• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
নতুন ইসিও যোগ্যতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবে: সিইসি

বিদায় রকিব কমিশন


নিজস্ব প্রতিবেদক  ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৭, ০৯:৪১ এএম
বিদায় রকিব কমিশন

ঢাকা : কাজী রকিবউদ্দিন আহমদ নেতৃত্বাধীন বিদায়ী কমিশন ভালো করেছে কী খারাপ করেছে এটা পরে দেখার বিষয়। তবে এ কমিশনকে জনগণ মনে রাখবে। মানুষ যেমন ভালোটাকে মনে রাখে তেমনি খারাপটাকেও মনে রাখে। বিদায় বেলায় রকিব কমিশনকে এভাবেই  মূল্যায়ন করেছেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা।

নানা সমালোচনায় বিদ্ধ বিদায়ী নির্বাচন কমিশন পূর্ণ মেয়াদ শেষে আজ বুধবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নিবেন। তাদের বিদায় উপলক্ষে আজ ২.৩০ টায় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে। বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনাররা নিজেদের অনুভূতি তুলে ধরবেন। এ সময় কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনকে বিদায় সংবর্ধনা দেবেন ইসি সচিবালয়। 

এদিকে বিদায়ের আগে গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে বর্তমান কমিশন। এর আগে গত রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তারা। গতকাল সাক্ষাৎ করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে। কাজী রকিবউদ্দীন আহমদসহ তিন নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল মোবারক, আবু হাফিজ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. জাবেদ আলী বিদায় নিবেন আজ এবং আরেক নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ বিদায় নিবেন ১৪ ফেব্রুয়ারি।

জাতীয় স্মৃতিসৌধে বিদায়ী নির্বাচন কমিশনারদের নিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, নতুন নির্বাচন কমিশনও যোগ্যতার সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করবে। এ সময় নতুন নির্বাচন কমিশনারদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি। সিইসি বলেন, এটা সাংবিধানিক দায়িত্ব, দেশের দায়িত্ব ও রাষ্ট্রের দায়িত্ব। আমরা অন্তর থেকে এ দায়িত্ব পালন করেছি। আশা করছি, নতুন নির্বাচন কমিশনও যোগ্যতার সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করবে।

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এটিএম শামসুল হুদা বলেন, বিদায়ী ইসির অনেক কাজেই জনগণ সন্তুষ্ট হতে পারেনি। অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। নতুন ইসির কাছে আমরা সেসব প্রত্যাশা করি না। আশা করি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ছাড়াও তারা হতাহতহীন নির্বাচন উপহার দেবেন। সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার (অব.) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বর্তমান কমিশন ভালো করেছে কী খারাপ করেছে এটা পরে দেখার বিষয়। তবে এ কমিশনকে জনগণ মনে রাখবে। মানুষ যেমন ভালোটাকে মনে রাখে তেমনি খারাপটাকেও মনে রাখে। 

তিনি বলেন, দলীয় সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত বর্তমান কমিশন তাদের মেয়াদপূর্ণ করেছে। দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন করে এর আগে কোনো কমিশন তাদের মেয়াদ শেষ করতে পারেনি। এ কমিশনই প্রথম যারা মেয়াদ শেষ করতে পেরেছে। সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, বর্তমান কমিশন ব্যর্থ কমিশন হিসেবে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকবে। জাতি তাদের ব্যর্থ কমিশন হিসেবে মনে রাখবে। তবে তাদের এত ব্যর্থতার মধ্য দিয়েও তারা মোয়দ শেষ করতে পেরেছে এটাই তাদের সফলতা।

দায়িত্ব নেয়ার পর দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচনসহ প্রায় ৮ হাজার নির্বাচন সম্পন্ন করেছে বিদায়ী এই ইসি। তবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার ও স্থানীয় নির্বাচনে নিহতের নতুন রেকর্ড, হামলা-সংঘর্ষ রোধে ব্যর্থতা ও বেপরোয়া আচরণবিধি লঙ্ঘন নিয়ে ব্যাপক সমালোচনায় দিন কাটিয়েছেন তারা। 

২০১৩ সালে রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, খুলনা ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন সুষ্ঠু হয়। তবে, ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫৩ আসনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার রেকর্ড গড়ে আর কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু নিরপেক্ষ করতে পারেনি রকিব কমিশন। তবে শেষ সময়ে এসে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করে কিছুটা হলেও বদনাম ঘুচানোর চেষ্টা করেছে ইসি। 

গত ৩১ জানুয়ারি টাঙ্গাইল-৪ আসনের উপনির্বাচন ছিল বর্তমান কমিশনের শেষ নির্বাচন। তবে নানা সমালোচনা সহ্য করে রকিব কমিশন পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করে বিদায় নিলেন স্মার্ট কার্ড বিতরণ, ছিটমহলবাসীদের ভোটাধিকার উপহার, নারায়ণগঞ্জে স্বস্তির ভোট আর নতুন নির্বাচন ভবনে যাত্রার তৃপ্তি নিয়ে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!