• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিমান দুর্ঘটনা: মরদেহ আসবে ধাপে ধাপে


নিউজ ডেস্ক মার্চ ১৪, ২০১৮, ০৬:১০ পিএম
বিমান দুর্ঘটনা: মরদেহ আসবে ধাপে ধাপে

ঢাকা: বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হওয়া বাংলাদেশিদের মরদেহ নেপাল থেকে আসবে কয়েক ধাপে। সবার মরদেহ একসঙ্গে আনা সম্ভব নয় তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। মরদেহ শনাক্ত করে সরকারি প্রক্রিয়া শেষ করতে এই সময় লাগবে। নিহতদের মরদেহ কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা হাসপাতালের ফরেনসিক ল্যাবে রয়েছে।

হাসপাতালের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ, ময়না তদ্ন্তকারী ও দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাই মনে করছেন।

উএস-বাংলার একটি উড়োজাহাজ ১২ মার্চ ৭১ জন আরোহী নিয়ে নেপালের কাঠমান্ডু ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয়। আছড়ে পড়ার পরপরই বিমানটিতে আগুন ধরে যাওয়ায় নিহত অনেকের লাশ ও জাতীয়তা শনাক্ত করতে সমস্যা পড়েছে নেপালি কর্তৃপক্ষ। 

নেপালের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে দেয়া তালিকা অনুযায়ী, ওই দুর্ঘটনায় মোট ৪৯ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে চার ক্রুসহ ২৬ জন বাংলাদেশি। পরে নেপালের সংবাদমাধ্যমগুলো খবর দেয়, নিহতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫১ জন, তাদের মধ্যে ২৮ জন বাংলাদেশি। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় মারা গেছেন আরও দুই জন।

কারণ হিসেবে তারা মনে করছেন, সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে মরদেহ শনাক্তে। কয়েক জনের শরীর ভয়াবহ আকারে বিধ্বস্ত হয়েছে। তাদেরকে কোনোভাবেই চেনা যাচ্ছে না। মরদেহ আনার জন্য স্বজনরা গিয়েছেন নেপালে। কিন্তু তাদেরও দেখতে দেয়া হচ্ছে না। এরমধ্যে এক গৃহবধুর হাতের আংটি ও মেহেদীর ডিজাইন দেখে তার আত্মীয়রা শনাক্ত করেছেন। 

নেপালের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যাদেরকে শনাক্ত করা সম্ভব হবে না তাদের ডিএনএ টেস্ট করা হবে। আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে তা করা হবে। এতে কমপক্ষে ২১ দিন প্রয়োজন হবে। 

বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের মরদেহ বাংলাদেশে আনার সব খরচ বহন করার ঘোষণা দিয়েছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস। এতে যাদের আগে শনাক্ত করা সম্ভব হবে তাদের আগেই দেশে নিয়ে আসা হতে পারে। এভাবে কয়েক ধাপে নিহতদের মরদেহ সকল প্রক্রিয়া শেষ করে দেশে আনা হবে।

অপরদিকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য নিহতদের স্বজনরা হাসপাতালে যাচ্ছেন নিয়মিত। মরদেহ শনাক্ত ও কবে নাগাদ দেশে ফিরিয়ে আনা যাবে তা এখনই নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব হচ্ছে না। 

নেপালের ওই হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের ডাক্তার প্রমোদ শ্রেষ্ঠ বলেছেন, পরিচয় সুনিশ্চিত হয়েই তারা মৃতদেহ হস্তান্তর করতে চান। মরদেহ পরিচয় জানতে চারটি দল কাজ করছে। এর মধ্যে দুটি দল ময়না তদন্ত করছে। একটি দল মরদেহের নানা স্যাম্পল নিয়ে সেখান থেকে পরিচয় জানার চেষ্টা করছে আর অন্যটি পরিবারের স্বজনদের কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য নিয়ে নিশ্চিত হবার চেষ্টা করছে।

এই চারটি দল সম্মিলিতভাবে একটি মরদেহের পরিচয় নিশ্চিত করার কাজটি সম্পন্ন করবে। এই প্রক্রিয়ার মধ্যেই প্রতিটি মরদেহের ডিএনএ স্যাম্পল সংগ্রহ করা হচ্ছে বলেও জানানো হচ্ছে।

১৩ মার্চ পর্যন্ত ১১ জনের মরদেহের পোস্ট মর্টেম সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু এই এগার জন কারা সেটি নিশ্চিত করা যায়নি। ৪৯ জনের লাশের ময়না তদন্ত চলবে আরো কয়েকদিন। কর্তৃপক্ষ বলছেন পরিচয় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কাউকে স্বজনের কাছে হস্তান্তর কিংবা নিজ দেশে ফেরত পাঠানো সম্ভব নয়।

এদিকে কাঠমাণ্ডুতে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকেও জানানো হয়েছে আইনি জটিলতার কারণে নেপাল থেকে মরদেহ নিতে কিছুটা সময় লাগবে। 

১২ মার্চের ওই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২৬ বাংলাদেশি মারাগেছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। 

সোনালীনিউজ/তালেব

Wordbridge School
Link copied!