• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ব্যাংক নিয়ে সংসদে তোপের মুখে মুহিত


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ১১, ২০১৮, ১০:১৮ পিএম
ব্যাংক নিয়ে সংসদে তোপের মুখে মুহিত

ঢাকা : ব্যাংক খাতে অব্যবস্থাপনা ও লুটপাট বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়েছেন সরকারি ও বিরোধী দলের সদস্যরা। অনিয়ম না ঠেকিয়ে উল্টো ব্যাংক মালিকদের সুবিধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।

রোববার (১০ জুন) সকালে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এমপিরা এসব সমালোচনা করেন।  প্রথমে আওয়ামী লীগদলীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক আলী আশরাফ আলোচনা করেন। পরে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ, নুরুল ইসলাম ওমর, পীর ফজলুর রহমান ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজীসহ বেশ কয়েকজন এমপি ব্যাংক খাতের অবস্থাপনায় ক্ষোভ জানিয়ে লুটপাটকারীদের ধরে আর্র্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার দাবি জানান।  

অধ্যাপক আলী আশরাফ বলেন, ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা আনা দরকার। তা না হলে দেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়বে। কিছু মানুষ লুটপাট করবে, এটা হতে পারে না। ঋণ খেলাপি, অর্থ পাচারকারীদের আপনি (অর্থমন্ত্রী) ধরেন।

তিনি আরো বলেন, করের আওতা বাড়াতে প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে কর অফিস করেন। বিমান চলছে না, বিদেশিরা এসে বিমানে উঠলে মনে করে, যেকোনো সময় ভেঙে পড়বে। সব জায়গায় ভয়াবহ বিশৃঙ্খলা চলছে। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে বিমান খাত ভেঙে পড়বে। বিমান ও পর্যটন ব্যবস্থায় ধস নামবে।  

কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, ব্যাংক খাতে যে লুটপাট হয়েছে তা ভারতের সমনাথ মন্দিরের লুটপাটের সঙ্গে তুলনীয়। তখন সমনাথ মন্দির আক্রমণ করে ২০ বিলিয়ন ডলার লুটপাট করা হয়েছিল। আর বাংলাদেশে ব্যাংক লুটপাটের আগ পর্যন্ত এত বড় লুটের ঘটনা আর ঘটেনি। সামনে নির্বাচন, এই ব্যাংক মালিকরা, লুটপাটকারীরা দেশে থাকবে না, তাদের খুঁজেও পাবেন না। তারা বিদেশে পালিয়ে যাবে, এরই মধ্যে ভিসা লাগিয়ে ফেলেছে।

অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে ফিরোজ রশিদ বলেন, ব্যাংকঋণ খেলাপি কারা? এটা কি আপনি জানেন না? কেন তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করছেন না। এরা ২৪ হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে, এই সমস্ত ভুয়া বাজেট দিয়ে কাজ হবে না। এই বাজেটের মধ্যে কিছু নেই। ধনীকে খুশি, গরিবকে নিঃস্ব আর ব্যাংক ডাকাতদের উৎসাহিত করেছেন।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, ব্যাংকে টাকা রাখলে পাচার হয়ে যায়, মানুষ এই আতঙ্কে আছে। ঋণখেলাপিরা টাকা দেশে রাখে না, বিদেশে পাচার করে। এরা ব্যাংকের কিছু আর রাখবে না। যারা ব্যাংকে লুটপাট চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

লুটপাটকারীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করার জন্য কী করা যেতে পারে সেটা অর্থমন্ত্রীকে ভাবতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ নিয়ে এই টাকা আদায়ে কী করা যায় করেন, তাহলে জনগণ আস্থা ফিরে পাবে। প্রশাসনে চলছে অনিয়ম; বেতন বাড়ানো হলো, তারপরেও কর্মকর্তারা ঘুষ খায়। তারা বেতন নিলে ঘুষ বন্ধ করতে হবে আর ঘুষ নিলে বেতন বন্ধ করতে হবে। এক সঙ্গে দুটো চলবে না। কালো টাকা সাদা করার সুযোগ সৃষ্টির দাবি জানিয়ে সংসদ সদস্য সোহরাব উদ্দিন বলেন, এ টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যায়। যদি এটি সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয় তাহলে প্রবৃদ্ধি বাড়বে বলেও জানান তিনি।

সড়কের বেহাল অবস্থার সমালোচনা করে নুরুল ইসলাম ওমর বলেন, সড়কের খারাপ অবস্থার কথা বলার পরে সেতুমন্ত্রী বলেছেন, নতুন কিছু পেতে গেলে তো প্রসব বেদনা সহ্য করতে হবে। আসলে প্রসব বেদনারও তো একটা টাইম লিমিট আছে। এমন বেদনা অব্যাহত থাকলে তো প্রসূতি মারা যাবে। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।  

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!