংক’ হিসেবে কাজ করে চলেছেন। তারা রামপাল, নির্বাচন কমিশন গঠন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি ইস্যু নিয়ে দলের অবস্থান নির্ধারণে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। আর এ কাজে তদারকি করছেন শীর্ষ নেতারা।

বিএনপির নীতিনির্ধারকদের তালিকায় এখন কারা রয়েছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাজাহান ওমর বীর উত্তম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘তা বলতে পারব না, তবে আমরা সরাসরি রাজনীতি করি। আমরা ছাড়া নীতিনির্ধারক আর কারা হতে পারে?’

ব্যারিস্টার শাজাহান মনে করেন, যারা দলে কোয়ালিফাইড, শিক্ষিত, রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন তারাই নীতিনির্ধারক হিসেবে কাজ করেন বা করছেন। আদালাভাবে কেউ নেই।

এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক রাজনীতি বিশেষজ্ঞ নুরুল আমিন বেপারি বলেন, ‘আমার মনে হয় দেশের আনাচে কানাচে খুঁজেও বিএনপির থিংক ট্যাংক পাওয়া যাচ্ছে না।’

জানতে চাইলে অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘বিএনপি-আওয়ামী লীগ ওইভাবে চিন্তা করার বয়স এখন আমার নেই। রাজনৈতিকভাবে যেটা সঠিক মনে করি সেটা বলবো। বিএনপির পক্ষে গেলেও বলব, বিপক্ষে গেলেও বলব।’

বিএনপির চালিকাশক্তি হিসেবে চিহ্নিত বুদ্ধিজীবীদের নীরবতার মধ্যে সরব হয়ে ওঠা গবেষণা সেলের কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তই পথ রচনা করবে ভবিষ্যতের।

কোথায় যাচ্ছে বিএনপি?

সোনালীনিউজ/এমএন

Wordbridge School
Link copied!