• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ব্যস্ত খালেদা, গতি বাড়ছে নেতাদের


এম সুজন আকন, নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ২, ২০১৭, ০৯:২১ পিএম
ব্যস্ত খালেদা, গতি বাড়ছে নেতাদের

ঢাকা: এক দশক ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি ধীরে ধীর গতিশীল হচ্ছে। কঠোর পরিশ্রম শুরু করছেন দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। নেতাদের গতিও ধীরে ধীরে বাড়ছে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভেতরে ভেতরে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে বিএনপিতে। তৃণমূল ও মধ্যম সাড়ির নেতাদের মনোবল চাঙা করতে নীতিনির্ধারকরা নানা কৌশল নিয়েছেন। দফায় দফায় বৈঠক করছেন তারা। পরিশ্রমী ও ত্যাগী নেতাদের কাজে লাগিয়ে দলের সর্বস্তরে আত্মবিশ্বাস ফেরাতে প্রাণপণ চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

চেয়ারপারসনের মামলা মোকাবেলা, আন্দোলনের কৌশল নির্ধারণ, সহায়ক সরকারের প্রস্তাবনাসহ নীতিনির্ধারণী অন্য বিষয়গুলোতে মনোযোগী হয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র নেতারা। তারা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। শুধু তাই নয়, নানামুখী কর্মকাণ্ড হাতে নিয়ে হাইকমান্ড থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ের নেতারা নিজ নিজ অবস্থানে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

ভুল এবং আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের কারণে ব্যাপক জনসমর্থন থাকা সত্ত্বেও মূল স্রোত থেকে ছিটকে পড়া দলটি আবারো জনপ্রিয়তার কষ্টিপাথরে নিজেদের যাচাই করে নিতে চায়। হামলা, মামলা আর নির্যাতনে বিপর্যস্ত দলটি খুব শিগগিরিই ঘুরে দাঁড়াতে চায়।

জনগণকে আস্থায় নিয়ে কার্যকর আন্দোলন ও আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতিতে দলকে চাঙা করতে বিএনপি চেয়ারপারসন কঠোর পরিশ্রম করছেন। বয়সকে চ্যালেঞ্জ করে তিনি নিয়ম করে অফিসে বসছেন। প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। আর এতে দলের অন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের মধ্যে চলে এসেছে কর্মচাঞ্চল্য।

দলীয় সূত্রমতে, নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠনে ১৩ দফা প্রস্তাব দেয়ার পরই কার্যত ব্যস্ততা বাড়ে বিএনপিতে। দলের জাতীয় কাউন্সিলের আগে বা পরে দল গঠনের কাজে ব্যস্ত ছিলেন সকল পর্যায়ের নেতারা। মূলত একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখেই তৈরি হয়েছে ব্যস্ত কর্মসূচি।

তবে চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দুর্নীতি মামলার রায়ে সাজার বিষয়টি সামনে আসায় উত্তেজনা বেড়েছে নেতাদের মধ্যে। তারা কৌশলী হয়ে উঠছেন। যেকোনো ভাবেই দলকে সামনে নির্বাচনে জনপ্রিয়তার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। পেতে হবে ব্যাপক জনসমর্থন। আর এজন্য কঠোর পরিশ্রমী হয়ে উঠেছেন দায়িত্বশীল নেতা থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত।

বিশেষ করে দলীয় প্রধান বেগম খালেদা জিয়া আগের চেয়ে তুমুল ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। প্রতিদিন গড়ে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা অফিস করছেন। সূত্রমতে, চেয়ারপারসন রাতে একটা বা দেড়টা পর্যন্ত অফিস করছেন। প্রতিদিনই কোনো না কোনো নীতিনির্ধারণী কাজের দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। কাজের প্রয়োজনে বিভিন্ন সময় দলের সিনিয়র নেতাদের পরামর্শও নিচ্ছেন।

দায়িত্বশীল নেতারা প্রতিদিনই কোনো না কোনো জেলা কমিটির ‘খসড়া’ চেয়ারপারসনের বরাবর উপস্থাপন করছেন। সেই খসড়ার আলোকে সংশ্লিষ্টদের ডেকে কথা বলছেন দলীয় প্রধান। শুধু মূল দল নয়, জাতীয় কাউন্সিলের পর থেকে দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন পুনর্গঠনেও বিপুল সময় ব্যয় করছেন খালেদা জিয়া এবং দায়িত্বশীল নেতারা। এরই মধ্যে অঙ্গ সংগঠন জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল ও জাসাস-এর আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।

উল্লেখ করা যায়, ইসি পুনর্গঠনের আগে দলটির দেয়া ১৩ দফা প্রস্তাব রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এর আলোকে দু-এক মাসের মধ্যে সহায়ক সরকারের ফরমুলা দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাবে- এমন একটা রূপরেখা প্রণয়নের কাজ চলছে। স্থায়ী কমিটির দুই সদস্য সবার সঙ্গে পরামর্শ করে প্রস্তাবটি তৈরি করছেন। দেশ-বিদেশের নির্বাচন কালীন সরকার পদ্ধতির পর্যালোচনা করে প্রস্তাবটি জাতির সামনে তুলে ধরতে চায় বিএনপি। এ লক্ষ্যে দলটির মহাসচিবসহ উচ্চ পর্যায়ের নেতা ও বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে একান্ত বৈঠকও করেছেন দলীয় প্রধান।

দলের ভাইস-চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে বিএনপি এবং এর প্রতিটি অঙ্গ ও সহযোগী দলের পুনর্গঠন কাজ। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা ব্যস্ত রয়েছেন।

দল গোছাতে মনোযোগী বিএনপি

সোনালীনিউজডটকম/এমএন

Wordbridge School
Link copied!