• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে গোয়েন্দা নজরদারির আওতায় আনার উদ্যোগ


নিজস্ব প্রতিবেদক জুলাই ১১, ২০১৬, ০১:০৫ পিএম
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে গোয়েন্দা নজরদারির আওতায় আনার উদ্যোগ

জঙ্গি কার্যক্রম প্রতিরোধে ইতিপূর্বে দেশের মাদ্রাসাগুলোতে নজরদারি চালানো হলেও এখন থেকে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও তার আওতায় আনার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। কারণ সম্প্রতিক সময়ে দেশে সংঘটিত সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদী ঘটনায় জড়িতদের অনেকেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ছিল। ওই কারণেই বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের জঙ্গি বা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। ফলে জঙ্গিবাদের ক্ষেত্রে ওসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতি সরকারের সন্দেহের মাত্রাও বাড়ছে। সে জন্য নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, দারুল ইহসানসহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ও ইংলিশ মিডিয়াম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নজরদারিতে আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

ওইসব প্রতিষ্ঠানের শুধুমাত্র শিক্ষার্থীরাই জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে তা নয়, মোটিভেটেড করার ক্ষেত্রে শিক্ষকরাও জড়িত থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেজন্য তারাও নজরদারির আওতার মধ্যে থাকবেন। তাছাড়া বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিক কে? অর্থের যোগানদাতা কারা? ট্রাস্টিবোর্ড বা মালিকপক্ষে কারা রয়েছেন? প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মকর্তারা কোন আদর্শের? কোথায় লেখাপড়া করেছেন? এ বিষয়েও খোঁজ-খবর নেয়া হবে।

সূত্র জানায়, জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে এদেশের শতাধিক তরুণ পরিবার থেকে নিখোঁজ হয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশই উচ্চবিত্ত এবং দেশের নামিদামি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। ইতিমধ্যে নিখোঁজ তরুণদের বেশ কয়েকজনের পরিবার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে তাদের খুঁজতে সহায়তা চেয়েছে।

নিখোঁজরা হলো- ঢাকার তেজগাঁওয়ের মোহাম্মদ বাসারুজ্জামান, বাড্ডার জুনায়েদ খান (পাসপোর্ট নম্বর- এএফ ৭৪৯৩৩৭৮), চাপাইনবাবগঞ্জের নজিবুল্লাহ আনসারী, ঢাকার আশরাফ মোহাম্মদ ইসলাম (পাসপোর্ট নম্বর-৫২৫৮৪১৬২৫), সিলেটের তামিম আহমেদ চৌধুরী (পাসপোর্ট নম্বর-এল ০৬৩৩৪৭৮), ঢাকার ইব্রাহীম হাসান খান (পাসপোর্ট নম্বর-এএফ ৭৪৯৩৩৭৮), লক্ষ্মীপুরের এ টিএম তাজউদ্দিন (পাসপোর্ট নম্বর- এফ ০৫৮৫৫৬৮), ঢাকার ধানমন্ডির জুবায়েদুর রহিম (পাসপোর্ট নম্বর-ই ১০৪৭৭১৯), সিলেটের মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ ওজাকি (পাসপোর্ট নম্বর-টিকে ৮০৯৯৮৬০) ও জুন্নুন শিকদার (পাসপোর্ট নম্বর-বিই ০৯৪৯১৭২)। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের পরিবারের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। এরা বেশিরভাগই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ইংলিশ মিডিয়াম ও অন্যান্য বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ছিল।

এদিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) বোম্ব ডিস্পোজাল টিম ও ডগ স্কোয়াডের প্রধান অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. ছানোয়ার হোসেন জানান, স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আগে থেকেই তৎপর রয়েছে। ২০০৯ সাল থেকেই ওই ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। তবে গুলশানের ঘটনার পর এই ব্যাপারটি আবার নতুন করে ভাবাচ্ছে। ফলে ওই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সজাগ আছে।

অন্যদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে জড়িতরা প্রায় সবাই প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র। এর আগে কিছু অপরাধীকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যারা প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়েছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে কী করা যায় তা ভাবা হচ্ছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এএম

Wordbridge School
Link copied!