• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
ফেনীতে নতুন করে বন্যা

বিশুদ্ধ পানির হাহাকার!


মুহাম্মদ আরিফুর রহমান, ফেনী জুলাই ২৬, ২০১৭, ০৯:৫৬ এএম
বিশুদ্ধ পানির হাহাকার!

ফেনী: গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার ১৫-১৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ছোট ফেনী নদী ও কাটাখালির নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে নতুন করে গ্রামগুলো প্লাবিত হয়।

এছাড়া ফেনীর সোনাগাজীতে বেড়িবাঁধের বাইরে ঘর-বাড়ি ছোট নদীর জোয়ারের পানিতে ডুবে গেছে। অন্যদিকে ফুলগাজীতে বন্যার পরিস্থিতির আগের মতোই রয়েছে।

দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম ভূঞা জানান, সিন্দুরপর ইউনিয়নের সিকান্দরপুর, কৈখালী, শরিফপুর, গৌতমখালী, রাজাপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামসহ ১৫ টি গ্রামে পানি উঠেছে। ওই গ্রামের বাসিন্দারা আশ্রয় কেন্দ্রে আশয় নিয়েছে। সিন্দুরপুর ইউনিয়নের শরিফপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আশয় নেয়া মানুষজন সেখানে মানবেতর জীবন যাপন করছে। অস্থায়ী চুলায় রান্না করতে গিয়ে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা বিবি কুলসুম জানান, খাওয়া, টয়লেটসহ নানাবিধ সমস্যায় দিন কাটাচ্ছি। একটি রুমের মধ্যে পর পুরুষসহ থাকতে হচ্ছে। বিবাহ উপযুক্ত বহু মেয়ে সেখানে থাকতে হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে- এলাকার সকল টিউবওয়েল পানিতে ডুবে গেছে। কয়েক কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পানি আনতে দেখা গেছে গ্রামের মেয়েদের। সিন্দুরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী সোনিয়া আক্তার ও ফারজানা আক্তার কোমর সমান পানি পথ পাড়ি দিয়ে বিশুদ্ধ পানি আনতে দেখা গেছে।

শরীফপুর গ্রামের বাসিন্দা এনামুল হক জানান, ‘ছোট ফেনী নদীর বিভিন্ন অংশে একটি মহল মাছ ধরার জন্য বাঁধ দিয়ে রাখায় পানি সরবরাহ হতে পারছেনা। যারফলে মানুষের বাড়ি-ঘরে পানি উঠতে দেখা গেছে।’ কৈখালী গ্রামের বাসিন্দা ফজলুল হক জানান, এক রাতে ৫ লক্ষ টাকার মাছ বন্যায় ভেসে গেছে। শুধু মাত্র নদীতে বাঁধের কারণে।

দাগনভূঞা উপজেলা চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন জানান, বন্যার্তদের জন্য প্রয়োজনীয় শুকনা খাবারও প্রস্তুত আছে। গত দুইদিন ধরে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে শুকনা খাবার ও চাল দিচ্ছি। ইতোমধ্যে ২টন চাল বিতিরণ করেছি।

সিন্দুরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুন নবী জানান, তার ইউনিয়নে প্রায় সবক’টি গ্রাম পানিতে ডুবে গেছে। এখানে ২০ হাজার মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আশয় নিয়েছে।

ফেনী সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুন জানান,  শর্শদী ইউনিয়নের আবুপুরসহ চার গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়েগেছে। তবে এখনো পানি ঘর-বাড়িতে উঠেনি। রাস্তা-ঘাট ও বাড়ির উঠোনে পানি উঠেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কোহিনুর আলম জানিয়েছেন, উজানের পানি নেমে আসায় দাগনভূঞা ও ফেনী সদর উপজেলার কিছু এলাকায় নতুন করে পানি উঠেছে। এছাড়া সোনাগাজী উপজেলায় বেডিবাঁধের বাইরে জোয়ারের পানি মানুষের বাড়ি ঘরে উঠেছে। তবে এপানি বেশীক্ষণ স্থায়ী হবেনা।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!