• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিশেষ প্রকল্পেই এখন বিশেষ বরাদ্দ


নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ৫, ২০১৬, ০৮:৫২ পিএম
বিশেষ প্রকল্পেই এখন বিশেষ বরাদ্দ

ঢাকা: মন্ত্রী, সংসদ সদস্য অথবা প্রভাবশালীরা আবেদন করলেই স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জন্য বিশেষ বরাদ্দ পেতেন। মন্ত্রণালয় থেকে তাদের আবেদনে সাড়া দেয়া হতো। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বরাদ্দ থেকে বিশেষ হিসেবে একটি অংশ রেখে দেয়া হতো। আর তা বরাদ্দ দিতেন সাধারণত মন্ত্রণালয়, মন্ত্রী ও সচিব। 

বিশেষ করে মন্ত্রী, এমপি ও প্রভাবশালীদের আবেদনের ওপর ওই বরাদ্দ দেয়া হতো। তাছাড়া বিশেষ ব্যক্তিরাও বিশেষ বরাদ্দ পেতেন। এতে একই প্রতিষ্ঠানের নামে একাধিকবার বরাদ্দের ঘটনাও ঘটতো। এই পরিস্থিতিতে দুর্নীতির সুযোগ থেকে যেতো। তাই সরকার দুর্নীতি বন্ধ আর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে বিশেষ ব্যক্তিদের সুপারিশে দেয়া বিশেষ বরাদ্দের বিষয়টি সম্প্রতি বাতিল করেছে।

তবে কোনো বিশেষ এলাকার জন্য যদি বিশেষ বরাদ্দের প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে সরকার পরিকল্পনা কমিশনের মাধ্যমে বিশেষ প্রকল্প নিয়ে তার বিপরীতে অর্থ বরাদ্দ দিতে পারবে। ওই রকম প্রকল্প পাওয়া গেলেই শুধু বিশেষ বরাদ্দ দেবে মন্ত্রণালয়। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির সাধারণ বরাদ্দ থেকে টাকা কেটে নিয়ে বিশেষ বিশেষ অঞ্চলে বিশেষ বরাদ্দ আর দেবে না সরকার।

এখন থেকে সব জেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদে ওই বরাদ্দ সাধারণ বরাদ্দ হিসেবে দেয়া হবে। তবে বরাদ্দ দেয়ার ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর রাজস্ব আয়কে বিবেচনায় নেয়া হবে। যেসব প্রতিষ্ঠানে রাজস্ব আয় কম বরাদ্দের ক্ষেত্রে সেগুলোকে প্রাধান্য দেয়া হবে।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবদুল মালেক জানিয়েছেন, এখন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোতে সাধারণ বরাদ্দ দেয়া হবে। তারাই ঠিক করবেন কোন প্রতিষ্ঠানকে কত টাকা দিতে হবে। সাধারণ বরাদ্দ বিভাজনের সময় যেসব প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব আয় কম তাদের একটু বেশি বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। যাতে তারা ওই অর্থ এলাকার উন্নয়নে ব্যবহার করতে পারে।

সচিব আবদুল মালেক আরো জানান, বরাদ্দ পেতে এখন আর কাউকে মন্ত্রণালয়ে আসতে হবে না। ইতোমধ্যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রথম কিস্তির অর্থ বিভাজন করা হয়েছে।

সূত্রমতে, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বরাদ্দ থেকেই বিশেষ হিসেবে একটি অংশ রেখে দেয়া হতো। আর তা বরাদ্দ দিতেন সাধারণত মন্ত্রণালয়, মন্ত্রী ও সচিব। বিশেষ করে মন্ত্রী, এমপি ও প্রভাবশালীদের আবেদনের ওপর ওই বরাদ্দ দেয়া হতো। তাছাড়া বিশেষ ব্যক্তিরাও বিশেষ বরাদ্দ পেতেন। এতে দুর্নীতি আর অর্থঅপচয় বা আত্মাসতের মতো ঘটনা ঘটতো। যদিও চলতি অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে জেলা পরিষদের বরাদ্দ রয়েছে ৩শ' ৯০ কোটি টাকা, সিটি করপোরেশনে ২শ' কোটি টাকা, পৌরসভায় ৪শ' কোটি টাকা ও উপজেলা পরিষদে ৩শ' কোটি টাকা। ওগুলো চারটি কিস্তিতে ভাগ করা হবে। 

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন জানান, বিশেষ বরাদ্দের নামে বলতে গেলে এক ধরনের দুর্নীতি হয়। অভিযোগ রয়েছে ঘুষ দিয়ে কিংবা অবৈধ উপায়ে যে কেউ এমপি-মন্ত্রীর ডিও লেটার নিয়ে ওই টাকা নিয়ে যায়। বরাদ্দের টাকা ব্যবহার সম্পর্কেও সঠিক তথ্য জানা যায় না। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা এবং দুর্নীতি বন্ধসহ সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যই বিশেষ বরাদ্দ এবং সংরক্ষিত তহবিল বাতিল করা হয়েছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!