• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের ৪৫তম শাহাদতবার্ষিকী আজ


ফরহাদ খান, নড়াইল প্রতিনিধি সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৬, ০১:০৬ পিএম
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের ৪৫তম শাহাদতবার্ষিকী আজ

মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গণের সাহসী সন্তান বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখের ৪৫তম শাহাদতবার্ষিকী আজ সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর)। ১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার গোয়ালহাটি গ্রামে শাহাদাতবরণ করেন তিনি।

এদিন পাকিস্তানি হানাদারবাহিনীকে প্রতিরোধ এবং দলীয় সঙ্গীদের জীবন ও অস্ত্র রক্ষা করতে গিয়ে শহীদ হন নূর মোহাম্মদ। যশোরের শার্শা উপজেলার কাশিপুর গ্রামে তাকে সমাহিত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা ও আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ খেতাবে ভূষিত করা হয়।

নূর মোহাম্মদ ১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদর উপজেলার চন্ডিবরপুর ইউনিয়নের মহিষখোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মোহাম্মদ আমানত শেখ ও মা জেন্নাতুন্নেছা, মতান্তরে জেন্নাতা খানম। বাল্যকালেই বাবা-মাকে হারান তিনি। সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। তবে, মতান্তর রয়েছে। তার স্ত্রী ফজিলাতুন নেসা, ছেলে গোলাম মোস্তফা কামাল ও তিন মেয়ে নড়াইলসহ যশোরে বসবাস করেন।

মহিষখোলার নাম পরিবর্তন করে ২০০৮ সালের ১৮ মার্চ নূর মোহাম্মদ নগর করা হয়। এরপর উন্নয়নের ছোঁয়ায় বদলে যায় নূর মোহাম্মদ নগর। তার স্মৃতিরক্ষার্থে নূর মোহাম্মদ নগরে নির্মাণ করা হয়েছে ‘বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর’ এবং স্মৃতিস্তম্ভ। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং কলেজ।

তার কর্মময় জীবন থেকে জানা যায়, ১৯৫৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসে (ইপিআর) যোগদান করেন নূর মোহাম্মদ। বর্তমানে ‘বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ’ (বিজিবি)। দীর্ঘদিন দিনাজপুর সীমান্তে চাকরি করার পরে ১৯৭০ সালের ১০ জুলাই যশোর সেক্টরে বদলি হন তিনি।

পরবর্তীতে ল্যান্স নায়েকে পদোন্নতি পান। ১৯৭১ সালের মার্চে গ্রামের বাড়ি নড়াইলের মহিষখোলায় (বর্তমান নূর মোহাম্মদ নগর) ছুটি কাটাতে এসে মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেন নূর মোহাম্মদ। যশোর অঞ্চল নিয়ে গঠিত ৮নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন তিনি। এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৮নম্বর সেক্টর কমান্ডার ছিলেন কর্নেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরী এবং সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মেজর এস এ মঞ্জুর।

নূর মোহাম্মদ যশোরের শার্শা উপজেলার কাশিপুর সীমান্তের বয়রা অঞ্চলে ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদার নের্তৃত্বে পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। দেশ শত্রুমুক্ত করার জন্য সবর্দা প্রাণ-পণ লড়াই করে গেছেন নূর মোহাম্মদ শেখ। ৫ সেপ্টেম্বর পাকবাহিনীর গুলিতে সহযোদ্ধা নান্নু মিয়া গুরুতর আহত হলেও তাকে কাঁধে নিয়েই এলএমজি হাতে শত্রুপক্ষের সাথে যুদ্ধ করেন তিনি (নূর মোহাম্মদ)।

হঠাৎ করে পাকবাহিনীর মর্টারের আঘাতে নূর মোহাম্মদের হাঁটু ভেঙ্গে যায়। তবুও গুলি চালান। শক্রমুক্ত করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যান। অবশেষে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন। নূর মোহাম্মদের ৪৫তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে নূর মোহাম্মদ নগরে তার স্মৃতিস্তম্ভে আজ সকালে পুষ্পমাল্য অর্পণ, কোরআনখানি ও আলোচনা সভা এবং যশোরের শার্শায় বিজিবির পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নড়াইল জেলা প্রশাসক হেলাল মাহমুদ শরীফ। 

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এএম

Wordbridge School
Link copied!