• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্ব এইডস দিবস: সচেতনতাই মুক্তির উপায়


সোনালীনিউজ ডেস্ক ডিসেম্বর ১, ২০১৬, ১০:০০ এএম
বিশ্ব এইডস দিবস: সচেতনতাই মুক্তির উপায়

আজ ১ ডিসেম্বর বিশ্ব এইডস দিবস। প্রতিবারের মতো এবারও বাংলাদেশে দিবসটি পালন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ বছর বিশ্ব এইডস দিবসের প্রতিপাদ্য হলো, ‘আসুন, ঐক্যের হাত তুলি: এইচআইভি প্রতিরোধ করি’। দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে সকাল ৯টায় শাহবাগ বটতলা থেকে শোভাযাত্রা বের হয়।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী আলাদা বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তাঁর বাণীতে এইডস বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে এর স্বাস্থ্যগত দিকের পাশাপাশি মানবিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্বের বিষয়টি তুলে ধরার আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণীতে আক্রান্ত ব্যক্তির প্রতি সামাজিক বৈষম্য রোধ, মৃত্যুহার হ্রাস ও এমডিজি-৬ অর্জনে কার্যকর উদ্যোগ নিতে দাতাগোষ্ঠীসহ সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।

এইডস সম্পর্কিত তথ্য

এইডস হচ্ছে এইচআইভি নামক ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট একটি ব্যাধি। যা মানুষের শরীরের রোগ-প্রতিরোধের ক্ষমতা হ্রাস করে দেয়। এতে করে একজন এইডস রোগী খুব সহজেই যেকোন সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হতে পারেন, যা শেষ পর্যন্ত তার মৃত্যু ঘটাতে পারে।

তথ্যমতে, এইচআইভি সংক্রমণের সঙ্গে সঙ্গেই সর্বদা এইডস হয় না। কিন্তু যেহেতু একবার সংক্রামক এইচ.আই.ভি. শরীরে ঢুকলে তাকে পুরোপুরি দূর করা এখন পর্যন্ত সম্ভব হয়নি, তাই এইচআইভি সংক্রমণ হলে এইডস প্রায় অনিবার্য। তবে বিনা চিকিৎসায় এইডস পর্যায়ে পৌঁছতে যদি লাগে গড়ে দশ বছর তবে চিকিৎসার দ্বারা তাকে আরো কিছু বছর পিছিয়ে দেওয়া যায়। কিন্তু "হার্রট" (HAART) নামে এইডস এর যে কম্বিনেশন ওষুধ দ্বারা চিকিৎসা পদ্ধতি তা অত্যন্ত খরচ সাপেক্ষ।

সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান নির্বার্হী ড. মার্গারেট চ্যান বলেছেন, এক মিলিয়নের ওপরে এইচআইভ আক্রান্ত মানুষ চিকিৎসা সেবার বাইরে রয়েছে। যাদের দ্বারা অন্যরাও আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। অথচ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ তাদের রয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ন্যাশনাল এইডস-এসটিডি প্রোগ্রাম (এনএএসপি) থেকে জানা গেছে, গত এক বছরে বাংলাদেশে ৪৬৯ জন এইচআইভি-এইডস রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৯৫ জন ।

এনএএসপি সূত্রের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশে ১৯৮৯ সালে প্রথম এইডস রোগী শনাক্ত করা হয়। ২০১৫ সালে ৩৪৪ পুরুষ, ১১৭ মহিলা এবং ২ জন তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) সহ মোট ৪৬৯ জন এইচআইভিতে সংক্রমিত হয়। আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকায় ১৯৫, চট্টগ্রামে ১০৪, খুলনায় ৪১, বরিশালে ১৩, সিলেট ৯৮ এবং ময়মনসিংহ, রাজশাহী, রংপুরে ৬ জন করে রয়েছেন। বর্তমানে দেশে এইডস-এ আক্রান্তের সংখ্যা ৯৫০০ জন।

যেভাবে এইডস ছড়ায়

প্রাপ্ত তথ্যমতে, এইচআইভিতে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত গ্রহণ করলে, বা তার ব্যবহৃত ইনজেকশনের সিরিঞ্জ বা সূঁচ ব্যবহার করলে। আক্রান্ত গর্ভবতী মায়ের শিশুরও আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যা গর্ভধারণের শেষদিকে বা প্রসবের সময় হতে পারে। তবে জিডোভুডিন ওষুধ ব্যবহার করে এই সম্ভাবনা কিছুটা কম করা যায় এবং তা করলে মায়ের দুধও বাচ্চাকে দেওয়া যেতে পারে (কারণ মার দুধ না পেলে গরিব ঘরে জন্মানো বাচ্চার মৃত্যুসম্ভাবনা আরো বেশি। আক্রান্ত কারো সাথে অসংরক্ষিত (কনডম ব্যবহার না করে) যৌন সম্পর্ক করলে।

শরীরজাত অধিকাংশ তরল ক্ষরণে এইচআইভি নিষ্কৃত হয়। তবে স্নেহপদার্থের আবরণ (envelop) থাকায় এইচআইভি অত্যন্ত ভঙ্গুর। তাই এইচআইভি শরীরের বাইরে বেশিক্ষণ বাঁচেনা। এই কারণে সরাসরি রক্ত বা যৌন নিঃসরণ শরীরে প্রবেশ না করলে এইচআইভি সংক্রমণের সম্ভাবনা খুব কম। শুধু স্পর্শ, একসাথে খাওয়া, এমনকি একই জামাকাপড় পরা, বা মশার কামড়ে কখনো এইচআইভি ছড়ায়না। তাই এইচআইভি সংক্রমণ ছোঁয়াচে নয়।

লক্ষণ

চিকিৎসকদের মতে, বেশির ভাগ এইচআইভি রোগীই কোন লক্ষণ ছাড়া এই রোগ বহন করে। তবে কখনো কখনো এই ভাইরাসে আক্রান্ত হবার ৬ থেকে ৬ সপ্তাহ পরে কিছু অনির্দিষ্ট লক্ষণ দেখা দিতে পারে। যেমন জ্বর, গলা ব্যাথা, মাথা ব্যথা, enlarged lymph node, ইত্যাদি। এইসব লক্ষণ কোনরকম চিকিৎসা ছাড়াই সেরে যায়। যার কারণে রোগী এ ভাইরাস সম্পর্কে অবগত হয় না। এইচআইভি কোনরকম লক্ষণ ছাড়াই সর্বোচ্চ ১০ বছর মানুষের শরীরে নিরবে বাস করতে পারে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইউ

Wordbridge School
Link copied!