• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিপদে বন্ধুত্বের পরিচয় দিলেন ফারাজ


প্রথম আলো থেকে আনিসুল হক জুলাই ৩, ২০১৬, ১০:৫২ পিএম
বিপদে বন্ধুত্বের পরিচয় দিলেন ফারাজ

ফারাজ আইয়াজ হোসেন, অবিন্তা কবির, তারুশি জৈনসঙ্গের দুই বন্ধুকে বিপদের মুখে ফেলে রেখে ফারাজ নিজে বাঁচার সুযোগ নেননি। ফারাজ আইয়াজ হোসেন (২০) যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টায় ইমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন। গ্রীষ্মের ছুটিতে ঢাকা এসেছিলেন। আগস্টে তাঁর আবার ফিরে যাওয়ার কথা ছিল যুক্তরাষ্ট্রেই। তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়েই পড়তেন ঢাকার মেয়ে অবিন্তা কবীর। যুক্তরাষ্ট্রের বার্কলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন ভারতীয় তরুণী তারুশি জৈন।

বাবার কর্মসূত্রে ঢাকায় ফারাজদের সঙ্গে একই স্কুলে পড়েছিলেন তিনি। এই তিনজন তাই ছিলেন পরস্পরের বন্ধু। তারুশি একটা শিক্ষানবিশ বৃত্তি পেয়েছেন, বার্কলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ঢাকায় কাজ করতে হবে। সে জন্যই ঢাকায় এসেছিলেন তিনি।

তিন বন্ধু নিজেদের মধ্যে দেখাসাক্ষাৎ করার জন্য গিয়েছিলেন গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারি রেস্তোরাঁয়। ১ জুলাই সন্ধ্যায়। জঙ্গি তরুণেরা আক্রমণ করে বসে ওই রেস্তোরাঁয়।

নিউইয়র্ক টাইমস–এর প্রতিবেদন অনুসারে জঙ্গিদের নিশানা ছিল বিদেশিরা। বাংলাদেশিদের একসময় তারা ছেড়ে দিতেও শুরু করে। জিম্মিদশা থেকে বেরিয়ে এসেছেন, এমন মানুষদের কাছ থেকে শোনা কাহিনি নিউইয়র্ক টাইমস (২ জুলাই) প্রকাশ করেছে।

জঙ্গিরা ফারাজ হোসেনকে মুক্তি দেয়। তারা তাঁকে চলে যেতে বলে। তাঁর সঙ্গে থাকা অন্য বাংলাদেশিরা নিজেরা বেরিয়ে যাওয়ার সময় ফারাজকে তাঁদের সঙ্গে যাওয়ার জন্য বারবার ডাকতে থাকেন।

ফারাজ বলেন, আমার এই দুই বন্ধুর কী হবে?

জঙ্গিরা জানতে পারে, আবিন্তা কবীর এসেছেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে। তারুশি জৈন ভারতীয়। জঙ্গিরা বলে, ওদের ছাড়া হবে না। তখন ফারাজ বলেন, দুই বন্ধুকে ফেলে রেখে আমি যাব না। পরের দিন ফারাজ হোসেনের লাশ পাওয়া যায়।

ফারাজের নানা ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান বলেছেন, নামাজ-কালাম ফারাজের ভালো জানা ছিল। এটাও শোনা যাচ্ছে যে জঙ্গিরা পবিত্র কোরআন শরিফের আয়াত পাঠ করতে বলেছিল। যারা বলতে পেরেছে, তাদের তারা ছেড়ে দিয়েছিল। ফারাজের তা না পারার কোনো কারণ নেই।

শুধু বন্ধুদের বিপদের মুখে ফেলে রেখে নিজে পালিয়ে গিয়ে আত্মরক্ষা করতে চাননি বলে ফারাজ রয়ে গিয়েছিলেন। বন্ধুত্বের জন্য তিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!