• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বের শীতলতম গ্রামে ভয়ঙ্কর-সুন্দর শীত!


আন্তর্জাতিক ডেস্ক  জানুয়ারি ১২, ২০১৭, ০৮:৪৭ পিএম
বিশ্বের শীতলতম গ্রামে ভয়ঙ্কর-সুন্দর শীত!

সকাল না দুপুর?

ঢাকা: গ্রামের নাম ওয়েমায়য়াকোন। রুশ ভাষায় যার অর্থ ‘জমে না যাওয়া জল’। কিন্তু কি আশ্চর্য! ভয়ঙ্কর শীতে এই গ্রামে জল জমে তো শিলা হয়ে যায়! শীতকালে গড় তাপমাত্রা গিয়ে পৌঁছে একেবারে মাইনাস ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

রাশিয়ার ইয়াকুৎস্ক প্রদেশের এই ওয়েমায়য়াকোনই হল বিশ্বের শীতলতম গ্রাম। যেখানে পাকাপাকিভাবে মানুষের বসতিও রয়েছে। প্রায় শত বছর আগে ১৯২৪ সালের জানুয়ারিতে এ গ্রামের তাপমাত্রা নেমেছিল মাইনাস ৭১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। যা উত্তর গোলার্ধে এখন অবধি রেকর্ড।

রাখাল?

ওয়েমায়য়াকোন গ্রামে শীতকাল হানা দেয় অন্যরকমভাবে। এ মৌসুমে জীবনযাত্রা স্তব্ধ হয়ে যায়। গাড়ির স্টার্ট একবার দিলে আর কেউ বন্ধ করে না। জ্বালানি শেষ হওয়া অবধি চলতেই থাকে। কারণ একবার বন্ধ করলে পরে আর স্টার্ট নাও নিতে পারে।

শীতকালে এই গ্রামে ভয়ঙ্কর তাপমাত্রায় কলমের রিফিলে কালি আর নাকের উপর চশমা জমে যায়। পাশাপাশি‚ দাঁতে দাঁত চিপে জীবন সংগ্রাম তো আছেই। তবু তারমধ্যেই বয়ে চলে জীবন। বিশ্বের শীতলতম এই গ্রাম দেখতে আসেন পর্যটকরা। নতুন সূর্য দেখার জন্য অপেক্ষায় থাকেন তুষারপুরীর বাসিন্দারা।

কাঁচা বাজার

ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, এক সময় ওয়েমায়য়াকোন ছিল বল্গা হরিণদের জলপানের জায়গা। আসা যাওয়ার পথে এখানে উষ্ণ প্রস্রবণে জল খাওয়ানো হত প্রাণীগুলোকে। এই উষ্ণ প্রস্রবণের জন্য জায়গাটিকে বলা হয় ‘জমাট না হওয়া জল’। ক্রমে এখানে বসতি শুরু করায় সাবেক সোভিয়েত সরকার।

ট্রাফিক

রাশিয়ার ইয়াকুৎস্ক থেকে ওয়েমায়য়াকোন পৌঁছতে গাড়িতে লাগে দুদিন। এই গ্রামে এখন ৫০০ মানুষের বাস। আছে স্কুল কলেজও। নিয়মিতও ক্লাসও বসে সেখানে। তবে গ্রামবাসীর জীবন কষ্টসহিষ্ণুতার চরম পরাকাষ্ঠা। খাবার বলতে শুধু বল্গা হরিণ আর ঘোড়ার মাংস। কারণ কোনো সবজি জন্মায় না এখানে। অধিবাসীদের অপুষ্টির হাত থেকে রক্ষা করে পোষ্যদের দুধ। গ্রামে দোকান একটি। সবেধন নীলমণি ওই দোকানেই মেলে প্রয়োজনীয় জিনিস।

বল্গা হরিণ

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সাড়ে সাতশ মিটার উঁচুতে ওয়েমায়য়াকোন গ্রামে গ্রীষ্মকালে সূর্য আকাশে থাকে মাত্র ২১ ঘণ্টা। আর শীতে মাত্র ৩ ঘণ্টা। স্থানীয়দের জীবিকা বলতে‚ বল্গা-পালক‚ শিকারি বা তুষারজেলে। জুন থেকে অগাস্ট তাপমাত্রা থাকে ৩০ ডিগ্রির ওপরে। আর ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে সেটাই নেমে যায় হিমাংকের ৫০ দাগ নিচে। তখন তো দাঁতে দাঁত চেপে চলে জীবন সংগ্রাম।

সোনালীনিউজ/এমএন

Wordbridge School
Link copied!