• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিজয় লাভ করায় শাস্তি পাবেন বিদ্রোহীরা!


এম সুজন আকন, নিউজরুম এডিটর ডিসেম্বর ৩১, ২০১৬, ০৯:০৬ পিএম
বিজয় লাভ করায় শাস্তি পাবেন বিদ্রোহীরা!

ঢাকা: বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) প্রথমবারের মতো দেশের ৬১ জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবার নির্বাচনে ক্ষমতাশীন আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থীদের বিপক্ষে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দীতা করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ প্রার্থী। অতীতে বিজয়ী হলে ফুলের মালা দেওয়ার সংস্কৃতি থাকলেও এবার আর সেই বিদ্রোহী প্রার্থীদের গলায় মালা পড়ার সুযোগ রাখছে না আওয়ামী লীগ। এর প্রমাণ হিসেবে দেখা গেছে পৌরসভা নির্বাচনের বিদ্রোহী প্রার্থীদের বেলায়। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধে শাস্তিও পেতে হয়েছে তাদের। এ ধারাবাহিকতায় এবারও জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধে কঠিক শাস্তির ইঙ্গিত দিয়েছেন দলটির নীতি-নির্ধারকরা।

তাদের মতে, এবার শাস্তি না দিলে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী দমনে আরও হিমশিম খেতে হবে। এ কারণেই আগের সিদ্ধান্তেই অনড় আওয়ামী লীগ। ক্ষমতাসীন দলটির কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে এমন তথ্য জানা গেছে। তারা বলেন, অতীতে বিজয়ী হলে ফুলের মালা দেওয়ার সংস্কৃতি থাকলেও বিদ্রোহী পৌর মেয়ররা সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধে শাস্তি হবে।

আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, দলের বিদ্রোহীরা জিতেছেন বলে তাদের ফুলের মালা দিয়ে বরণ করার ঘটনা এবার ঘটবে না। শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধে শাস্তি তাদের পেতেই হবে।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, এ নির্বাচনে এক-তৃতীয়াংশ আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রর্থীরা জয়ী হয়েছেন। ৩৮টি জেলায় চেয়ারম‌্যান পদে নির্বাচন হয়েছে, তার ১৪টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। ৬১ জেলার মধ‌্যে ২১টিতে চেয়ারম‌্যান প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে ছিলেন, দুটি স্থগিত হওয়ায় বাকি ৩৮টি জেলা পরিষদের চেয়ারম‌্যান নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হয়।

বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অনড় অবস্থান নেওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে নির্ভরযোগ্য সূত্র উল্লেখ করেন আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে। পৌর নির্বাচনের মতোই দলীয় প্রতীকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হবে। তাই বিদ্রোহীদের ব্যাপারে এখন পিছু হটলে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এর ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে। তাই, আগে ভাগেই ইউনয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহীর আধিক্য দূর করতে পৌরসভা নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চায় ক্ষমতাসীনরা।

সূত্রগুলো বলছে, বিদ্রোহী প্রার্থীরা জিতেছেন বলে এখন তাদের ক্ষমার চোখে দেখলে ভবিষ্যতে শৃঙ্খলা রক্ষা করা কঠিন কাজ হবে।  

এদিকে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের ‘ডিসিশন’ চূড়ান্ত। ‘ডিসিশন ইজ ডিসিশন’। শাস্তি তাদের পেতেই হবে। এমনই হুশিয়ারি দিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী।

দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যের মতো একই হুশিয়ারি দিয়ে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ বলেন, দলের আগামী নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের সভায় বিদ্রোহী প্রার্থীর ব্যাপারে কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থীদের ক্ষমা করলে ভবিষ্যতে নির্বাচনগুলোয় বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। শাস্তির নজির স্থাপন করে ভবিষ্যত বিশৃঙ্খলা দূর করতেই বিদ্রোহীদের ব্যাপারে অনমনীয় অবস্থান রয়েছে।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!