• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বেচাকেনায় তৃপ্ত প্রকাশক-লেখকরা


নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৮, ০২:৩২ পিএম
বেচাকেনায় তৃপ্ত প্রকাশক-লেখকরা

ঢাকা : একুশে গ্রন্থমেলা শেষ হতে আর বাকি চার দিন। এই ক’দিন দর্শনার্থীদের মধ্যে শতভাগ ক্রেতা প্রত্যাশা করছেন প্রকাশকরা। মেলায় আগতদের সবাই বই হাতেই ফিরবেন বলে প্রকাশকদের আশা। এ পর্যন্ত মেলার সার্বিক বেচাকেনায় গড়পড়তা তৃপ্ত প্রকাশক-লেখকরা।

ম্যাসব্যাপী গ্রন্থমেলার শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ছিল ২৪তম দিন। মাসের প্রথমার্ধে ক্রেতার চেয়ে দর্শনার্থীর সংখ্যাই বেশি ছিল। প্রথমার্ধের দুটো শুক্রবার, পহেলা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবস ছাড়া মেলায় লোক সমাগম নিয়ে প্রকাশক-লেখকদের ছিল অসন্তুষ্টি। দ্বিতীয়ার্ধে এসে বেচাকেনা বাড়লেও ঠিক তৃপ্তি নেই প্রকাশকদের মুখে। তবে গত শুক্রবারের উপচেপড়া ভিড় দেখে আশান্বিত হচ্ছেন তারা। আশা করছেন বাকি দিনগুলোতে অমন ভিড় না হলেও বেচাকেনা ভালো হবে।

শনিবার মেলা ঘুরে দেখা গেছে, পাঠকরা স্টলে স্টলে গিয়ে নিজেদের পছন্দসই বই কিনছেন। লেখকরা উপস্থিত আছেন সংশ্লিষ্ট প্রকাশনীর সামনে। পাঠকদের অটোগ্রাফ দিচ্ছেন। ছবি তোলার আবদার মেটাচ্ছেন।

লেখক লুৎফর হাসান জানান, মেলার শুরুতে যে প্রত্যাশা ছিল, সেই প্রত্যাশার সবটুকুই পূরণ হয়েছে তার। তিনি বলেন, ‘প্রতিদিনই মেলায় এসেছি এবার। প্রচুর পাঠকের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছি। তবে প্রকাশকদের বিরুদ্ধে একটা অভিযোগ আছে। তাদের আরেকটু সাহিত্যপ্রেমী হওয়া উচিত। বই সময়মতো পাঠকের হাতে তুলে দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা উচিত।’ মেলায় দেশ পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশিত তার উপন্যাস ‘লাল কাতানের দুঃখ’ পাঠক সাদরে গ্রহণ করেছেন বলে জানান এই লেখক।

‘কালো’র প্রকাশক শাহ মুহাম্মদ মোশাহিদ মেলার সার্বিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও, স্টল বিন্যাস নিয়ে অতৃপ্তির কথা জানান। তিনি বলেন, ‘স্টল বিন্যাস এমনভাবে হওয়া উচিত যাতে সব স্টলেই প্রচুর পাঠক আসে। এখন যেটা হয়েছে তাতে কোথাও প্রচণ্ড ভিড়, কোথাও লোকশূন্যতা। এটা একটু সমন্বয় করতে পারলে গ্রন্থমেলা আরো সফল হয়ে উঠবে।’

শনিবার ছিল এবারের মেলার শেষ ‘শিশুপ্রহর’। সকালে শিশু-কিশোরদের উপস্থিতি থাকলেও সেটা আগের দিনের মতো না। তবে শিশু চত্বরের প্রকাশনীগুলোতে দিনভর ভিড় ছিল।

গুণিজন স্মৃতি পুরস্কার ঘোষণা : ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৮’ উপলক্ষে বাংলা একাডেমি পরিচালিত চারটি গুণিজন স্মৃতি পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। ২০১৭ সালে প্রকাশিত বিষয় ও গুণগত মানসম্পন্ন সর্বাধিক সংখ্যক গ্রন্থ প্রকাশের জন্য ‘প্রথমা প্রকাশন’কে ‘চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার-২০১৮’, ২০১৭ সালে প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে গুণমান ও শৈল্পিক বিচারে সেরা গ্রন্থের জন্য অলকানন্দা প্যাটেল রচিত ‘পৃথিবীর পথে হেঁটে’ গ্রন্থের জন্য ‘বেঙ্গল পাবলিকেশন্স’, সুফি মুস্তাফিজুর রহমান রচিত ‘বাংলাদেশের প্রত্বতাত্ত্বিক উত্তরাধিকার’ গ্রন্থের জন্য ‘জার্নিম্যান বুক্স’, মঈন আহমেদ সম্পাদিত ‘মিনি বিশ্বকোষ পাখি’ গ্রন্থের জন্য ‘সময় প্রকাশন’কে ‘মুনীর চৌধুরী স্মৃতি’ পুরস্কার ২০১৮, ২০১৭ সালে প্রকাশিত শিশুতোষ গ্রন্থের মধ্য থেকে গুণগত মান বিচারে সর্বাধিক গ্রন্থ প্রকাশের জন্য ‘চন্দ্রাবতী একাডেমি’কে ‘রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার-২০১৮’ এবং ২০১৮ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে থেকে নান্দনিক অঙ্গসজ্জায় সেরা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘কথাপ্রকাশ’কে ‘শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার ২০১৮’ প্রদান করা হয়েছে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৮-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে এসব পুরস্কার পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

নতুন বই : বাংলা একাডেমির দেওয়া তথ্যমতে, গতকাল গ্রন্থমেলায় নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে ১৮২টি। এর মধ্যে কবিতা ৫৪, গল্প ৩৬, উপন্যাস ১৮টি ও অন্যান্য বিষয়ক গ্রন্থ ৭৪টি।

আজকের অনুষ্ঠান : রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূল মঞ্চে রয়েছে ‘ভাষাসংগ্রামী নাদিরা বেগম ও ভাষাসংগ্রামী মমতাজ বেগম’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন রামেন্দু মজুমদার ও রফিউর রাব্বি। আলোচনায় অংশ নেবেন শফি আহমেদ এবং মালেকা বেগম। সভাপতিত্ব করবেন সৈয়দ আবুল মকসুদ। সন্ধ্যায় রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!