• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বকাপে মেড ইন বাংলাদেশ জার্সি


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ১৭, ২০১৮, ১২:৫৬ পিএম
বিশ্বকাপে মেড ইন বাংলাদেশ জার্সি

ঢাকা : শুরু হয়েছে ফুটবল বিশ্বকাপের উন্মাদনা। ফিফা বিশ্বকাপের ২১তম আসর বসছে রাশিয়ার ১১টি শহরের ১২টি দৃষ্টিনন্দন স্টেডিয়ামে। মাসব্যাপী হবে বিশ্বের ৩২টি ফুটবল দলের যুদ্ধ। দেশজুড়ে পতাকা ও জার্সি ব্যবসাও এখন জমজমাট। বিশ্বকাপ খেলাটি দূরদেশে অনুষ্ঠিত হলেও বাংলাদেশেও বিশ্বকাপ অর্থনীতির বিরাট প্রভাব পড়বে। দেশের বাজারে জার্সি ও পতাকা বিক্রি এবং বিশ্বকাপ উপলক্ষে টেলিভিশন বিক্রি বেড়ে গেছে বহুগুণে।

তার পাশাপাশি আমাদের অর্থনীতি ও দেশের গৌরবের আরেকটি বড় খবর হলো- বিশ্বকাপের জার্সি বাংলাদেশের তৈরি। তার মানে ফুটবল বিশ্বকাপে বাংলাদেশ না খেললেও বিশ্বকাপের জার্সিতে ঠিকই লেখা থাকবে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ নামটি। কেননা বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর সিংহভাগ জার্সিই বাংলাদেশ থেকে বানিয়ে নেয় দেশগুলোর জার্সি স্পন্সররা। বিশ্বকাপ উপলক্ষে ৩২টি দেশের সমাবেশ ঘটতে যাচ্ছে রাশিয়ায়। মাঠের লড়াইয়ে বাংলাদেশ না থাকলেও এ দেশের তৈরি জার্সি থাকবে বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড়দের গায়ে।

শুধু জার্সিই নয়- গেঞ্জি, হাফপ্যান্টসহ নানা ধরনের পণ্য তৈরি করে সরবরাহ করছে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজক সংস্থা ফিফার কার্যাদেশের ভিত্তিতে বিভিন্ন দেশের খ্যাতিমান ব্র্যান্ড এসব পণ্য আমদানি করছে। এ প্রসঙ্গে বিকেএমইএর সহ-সভাপতি মনসুর আহমেদ এক বিবৃতিতে বলেছেন, বিশ্ববিখ্যাত ব্র্যান্ড কোম্পানি অ্যাডিডাস, পুমার মতো প্রতিষ্ঠানের ক্রীড়াসংশ্লিষ্ট পোশাক বাংলাদেশ বানিয়ে থাকে। এ বছর বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া ৩২টি দেশের খেলোয়াড় ও ভক্তদের জন্য জার্সি বানানো হয়েছে বাংলাদেশ থেকে। স্বল্পমূল্যের জন্যই বাংলাদেশ এ খাতে উন্নতি করেছে।  তাহলে আমরা গর্ব করে বলতেই পারি বাংলাদেশও থাকছে এবারের ফিফা বিশ্বকাপে।

জানা গেছে, বিশ্বকাপ জার্সি তৈরি করে সরবরাহ করছে বাংলাদেশের পোশাক কারখানা। বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেন, প্রতিবছর বিশ্বের সেরা স্পোর্টস ব্র্যান্ড অ্যাডিডাস, নাইকি, পুমা বাংলাদেশের প্রায় শতাধিক গার্মেন্ট থেকে জার্সি শটস নিয়ে থাকে। প্লেয়ার জার্সি, ফ্যান জার্সি ও কান্ট্রি জার্সি- এই তিন ধরনের জার্সি বানিয়েছে বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলো। এগুলোর বেশিরভাগই ব্রাজিল, জার্মানি, ফ্রান্স, স্পেন, বেলজিয়াম, ইতালি, আর্জেন্টিনা ও পর্তুগাল ভক্তদের জন্য তৈরি। মাঠজুড়ে দর্শক-সমর্থকদেরও অনেকেরই গায়ে থাকবে বাংলাদেশে তৈরি জার্সি ও টি-শার্ট। শুধু মাঠ নয়, এই মহাযজ্ঞের সময় বিশ্বজুড়ে ফুটবলপ্রেমীরা মেতে উঠবেন নানা ফ্যাশনে, যার বড় অনুষঙ্গ পোশাক।

তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা জানান, বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড় এবং দর্শক-সমর্থকদের জন্য অন্তত ১৫ আইটেমের ১ কোটি পিসের বেশি পোশাক সরবরাহ করছে বাংলাদেশ। এসব পোশাকের বেশিরভাগই নিট বা গেঞ্জি জাতীয়। বিশ্বকাপ উপলক্ষে গত তিন মাসে নিটপণ্যের রফতানি আদেশ বেড়েছে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩৫ শতাংশ।

জানা গেছে, চলতি বছরে বিশ্বকাপ ফুটবলের আসরে ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশ প্রায় ১০০ কোটি ডলার বা ৮ হাজার ৬০০ কোটি টাকার পণ্য রফতানি করেছে। এর আগে ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে রফতানি করেছিল প্রায় ৭০ কোটি ডলারের পণ্য। সে তুলনায় এবার ৩০ কোটি ডলারের পণ্য বেশি পাঠাতে পেরেছে।

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) সূত্রে জানা যায়, শুধু বিশ্বকাপ ফুটবলের আসরেই নয়, অন্য সময়ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন পণ্য আমদানি করে। এ কারণে সারা বছরই খেলার সামগ্রী তৈরি হয় দেশের শতাধিক নিট পোশাক কারখানায়।

এবার সবচেয়ে বেশি রফতানি হয়েছে খেলোয়াড়দের জার্সি, গেঞ্জি, হাফপ্যান্ট, শীতের পোশাক, ট্রাউজার, অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর জাতীয় পাতাকা ইত্যাদি। বহুজাতিক খ্যাতিমান ব্র্যান্ডগুলো এসব আমদানি করে বাজারে ছাড়ে। এবার ফিফার কার্যাদেশের ভিত্তিতে নেওয়া হচ্ছে। বিশ্বকাপ আয়োজনে রিবক, নাইকি, অ্যাডিডাস, পুমা, কেরিফোর, সিঅ্যান্ডএ, এইচঅ্যান্ডএমসহ বিভিন্ন খ্যাতিমান ব্র্যান্ড কোম্পানি এসব পণ্য সরবরাহ করছে। এদের অনেকেই বাংলাদেশ থেকে পণ্য নিয়ে বিদেশের বাজারে বিক্রি করে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!