• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বেসামরিক আগ্নেয়াস্ত্র জমা চায় সরকার


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ২০, ২০১৮, ১১:৫১ এএম
বেসামরিক আগ্নেয়াস্ত্র জমা চায় সরকার

ঢাকা : আজ ২০ মার্চ। একাত্তরের অসহযোগ আন্দোলনের ১৯তম দিন। সরকার এদিন বেসামরিক জনগণের কাছে থাকা লাইসেন্স করা সব বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র থানায় জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়।

এর আগে সকালে কঠোর সামরিক প্রহরা পরিবেষ্টিত রমনার প্রেসিডেন্ট ভবনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের মধ্যে চতুর্থ দফা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, কামাল হোসেন, খোন্দকার মোশতাক আহমদ, এএইচএম কামারুজ্জামান ও এম মনসুর আলী।

ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে ছিলেন বিচারপতি এআর কার্নেলিয়াস, প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এসজিএম পীরজাদা ও কর্নেল হাসান। প্রায় সোয়া দুই ঘণ্টা আলোচনা শেষে বঙ্গবন্ধু প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে বের হয়ে এসে দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের বলেন, আলোচনায় কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে। তিনি এর বেশি কিছু বলতে অপারগতা জানিয়ে বলেন, সময় এলে অবশ্যই আমি সবকিছু বলব।

এদিকে মুক্তিপাগল মানুষের দৃপ্ত পদচারণায় এই দিন ঢাকা টালমাটাল হয়ে ওঠে। মিছিলের পর মিছিল এগিয়ে চলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে শপথগ্রহণের শেষে একের পর এক শোভাযাত্রা বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে গিয়ে সমবেত হয়। বঙ্গবন্ধু সমবেত জনতার উদ্দেশে একাধিক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘মুক্তিপাগল সাড়ে সাত কোটি বাঙালির চ‚ড়ান্ত বিজয়কে পৃথিবীর কোনো শক্তিই রুখতে পারবে না। বাংলাদেশের মানুষের সার্বিক মুক্তি অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।’

একই দিন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাবেক নৌসেনাদের এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে তারা বঙ্গবন্ধু ঘোষিত মুক্তি সংগ্রামের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে সহযোগিতা করার জন্য একটি সম্মিলিত মুক্তিবাহিনী কমান্ড গঠনের জন্য সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক বাঙালি সৈনিকদের প্রতি আহ্বান জানান।

অপরদিকে কাউন্সিল মুসলিম লীগপ্রধান মিয়া মমতাজ মোহাম্মদ খান দৌলতানা ও জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মওলানা মুফতি মাহমুদ বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে পৃথক পৃথক বৈঠকে মিলিত হন। রাতে এক বিবৃতিতে বঙ্গবন্ধু বলেন, মুক্তি অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চলবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ বিশ্বদরবারে একটি অনুপ্রেরণাদায়ী দৃষ্টান্ত। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম কৌঁসুলি এ কে ব্রোহি এদিন সকালে করাচি থেকে ঢাকায় আসেন।

পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টো এদিন করাচিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘লন্ডন পরিকল্পনা, যা ১৯৬৯ সালে লন্ডনে বসে শেখ মুজিব, খান আবদুল ওয়ালী খান ও মিয়া মমতাজ মোহম্মদ খান দৌলতানা কর্তৃক প্রণীত, তা মানা হবে না। ওই পরিকল্পনা আওয়ামী লীগপ্রধান কর্তৃক ঘোষিত ৬ দফার ভিত্তিতেই করা হয়েছে।’

আর চট্টগ্রামে এক সংবাদ সম্মেলন ডেকে মওলানা ভাসানী শেখ মুজিবকে প্রধান করে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করার জন্য জেনারেল ইয়াহিয়ার প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঠিক করবে ভবিষ্যতে স্বাধীন বাংলাদেশ পাকিস্তানের সঙ্গে কী ধরনের সম্পর্ক বজায় রাখবে।’

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!