• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিজিবির রিক্রুটদের সমাপনী কুচকাওয়াজ


চট্টগ্রাম ব্যুরো জুলাই ১৬, ২০১৭, ০৩:২৬ পিএম
বিজিবির রিক্রুটদের সমাপনী কুচকাওয়াজ

চট্টগ্রাম: বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের একমাত্র প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজে ৯০তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার (১৬ জুলাই) চট্টগ্রামের সাতকানিয়া বায়তুল ইজ্জতে এ প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়।

এ সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন এবং অভিবাদন গ্রহণ করেন বিএসএফের মহাপরিচালক শ্রী কে কে শর্মা, আইপিএস।

বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার এন্ড কলেজের কমান্ড্যান্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসেন, এনডিসি, পিএসসি, প্রধান অতিথির সঙ্গে অভিবাদন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া চট্টগ্রাম অঞ্চলের সামরিক ও বিজিবির উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা, স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসন ও পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা, বোমাং সার্কেলের রাজা প্রকৌশলী উচ প্রু চৌধুরীসহ গণ্যমান্য/স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ এবং নবীন সৈনিকদের অভিভাবকরা উপস্থিত থেকে এ সমাপনী কুচকাওয়াজ উপভোগ করেন।

কুচকাওয়াজের প্যারেড কমান্ডার ছিলেন- মেজর এ টি এম আহসান হাবীব এবং প্যারেড এ্যাডজুটেন্ট সহকারী পরিচালক মো. শাহাদত হোসেন।

প্রধান অতিথি তার বক্তৃতায় গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তিনি আরো শ্রদ্ধা জানান- আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সকল বীর শহীদদের। তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক মুন্সী আব্দুর রউফ, শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক নুর মোহাম্মদ শেখ এবং মুক্তিযুদ্ধে অনন্য অবদানের জন্য এ বাহিনীর ৮ জন বীর উত্তম, ৩২ জন বীর বিক্রম এবং ৭৭ জন বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিতদেরও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।

তিনি বিজিবিকে একটি দক্ষ, চৌকষ এবং প্রশিক্ষিত বাহিনী হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, একটি বলিষ্ঠ ও দক্ষ বাহিনী গড়ে তোলার জন্য সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন কঠোর প্রশিক্ষণ, সৎচরিত্র, মানসিক দৃঢ়তা, অধ্যবসায়, শৃঙ্খলাবোধ এবং সঠিক নেতৃত্ব।

তিনি সৈনিক জীবনে আনুগত্য, শৃঙ্খলা, ধর্মীয় বিশ্বাস, মানবিক এবং নৈতিক মূল্যবোধ এর অনুশীলনের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি সকলকে সর্বদা উর্দ্ধতন কর্মকর্তার আদেশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও আনুগত্যশীল থাকার এবং নিজেদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বসুলভ মনোভাব বজায় রাখার উপদেশ দেন ।

নবীন সৈনিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন- শৃঙ্খলা হচ্ছে সৈনিকের মূল পরিচিতি। আদেশ ও কর্তব্য পালনে যে কখনো পিছপা হয় না সেই প্রকৃত সৈনিক। সততা, বুদ্ধিমত্তা, নির্ভরযোগ্যতা, আনুগত্য, তেজ ও উদ্দীপনা একটি বাহিনীর শৃঙ্খলা ও পেশাগত দক্ষতার মাপকাঠি। নবীন সৈনিকদের দৃপ্ত পদক্ষেপ আজকের এই সমাপনী কুচকাওয়াজের মাধ্যমে তারই প্রতিফলন হয়েছে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। আজকের এ মহতী অনুষ্ঠানে নবীন সৈনিকদেরকে নতুন জীবনে পদার্পনের শুভ লগ্নে প্রধান অতিথি সকলকে নতুন জীবনে স্বাগত জানিয়েছেন।

তিনি নবীন নারী সৈনিকদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে মহিয়সী নারীদের অংশগ্রহণ, অবদান ও আত্মত্যাগ অবিস্মরণীয়। আজ নারীরা বিশ্বের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যথাযথ যোগ্যতা ও কর্মদক্ষতার স্বাক্ষর রাখছেন। তিনি বিজিবিতে অন্তর্ভূক্ত নবীণ নারী সৈনিকদের জীবন গড়ার দৃপ্ত শপথে বলীয়ান হয়ে কঠোর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যোগ্য বিজিবি সদস্যে পরিণত হওয়ার আহবান জানান।

প্রধান অতিথি ৯০তম রিক্রুট ব্যাচের ৪৩৩ জন নবীন সৈনিকদের মধ্যে বিষয়ভিত্তিক ১ম স্থান অর্জনকারী ও সর্ববিষয়ে শ্রেষ্ঠ নবীন সৈনিকের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। তিনি শ্রেষ্ঠ নবীন সৈনিক নং ১০৩০৯৪ সিপাহী (জিডি) পাপিয়া আক্তারকে অভিনন্দন জানান। তাছাড়া জাঁকজমকপূর্ণ এ অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য তিনি বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার এন্ড কলেজের কমান্ড্যান্ট, সকল অফিসার এবং অন্যান্য সকল সদস্যকে আন্তরিক অভিনন্দন ও মোবারকবাদ জানান।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের আগস্টে বিএসএফ এর আমন্ত্রণে বিএসএফ প্রশিক্ষণ একাডেমীতে প্রধান অতিথি হিসেবে তাদের প্রশিক্ষণ কোর্সের সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন বিজিবির তৎকালীন মহাপরিচালক। এরই ধাবাহিকতায় দু’দেশের বন্ধুত্বের নিদর্শন স্বরূপ এবার বিএসএফ মহাপরিচালক আমন্ত্রিত হয়ে বিজিবি প্রশিক্ষণ সেন্টারে সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করলেন।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!