• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বব্যাংককে ক্ষমা চাইতে হবে


নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৭, ০৯:৩৩ পিএম
বিশ্বব্যাংককে ক্ষমা চাইতে হবে

ঢাকা: পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ আনার কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ যাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের কাছে বিশ্বব্যাংককে ক্ষমা চাইতে হবে।

রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) সংসদে কানাডার আদালতে পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির ষড়যন্ত্র সংক্রান্ত মামলা খারিজ হওয়ার বিষয়ে পয়েন্ট অব অর্ডারে আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি এবং বিরোধী দলের সদস্যরা এ দাবি জানান। জাতীয় পার্টির সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে বিষয়টি উত্থাপন করেন।  

পরে বিষয়ের ওপর বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, সরকারি দলের সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ডা. দীপু মনি, আবদুল মান্নান, জাতীয় পার্টির জিয়াউদ্দিন বাবলু ও জাসদের মইন উদ্দিন খান বাদল আলোচনায় অংশ নেন।  

সংসদ সদস্যরা বলেন, রাষ্ট্রের মর্যাদা পুনরুদ্ধারের জন্য এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে রাষ্ট্রের উচিত মামলা করা এবং কাল্পনিক অভিযোগের কারণে পদ্মাসেতু নির্মাণ কাজ শুরু করতে যে সময় ও অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে, বিশ্বব্যাংকের কাছে তার ক্ষতিপূরণ দাবি করতে হবে।  
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। কানাডার আদালত দুর্নীতির কোন তথ্য প্রমাণ পায়নি। এটা দুর্নীতির ষড়যন্ত্র ছিল না, এটা ছিল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।  

কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, সারা জাতির উপকারে ও দেশের উন্নয়নের কথা চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রী পদ্মাসেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেন। বিশ্বব্যাংক এতোটা শক্তিশালী না, যে শক্তিকে পুঁজি করে তারা ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে উপহাস করতে পারে, সেই স্বাধীন দেশের মানুষকে অপমান করতে পারে, সেই শক্তি বিশ্বব্যাংকের নেই।  

সরকারি দলের সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, যারা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না, যারা দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি চায় না তারাই পদ্মাসেতু নিয়ে ষড়যন্ত্র করেছে। বাংলাদেশকে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিশ্ব দরবারে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্যই বিশ্বব্যাংক এই দুর্নীতির কাল্পনিক অভিযোগ করেছে।  

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, কানাডার আদালতে মামলা খারিজ হয়ে যাওয়ায় আজকে বাংলাদেশের আত্মমর্যাদা পুনরুদ্ধার হয়েছে। মিথ্যা অভিযোগ তোলার কারণে বিশ্বব্যাংককে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ যাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে তাদের কাছে মাফ চাইতে হবে। এই অভিযোগের ফলে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের তিনি আইনী প্রতিকার চাওয়ার পরামর্শ দেন।  

এ বিষয়ে নির্ধারিত বিধিতে একটি প্রস্তাব এনে তা গ্রহণ করার আহবান জানিয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, সংসদের উচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি অভিনন্দন বার্তা পৌঁছে দেয়া এবং রাষ্ট্রের মর্যাদা পুনরুদ্ধারের জন্য রাষ্ট্রকেই বাদী হয়ে বিশ্ব ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা করা।

প্রসঙ্গত- পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ পেতে কানাডীয় কোম্পানি এসএনসি-লাভালিন বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঘুষ লেনদেনের ষড়যন্ত্র করেছিল অভিযোগ করে অর্থ আটকায় বিশ্ব ব্যাংক। পরে তাদের শর্তে এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল, যোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে সরে গিয়েছিলেন আবুল হোসেন।

তার পরেও বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এই অবকাঠামো প্রকল্পে অর্থায়ন করেনি বিশ্ব ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানটির সে সময়ের প্রেসিডেন্ট রবার্ট জেলিক দায়িত্ব ছাড়ার আগে আগে ওই চুক্তি বাতিল করেছিলেন।

তবে এই প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ খারিজ করে কানাডার আদালত বলেছে, এই মামলায় কোনো প্রমাণ হাজির করা হয়নি। প্রমাণ হিসেবে যেগুলো উপস্থাপন করা হয়েছে সেগুলো  ‘অনুমানভিত্তিক, গাল-গল্প ও গুজবের বেশি কিছু নয়’।

বিশ্ব ব্যাংকের শর্ত পূরণের জন্য বাংলাদেশে এ ঘটনায় দুদক মামলা করলে তাদের তদন্তে সহযোগিতার জন্য লুই গাব্রিয়েল মোরেনো ওকাম্পোর নেতৃত্বে বিশ্ব ব্যাংকের একটি প্রতিনিধি দল এসেছিলেন ঢাকায়।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!