• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা-১ আসন

ব্যবসায়ী ও হেভিওয়েট প্রার্থীদের লড়াই


নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ২৩, ২০১৭, ০৮:৫২ পিএম
ব্যবসায়ী ও হেভিওয়েট প্রার্থীদের লড়াই

ঢাকা: ঢাকা-১ (১৭৪) জাতীয় সংসদের আসনগুলোর মধ্যে নানান কারণেই গুরুত্বপূর্ণ। দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনটি এক সময়ে ছিল বিএনপির দুর্গ হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এখন এ আসনটি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রায় দেড় বছর বাকি থাকলেও অন্যান্য আসনগুলোর মতো এই আসনেও বইছে নির্বাচনী হাওয়া। বিএনপি চায় আসনটি পুনরুদ্ধার। জাতীয় পার্টি চায় ধারাবাহিকতা। আওয়ামী লীগও চায় হাত ছাড়া হওয়া আসনটিকে ফিরে পেতে। প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থীরা সবাই হেভিওয়েট। ঢাকা-১ আসন নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বেশ কৌতূহলী। কে হবেন নৌকার মাঝি।

ঢাকা-১ দোহার-নবাবগঞ্জ আসনে বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম। যমুনা গ্র“পের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাবুলের স্ত্রী তিনি। গত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খানকে পরাজিত করেন সালমা ইসলাম। জানা গেছে, জাতীয় পার্টি থেকে সালমা ইসলাম এবারও মনোনয়ন পাবেন। এ আসনে জাতীয় পার্টির আর কোনো প্রার্থীর প্রচার-প্রচারণা নেই বললেই চলে।

এদিকে, আওয়ামী লীগের হাত ছাড়া হওয়া এই আসনটি উদ্ধার করতে নৌকা পেতে এলাকায় নিয়মিত গণসংযোগ করছেন বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে স্থান পাওয়া সালমান এফ রহমান। তিনি আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা পদে রয়েছেন। ২০০১ সালের নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে হেরে যান। জয়ী হয়েছিলেন তখনকার বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা।

২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী আবদুল মান্নানকে পরাজিত করে জয়ী হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও তৎকালীন দফতর সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খান। ছাত্র ইউনিয়ন ১৬তম কমিটির সভাপতি ছিলেন আবদুল মান্নান খান। বর্তমানে আবদুল মান্নান খান আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। তিনি এবারও নৌকা প্রতীক চান। আবদুল মান্নান খান বর্তমানে এলাকায় ব্যাপকভাবে কাজ করে চলছেন।

এ আসনে নৌকা প্রতীক পেতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমানে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ। তিনি নিয়মিত এলাকায় গণসংযোগ, কর্মিসভা করে চলেছেন। স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ তরুণ ভোটারদের মধ্যে তার ব্যাপক পরিচিত রয়েছে। তিনি আওয়ামী কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক ছিলেন।

এছাড়া ১৯৮৬ ও ১৯৯১ সালে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন বর্তমানে ঢাকা জেলা প্রশাসক ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান। ঢাকা জেলা প্রশাসক হওয়ায় এবার জাতীয় নির্বাচনে তিনি অংশ নেবেন কিনা, তা এখনো সুস্পষ্ট নয়। তবে বর্তমানে সালমান এফ রহমানের বিভিন্ন প্রোগ্রামে তাকে নিয়মিতই দেখা যায়। আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ব্যবসায়ী মো. নূর আলীও রয়েছেন আলোচনায়। ২০০১ সালে তৎকালীন ঢাকা-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন তিনি। বর্তমানে তিনি ঢাকা-১ আসনের ভোটার।

অন্যদিকে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ঢাকা-১ দোহার-নবাবগঞ্জ আসনে পাল্টে যেতে পারে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর তালিকা। বিগত নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থীর যোগ্যতা ও দুর্বলতাকে বিবেচনা করে এ আসনে প্রার্থী বদল হবে বলে জানা গেছে। এছাড়া বিগত নেতার নিষ্ক্রিয়তার কারনে এলাকায় জনপ্রিয় নতুন প্রার্থীকে দেখা যাবে আগামী নির্বাচনে। জানা গেছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে সারাদেশের মতো ঢাকা-১ দোহার-নবাবগঞ্জ আসনে প্রার্থীর পরিবর্তন করবে বিএনপি।

এ প্রসঙ্গে দলীয় একটি সূত্র জানায়, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও নবাবগঞ্জ উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান খন্দকার আবু আশফাক-এর ব্যাপারে এরইমধ্যে পজেটিভ সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাইকমান্ড। সবকিছু ঠিক থাকলে এ আসনে তিনিই বিএনপির একক সম্ভাব্য প্রার্থী।

দলীয় হাইকমান্ডের পজেটিভ ইঙ্গিত বুঝতে পেরে ইতিমধ্যে এলাকাভিত্তিক গণসংযোগ এবং নেতাকর্মীদের নিয়ে কর্মসূচি পালন ও বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মসূচিতে নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন খন্দকার আবু আশফাক। পাশাপাশি দলের নীতিনির্ধারকদের সাথে নানা ইস্যুতে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন তিনি। এছাড়া ব্যবহার করছেন ফেসবুক, টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগের সকল মাধ্যম। আর এসব মাধ্যমে আগামী নির্বাচনে নিজের প্রার্থীতার বিষয়ে প্রচারনাও চালাচ্ছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা বর্তমানে বিএনপিতে নেই, তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে গুলশানে নির্বাচন করবেন বলে জানা গেছে। তাই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১ আসনে খন্দকার আবু আশফাক-ই বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী। পরপর দু’বার বিপুল ভোট পেয়ে নবাবগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেএ

Wordbridge School
Link copied!