• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বেহাল সিলেট বিএনপির ৬ আসনে নেই নির্ভরযোগ্য নেতা


সিলেট প্রতিনিধি জুলাই ৯, ২০১৭, ০৮:৩১ পিএম
বেহাল সিলেট বিএনপির ৬ আসনে নেই নির্ভরযোগ্য নেতা

সিলেট : সিলেটের ৬টি আসনে বিএনপির করুণ অবস্থা বিরাজ করছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনগুলোতে সংসদ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করার মতো নির্ভরশীল প্রার্থী নেই বলে জানান দলটির তৃণমূল কর্মীরা। গোজামিল দিয়ে প্রার্থী দিলেও নির্বাচনী মাঠে টিকে থাকা অসম্ভব হয়ে উঠবে।  

সিলেট বিএনপির এক প্রবীণ নেতা জানান, সিলেট সদর নিয়ে গঠিত সিলেট-১ আসন। মর্যাদাপূর্ণ এই আসনে প্রতিদ্বন্ধিতা করার মতো বিএনপির কোনো প্রার্থী নেই বললেই চলে। এই আসনে বিএনপির সর্বশেষ এমপি ছিলেন সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম সাইফুর রহমান। এম সাইফুর রহমানের মৃত্যুর পর এই আসনের জন্য শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে সংযুক্ত করা হয় মুক্তিযোদ্ধা শমসের মবিন চৌধুরীকে। কিন্তু ২০১৪ সালের নির্বাচন ও পরবর্তীতে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শমসের মবিন চৌধুরী দল থেকে সরে দাঁড়ান। এরপর থেকে এই আসন থেকে কে নির্বাচন করবেন তা এখনো নির্ধারিত করেনি বিএনপি। তবে বিএনপির কেউ কেউ বলছেন এই আসন থেকে নির্বাচন করবেন সাবেক সাংসদ খন্দকার আব্দুল মালিকের ছেলে খন্দকার আবদুল মুক্তাদির। কিন্তু খন্দকার আবদুল মুক্তাদিরের বিষয়টি বিএনপির সিংহভাগ নেতাকর্মী মেনে নিতে পারছেন না। এই অবস্থায় সিলেট-১ আসন থেকে শনির দশা কাটবে কী না তা এখন দেখার বিষয়।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী ছিলেন সিলেট-২ আসনের এমপি। এম ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হওয়ার পর এই আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হয়ে কে প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন তা প্রায় অনিশ্চিত। এম ইলিয়াস আলীর সহধর্মিনী তাহসিনা রুশদির লুনা এই আসন থেকে দলীয় মনোনয়নে নির্বাচন করবেন এমনটি শোনা গিয়েছিল প্রথমে। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে লুনার নাম অনেকটা ঢাকা পড়ে গেছে। দলীয় নেতাকর্মীরাও এ নিয়ে ক্ষুব্ধ। অনেকেই এখন সুর পাল্টে অন্য কাউকে প্রার্থী করার দাবি তুলেছেন।

সিলেট দক্ষিণ সুরমা ও ফেঞ্জুগঞ্জ উপজেলা নিয়ে সিলেট-৩ আসন গঠিত। এই আসন থেকে বিএনপির এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন শফি আহমদ চৌধুরী। এই আসন থেকে তিনি আবার প্রার্থী হবেন এমনটা জানিয়েছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। কারণ শফি আহমদ চৌধুরী বিএনপির একজন ফাইনান্সার হিসেবে পরিচিত। যদিও এই আসন থেকে মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টা করবেন লন্ডন বিএনপির নেতা ব্যারিস্টার আবদুস সালাম ও কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহ সভাপতি কাইয়ুম চৌধুরী। এ ক্ষেত্রে ব্যারিস্টার আবদুস সালাম অনেকটা এগিয়ে গেছেন।

জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ নিয়ে গঠিত সিলেট-৪ আসন। এই আসন থেকে বিএনপির এমপি ছিলেন দিলদার হোসেন সেলিম। এবার এই আসন নিয়ে দেখা দিয়েছে জটিলতা। বিএনপির দ্বিতীয় হেডকোয়াটার লন্ডন থেকে এই আসনে মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত। এই মনোনয়ন পেতে যাচ্ছেন সিলেট বিএনপির বহুল আলোচিত নেতা এডভোকেট সামসুজ্জামান জামান।

কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ নিয়ে সিলেট-৫ আসন গঠিত। এই আসন থেকে এমপি ছিলেন শরীক দলের জামায়াতের মাওয়লানা ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী। যুদ্ধাপরাধের তালিকায় মাওলানা ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী পরবর্তীতে নির্বাচন করতে পারবে কী না তাতে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এই অবস্থায় এই আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী কে হবে তা পুরোপুরি অনিশ্চিত। গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার নিয়ে সিলেট-৬ আসন গঠিত।

এই আসন থেকে এ পর্যন্ত বিএনপির কোনো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়নি। ড. সৈয়দ মকবুল হোসেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্ধিতা করে বিজয়ী হয়ে পরে বিএনপিতে যোগ দিয়েছিলেন। ট্যাম্পাকো জটিলতায় তিনি আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কীনা তাতে অনিশ্চয়তা রয়েছে। তবে জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের শামীম ও বিএনপি নেতা মাওলানা আবদুর রশিদ এই আসন থেকে প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করছেন।

এ ব্যাপারে সিলেট বিভাগীয় বিএনপির দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হোসেন জীবন বলেন, বিএনপি হলো একটি বৃহৎ দল। দলীয় প্রতীকে যেহেতু নির্বাচন হবে, তাই প্রার্থীর অভাব হবে না। ওয়ার্ড ও উপজেলা পর্যায়ে দলকে সুংগঠিত করার কাজ চলছে। সময় হলেই সব কিছু দেখতে পারবেন ও শুনবেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!