• ঢাকা
  • বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিমানবন্দরে চোরাচালান রোধে বসছে স্ক্যানার


নিজস্ব প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৬, ০২:১৯ পিএম
বিমানবন্দরে চোরাচালান রোধে বসছে স্ক্যানার

হযরত শাহজালাল (রা.) বিমানবন্দরসহ দেশের ৩টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মানব স্ক্যানার বসানোর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। মূলত উচ্চ প্রযুক্তির মানব স্ক্যানার বসানো হচ্ছে বিমানবন্দরে চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর প্রথমবারের মতো এই ধরনের স্ক্যানার স্থাপন করার প্রস্তাব দিয়েছে। 

তবে ওই স্ক্যানারে ধারণকৃত ছবির গোপনীয়তা নিশ্চিত করা হবে। ওই লক্ষ্যে ইতিমধ্যে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের কাছে প্রস্তাব দেয়া হয়। কারণ দেশের চলমান নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে দ্রুত ওই স্ক্যানার স্থাপন জরুরি বিবেচনা করে শিগগির ওই সংক্রান্ত ক্রয় প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হবে। জাতীয় রাজস্ব বোড সংশ্লিষ্ট সূত্রে ওই তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, গত মাসে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের পক্ষ থেকে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোতে মানব স্ক্যানার বসানোর বিষয়ে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়। প্রস্তাবে বলা হয় উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন বিমানবন্দরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলতে মানব স্ক্যানিং ডিভাইস স্থাপন করা হয়।

কারণ কার মাধ্যমে মানবদেহের অভ্যন্তরে বহনকৃত যে কোনো পণ্যের উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। কোনো প্রকার রেডিয়েশন ছাড়াই ওই স্ক্যানার যাত্রীর দেহের পরিপূর্ণ স্ক্যানিং করতে সক্ষম। বর্তমানে দেশের বিমানবন্দরগুলো নিয়ে দেশী-বিদেশী ব্যক্তি ও সংস্থা নানা ধরনের উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। ওই ধরনের উদ্বেগকে মাথায় রেখে গত জুলাই মাসে দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একযোগে অপারেশন আইরিন পরিচালনা করা হয়।

তাছাড়া বর্তমানে উদ্ভূত নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে দেশের বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরো নিশ্ছিদ্র  করা জরুরি। সেজন্য হযরত শাহজালাল, চট্টগ্রামের হযরত শাহ আমানত ও সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আগমন ও বহির্গমন পয়েন্টে মানব স্ক্যানার বসানো প্রয়োজন। উন্নত প্রযুক্তির ওসব মানব স্ক্যানার স্থাপিত হলে বিমানবন্দরে মাদক ও সোনা পাচার নিয়ন্ত্রণসহ নিরাপত্তাজনিত আশংকার অনেকটাই অবসান ঘটবে।

সূত্র জানায়, দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলো দিয়ে সোনা, দেশী-বিদেশী মুদ্রা, মাদকদ্রব্যসহ বিভিন্ন পণ্য পাচার হচ্ছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন সময় ওসব পণ্যের বড় বড় চালানসহ একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। কিন্তু মানব স্ক্যানার না থাকায় দেহের অভ্যন্তরে বিশেষ কায়দায় লুকিয়ে পাচারকৃত পণ্য উদ্ধার করা দুরূহ।

গত ১৪ আগস্ট কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে ঢাকায় আসা এক যাত্রীকে মাদক পাচারকারী সন্দেহে আটক করা হয়। তারপর তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এক্স-রে করার পর তার দেহের অভ্যন্তরে অভিনব কায়দায় লুকানো ইয়াবা ট্যাবলেটের অস্তিত্ব ধরা পড়ে। ওই সময় অপারেশন করে তার পাকস্থলী থেকে চার হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। তার আগেও বেশ কয়েকজন যাত্রী ওভাবে সোনা পাচারের সময় গ্রেফতার হয়।

সূত্র আরো জানায়, বিমানবন্দরের আর্চওয়ে ও হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে মানবদেহের পুরোপুরি স্ক্যানিং করা সম্ভব নয়। তবে মানব স্ক্যানার দিয়ে যাত্রীর অগোচরে তার দেহের অভ্যন্তরে লুকানো যে কোনো বস্তু কিংবা পণ্যের ইমেজ চিহ্নিত করা সক্ষম। ফলে ওই ধরনের মানব স্ক্যানার দেশের বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তায় উচ্চমাত্রা যোগ করবে।

এ প্রসঙ্গে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান জানান, তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জন্য মোট সাত সেট স্ক্যানার মেশিন প্রয়োজন। তার মধ্যে ঢাকায় তিনটি এবং সিলেট ও চট্টগ্রামে দুটি করে স্ক্যানার বসাতে সর্বোচ্চ ২০ কোটি টাকা খরচ হবে। ওগুলোর নিয়ন্ত্রণ থাকবে সংশ্লিষ্ট কাস্টম হাউসের হাতে। তবে মানব স্ক্যানারে ধারণকৃত ছবির গোপনীয়তা রক্ষায় পূর্ণ নিশ্চয়তা নিশ্চিত করা হবে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এএম

Wordbridge School
Link copied!