• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বেনারসি পল্লীতে দম ফেলার ফুরসত নেই তাঁতিদের


পাবনা প্রতিনিধি জুন ২, ২০১৮, ০৪:৪৫ পিএম
বেনারসি পল্লীতে দম ফেলার ফুরসত নেই তাঁতিদের

পাবনা : কয়েকদিন পরেই ঈদ। ঈদ সামনে রেখে ব্যস্ত পাবনার বেনারসি পল্লী। দিনরাত চলছে শাড়ি তৈরির কাজ। দম ফেলার ফুরসত নেই এই পল্লীর তাঁতিদের। দেশ-বিদেশে পাবনার বেনারসি শাড়ির চাহিদাও ব্যাপক। তাই তাদের ব্যস্ততা একটু বেশিই।

জানা যায়, ২০০৪ সালে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার ফতেমোহাম্মদপুর ও লোকোশেড এলাকায় অবস্থিত হয় বেনারসি পল্লী। দুস্থ তাঁতিদের উন্নয়নে সরকারিভাবে বেনারসি পল্লী স্থাপন করা হয়। বর্তমানে এখানে ৯টি কারখানা চালু রয়েছে।

শুক্রবার (১ জুন) সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, শ্রমিকদের ব্যস্ততায় সরগরম হয়ে উঠেছে বেনারসি পল্লী। দম ফেলার ফুরসত নেই তাদের। এ সময় শ্রমিকরা জানান, দিনরাত চলছে শাড়ি তৈরির কাজ। এখানকার তৈরি বেনারসি শাড়ির চাহিদা ব্যাপক। বাহারি কারুকার্য আর ডিজাইনের তৈরি শাড়ি কিনতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকারি ও খুচরা ক্রেতারা আসেন এখানে। পাবনার তৈরি বেনারসি শাড়ির সবচেয়ে বেশি কদর রাজধানীর বিভিন্ন নামি-দামি মার্কেটে বলে জানান তারা।

তারা আরো জানান, অল্প সময়ের মধ্যেই এখানকার উৎপাদিত শাড়ির সুনাম দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। ভারতের কলকাতার ঢাকেশ্বরী বস্ত্রালয় ও বউ বাজারেও রয়েছে পাবনার তৈরি বেনারসি শাড়ির ব্যাপক চাহিদা। তাঁত শ্রমিক মোশারফ হোসেন জানান, একটি বেনারসি শাড়ি তৈরি করতে ৩-৪ দিন সময় লাগে এবং একজন শ্রমিক শাড়ির কাজ করে সপ্তাহে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা আয় করেন। শ্রমিক বাপ্পি খান জানান, ঈদ ঘনিয়ে আসায় তার ব্যস্ততা বেড়েছে। সপ্তাহে ২টির স্থানে তিনি তিনটি শাড়ি তৈরি করছেন। বেশিরভাগ শ্রমিকই বাড়তি আয়ের আশায় রাত-দিন কাজ করছেন।

তিনি জানান, প্রতি সপ্তাহে গড়ে এক হাজার শাড়ি তৈরি হচ্ছে। শ্রমিকরা আরো জানান, পাবনার তৈরি বেনারসি শাড়িই মিরপুরের বলে বিক্রি করে থাকেন ঢাকার বিভিন্ন মার্কেটের শাড়ি ব্যবসায়ীরা। শাড়ি ছাড়াও ফতেমোহাম্মদপুর এলাকায় এখন প্রত্যেকটি বাড়িতেই ধুমছে চলছে কারচুপির কাজ। কারোরই দম ফেলার সময় নেই।  ফতেমোহাম্মদপুর বেনারসি পল্লীর একটি কারখানা মালিক জাবেদ কোরাইশি জানান, কয়েক বছর আগেও ভারত-পাকিস্তান থেকে কাতান-বেনারসি চোরাই পথে বাংলাদেশে আসত। এখন পাবনার তৈরি বেনারসি শাড়ি যাচ্ছে ভারত-পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে।

তিনি আরো জানান, আগের চেয়ে অনেকগুণ বেশি উন্নতমানের শাড়ি তৈরি হচ্ছে পাবনায়। তাই এখন এই শিল্পের ক্রমবিকাশ হচ্ছে। নামি-দামি ব্যান্ডের শাড়ি আমদানি হলেও মানের দিক থেকে পাবনার বেনারসি পল্লীতে উৎপাদিত শাড়ির মান অনেক উন্নত বলেও জানান তিনি।

শ্রমিক আবদুর রহমান জানান, কিছুদিন আগেও বেনারসি শাড়ির ব্যবসায়ীদের হতাশায় দিন কাটত। বর্তমানে দক্ষ কারিগর, ভালো পরিবেশ ও কারখানা মালিকদের ব্যবসায়িক মানসিকতায় কারখানাগুলোয় উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। উৎপাদিত শাড়ির চাহিদাও রয়েছে। ফলে ব্যবসায়ীরা বেশ ভালোভাবেই টিকে রয়েছেন।  

পাবনা বিসিক শিল্প নগরীর ব্যবস্থাপক জেএন পাল জানান, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই বেনারসি পল্লী আধুনিকায়ন এবং তাঁতীদের স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে সরকার কাজ করছে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, পাবনার ফতেমোহাম্মদপুরের বেনারসি পল্লীর উৎপাদিত শাড়ি দেশের চাহিদা মিটিয়ে অন্যান্য দেশেও রফতানি হচ্ছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!