• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিচারপতি জয়নুলের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান চলবে


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ১৪, ২০১৭, ০৪:২৭ পিএম
বিচারপতি জয়নুলের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান চলবে

ঢাকা: আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান চলবে মর্মে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার(১৪ নভেম্বর) বিকেলে বিচারপতি এম, ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ রায় দেন।

বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের পক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার মঈনুল ইসলাম। দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান। আর এ মামলার অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে আদালতে মতামত প্রদানকারী সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনও ছিলেন।
 
বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান বন্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) সুপ্রিম কোর্টের দেয়া চিঠি কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে আদালতের রুল নিষ্পতিত্ব করা হয়েছে। রুল নিষ্পত্তির পাশাপাশি এ মামলায় কিছু মতামতও দিয়েছেন হাইকোর্ট। মতামতে আদালত বলেছেন, দুদককে দেয়া এ ধরনের চিঠি জনমনে বিভ্রান্তি তৈরী করেছে। আর দায়িত্ব পালনে দুদকের গাফলতি আছে।

দুদুকের কার্যকলাপে বিরক্তি প্রকাশ করা হয়েছে। অনুসন্ধান বন্ধে যে চিঠি দেয়া হয়েছে সেটি সুপ্রিম কোর্টের নয়, আপিল বিভাগের অফিসিয়াল চিঠি বলে মতামত দিয়েছেন হাইকোর্ট।
 
আদালতের রায় ঘোষণার পর এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের আইনজীবী ব্যারিস্টার মইনুল ইসলাম, দুদুকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান, অ্যামিকাস কিউরি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। এই তিন আইনজীবীই আদালতের রায়ের সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। বলেছেন রায়টি যুগান্তকারী।

গত ৯ অক্টোবর বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান বন্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) সুপ্রিম কোর্টের দেয়া চিঠি কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। ১৯ অক্টোবর রুলের ওপর প্রথম শুনানি হয়।

দুদককে গত ২৮ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের দেয়া চিঠিটি হাইকোর্টের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট বদিউজ্জামান তরফদার। এরপর আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, দুদক চেয়ারম্যান, আপিল বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার অরুণাভ চক্রবর্তী ও বিচারপতি জয়নুল আবেদীনকে ১০ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

সাবেক বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১০ সালের ১৮ জুলাই সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ দেয় দুদক। তার বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচারেরও অভিযোগ রয়েছে দুদকের কাছে। বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের বিষয়ে অনুসন্ধানের স্বার্থে চলতি বছরের ২ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেয়ে চিঠি দেয় দুদক। এর জবাবে গত ২৮ এপ্রিল আপিল বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার অরুণাভ চক্রবর্তী স্বাক্ষরিত একটি চিঠি দুদকে পাঠায় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।

ওই চিঠিতে বলা হয়, বিচারপতি জয়নুল আবেদীন দীর্ঘকাল বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ এবং আপিল বিভাগের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দায়িত্ব পালনকালে তিনি অনেক মামলার রায় প্রদান করেন। অনেক ফৌজদারি মামলায় তার প্রদত্ত রায়ে অনেক আসামির ফাঁসিও কার্যকর করা হয়েছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের দেয়া রায় সবার ওপর বাধ্যতামূলক। এমন পরিস্থিতিতে সর্বোচ্চ আদালতের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির বিরুদ্ধে দুদক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করলে তার দেয়া রায়সমূহ প্রশ্নবিদ্ধ হবে এবং জনমনে বিভ্রান্তির উদ্রেক ঘটবে। প্রাক্তন বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের কোনো রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা সমীচীন হবে না।

তবে সুপ্রিম কোর্ট এই চিঠি দিলেও ওই বিচারকের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান থেমে থাকেনি। আর দুদকের চাহিদা অনুযায়ী ওই বিচারকের বিষয়ে নথিপত্রও পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

সোনালীনিউজ/আতা

Wordbridge School
Link copied!