• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

বিমানের টয়লেটে লেখা ‘বাঁচাও আমায়’


আন্তর্জাতিক ডেস্ক জুলাই ২০, ২০১৭, ০৭:১৪ পিএম
বিমানের টয়লেটে লেখা ‘বাঁচাও আমায়’

ঢাকা: ফ্লাইট অ্যাটেন্ড করা তাঁর কাজ। কোথাও কোনও যাত্রীর কোনওরকম অসুবিধা হচ্ছে কিনা। হামেশা সতর্ক থাকেন আলাস্কান এয়ারলাইনসের কর্মী শীলা ফ্রেডরিক। সেদিনও সান ফ্রান্সিসকো যাওয়ার বিমানে তাই করছিলেন শীলা। আচমকা তাঁর নজর যায় বিমানের সিটে বসে থাকা এক ১৪-১৫ বছরের মেয়ের উপর।

এক ধোপদুরস্ত পোশাক পরা ব্যক্তির পাশে বসে রয়েছে মেয়েটি। কিন্তু তাঁর পোশাক যথেষ্ট অপরিচ্ছন্ন। তা থাকতেই পারে। কিন্তু মেয়েটির চোখের চাহনি বড় অদ্ভুত ছিল। যেন কিছু একটা বলতে চাইছিল শীলাকে। কিন্তু পাশের লোকটার জন্য বলে উঠতে পারছে না।

কী করা যায়? কেমন করে জানা যায় মেয়েটার মনের কথা? এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছিল শীলার মাথায়। হঠাৎ বিদ্যুতের মতো একটি উপায় মাথায় আসে। মেয়েটির পাশ দিয়ে বিমানের টয়লেটের দিকে যান শীলা। সেখানে একটি নোটপ্যাড ও পেন রেখে আসেন। টয়লেট থেকে বেরিয়েই মেয়েটিকে সেখানে যেতে ইশারা করে দেন।

তাঁর ফিরে আসার কিছুক্ষণ পর মেয়েটি টয়লেটে প্রবেশ করে। সে ফিরে আসার পর আবার বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেন শীলা। খানিকটা সময় কাটিয়েই টয়লেটে ফিরে যান তিনি। নোটপ্যাড খুলে দেখেন তাতে লেখা ‘বাঁচাও আমায়’।

আর সময় নষ্ট করেননি এই বিমানসেবিকা। সঙ্গে সঙ্গে পাইলটকে গিয়ে সমস্ত কথা জানান। তিনি আগে থেকেই পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে রাখেন। সান ফ্রান্সিসকো বিমানবন্দরে নামা মাত্র উদ্ধার করা হয় মেয়েটিকে। গ্রেপ্তার করা হয় তাঁর পাশের ব্যক্তিকে। জানা যায়, বড় মাপের শিশুপাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত ওই ব্যক্তি। যা ফাঁস হল শীলার মতো বিমান সেবিকার সতর্কতায়।

এর কিছুদিন পরই শীলার কাছে একটি ফোন আসে। তা ছিল উদ্ধার হওয়া মেয়েটির। নিজের জীবন বাঁচানোর জন্য শীলাকে ধন্যবাদ দেয় সে। ঘটনা ২০১১ সালের, কিন্তু আজও মেয়েটির সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে শীলার। আর এখন শীলা শিশুপাচারের মতো ঘটনা নিয়ে আরও সতর্ক।

এয়ারলাইন অ্যাম্বাসাডরস ইন্টারন্যাশনাল নামক একটি সংগঠনের সদস্য তিনি। যেখানে এই ধরনের সমস্যার মোকাবিলার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় বিমানসেবিকাদের। নারী ও শিশুপাচারের মতো অপরাধ এতটাই বেড়ে গিয়েছে। তা এখন বিশ্বের বেড়ে চলা অপরাধের সারিতে তৃতীয়স্থানে রয়েছে।

প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মাদক ও অস্ত্র চোরাচালানের মতো অপরাধ। কিন্তু যে গতিতে নারী ও শিশু পাচারের পরিমাণ বাড়ছে। তা অচিরেই সমস্ত সীমা ছাপিয়ে যাবে। এর বিরুদ্ধেই রুখে দাঁড়াতে তৎপর শীলার মতো বিমানসেবিকা। সূত্র-সংবাদ প্রতিদিন

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেএ

Wordbridge School
Link copied!