• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাটিং বিপর্যয়ে সিরিজ হার বাংলাদেশের


ক্রীড়া ডেস্ক ডিসেম্বর ২৯, ২০১৬, ১১:১৮ এএম
ব্যাটিং বিপর্যয়ে সিরিজ হার বাংলাদেশের

সিরিজে টিকে থাকতে বাঁচা-মরার ম্যাচ। একাদশে নেই দলের নিয়মিত কয়েকজন সদস্য। বোলিংয়ের অন্যতম সেরা অস্ত্র মুস্তাফিজুর রহমানও বিশ্রামে। তবুও নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথম জয়ের স্বাদ নিতে মঞ্চ সাজিয়ে দিয়েছিলেন বোলাররা। নেলসনে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বোলিংয়ে নেমে আত্মবিশ্বাসের কোনো ঘাটতি দেখা গেলো না বাংলাদেশের। নিয়ন্ত্রিত বোলিং-ফিল্ডিংয়ে স্বাগতিকদের আড়াইশর ঘরেই আটকে রেখেছে সফরকারীরা। 

সিরিজে টিকে থাকতে রোমাঞ্চ ছড়ানোর সুযোগ ছিল ব্যাটসম্যানদের। কিন্তু যাদের নায়ক হয়ে ওঠার কথা সেই সাকিব-মাহমুদউল্লাহরা উইকেট ছুঁড়ে আসার মিছিলে যোগ দিলে পরাজয়ের বেদনাতেই মাঠ ছাড়তে হলো বাংলাদেশকে। কিউইদের দেওয়া ২৫২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) শুরুতে আশা জাগালেও ৬৭ রানের পরাজয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে টাইগাররা। এতে এক ম্যাচ হাতে রেখেই তিন ওয়ানডের সিরিজ হারল মাশরাফি বিন মুর্তজার দল।

ক্রাইস্টচার্চে ৭৭ রানে হারের পর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ টানা ওয়ানডে হারল ৬৭ রানে। নেলসনে ম্যাচটি জিতে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-০ তে নিশ্চিত করল নিউজিল্যান্ড। ইমরুল কায়েসের হাফসেঞ্চুরি ও সাব্বির রহমানের ব্যাটে ভালো সম্ভাবনাই জাগিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ৭৫ রানের জুটিটি ভাঙতেই বিপদে পড়েছে সফরকারীরা। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ২৫২ রানের লক্ষ্যে নেমে ৭৯ রানের ব্যবধানে শেষ ৯ উইকেট হারিয়েছে তারা। ওভারে ১৮৪ রান তুলতেই সব উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

লক্ষ্যে নেমে দলীয় ৩০ রানে ওপেনার তামিম ইকবাল সাজঘরে ফিরলে ইমরুল ও সাব্বিরের ব্যাটে ঝলক দেখা যায়। দারুণভাবে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন তারা। আর কোনও উইকেট না হারিয়ে দলীয় শতক পার করেন দ্বিতীয় উইকেটের এ জুটি। কিন্তু একটি ভুল বোঝাবুঝিতে সাব্বির ৩৮ রানে আউট হলে ভেঙে পড়ে সফরকারীদের ব্যাটিং লাইন। ক্যারিয়ারের ১৩তম হাফ সেঞ্চুরি করে আশার আলো হয়ে ছিলেন ইমরুল। কিন্তু মাহমুদউল্লাহ, সাকিব আল হাসান ও মোসাদ্দেক হোসেন ব্যাটিং ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে সাজঘরে ফেরেন। মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের কেউ দুই অঙ্কের ঘরে রান করতে পারেননি। বিশেষ করে নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন সুবিধা করতে দেননি। তিনটি উইকেট তুলে নেন তিনি বল হাতে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় ভোরে টসে জিতে বাংলাদেশের অধিনায়ক বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মাশরাফির সিদ্ধান্ত যে সঠিক ছিল সেটা বোঝা গেলো কিছু মুহূর্ত পরেই।

নেলসনে খুব ভালোভাবেই কিউইদের চেপে ধরেছে মাশরাফিরা। শুরু থেকেই বাংলাদেশের বোলাররা নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের ওপর আধিপত্য বিস্তার করতে পেরেছে। মাঝে অবশ্য নাইল ব্রুম চতু্র্থ উইকেটে জেমস নিশামের সঙ্গে ৫১ ও ষষ্ঠ উইকেটে লুক রঞ্চির সঙ্গে ৬৪ রানের জুটি না বাঁধলে অল্প রানে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা ছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত নাইল ব্রুমের সেঞ্চুরিতেই লড়াকু সংগ্রহ দাঁড় করাতে পারে কিউইরা।

ইনিংসের প্রথম ওভারে মাশরাফি কিউই ওপেনার মার্টিন গাপটিলকে ফিরিয়ে শুভ সূচনা করেন। শুরুর বিপর্যয় কাটিয়ে আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান টম ল্যাথাম ও অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন জুটি গড়ার চেষ্টা করেন। তখনই আঘাত হানেন গতি তারকা তাসকিন আহমেদ। উইলিয়ামসকে ব্যক্তিগত ১৪ রানে সাকিবের তালুবন্দী করে সাজঘরের পথ ধরান। সঙ্গী হারিয়ে সাকিবের বলে ফিরে যান ল্যাথামও। তিনি ২২ রান করে সাকিবের ঘূর্ণিতে লেগ বিফরের ফাঁদে পড়েন।

ততক্ষণে অবশ্য ক্রিজে নেমে পড়েন ব্রুম। বৃহস্পতিবার তার ব্যাট না হাসলে বিপদই ছিল কিউইদের। শেষ পর্যন্ত ব্রুম ১০৯ রানে অপরাজিত থাকেন। চতুর্থ ও ষষ্ঠ উইকেটে ৫০ ছাড়ানো দুটি জুটির পাশাপাশি বেশ কিছু ছোটখাটো জুটি গড়েন এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। এটা ব্রুমের ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরি।

কিউই অন্য ব্যাটসম্যানদের মধ্যে লুক রঞ্চি ৩৫, জেমস নিশাম ২৮ ও টম ল্যাথাম ২২ রান করেছেন।

বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। তিনি ৪৯ রান খরচ করে তিনটি উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া তাসকিন আহমেদ ও সাকিব আল হাসান প্রত্যেকে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন। অভিষিক্ত পেসার শুভাষিশ ও স্পিনার মোসাদ্দেক হোসেন একটি করে উইকেট নিয়েছেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: 

নিউ জিল্যান্ড: ৫০ ওভারে ২৫১ (গাপটিল ০, ল্যাথাম ২২, উইলিয়ামসন ১৪, ব্রুম ১০৯*, নিশাম ২৮, মানরো ৩, রনকি ৩৫, স্যান্টনার ৯, সাউদি ২, ফার্গুসন ৪, বোল্ট ১২ ; মাশরাফি ৩/৪৯, শুভাশীষ ১/৪৫, তাসকিন ২/৪৫, সাকিব ২/৪৭, তানবীর ০/৪৭, মোসাদ্দেক ১/১২)।

বাংলাদেশ: ৪২.৪ ওভরে ১৮৪ (তামিম ১৬, ইমরুল ৫৯, সাব্বির ৩৮, মাহমুদউল্লাহ ১, সাকিব ৭, মোসাদ্দেক ৩, তানবীর ২, নুরুল ২৪, মাশরাফি ১৭, তাসকিন ০, শুভাশীষ ১*; বোল্ট ২/২৬, সাউদি ২/৩৩, মানরো ০/১২,, ফার্গুসন ১/৫৩, স্যান্টনার ১/২০, নিশাম ০/১৩, উইলিয়ামসন ৩/২২)।

ফল: নিউ জিল্যান্ড ৬৭ ল্যান্ড ২-০তে এগিয়েরানে জয়ী

সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজ জিতে নেওয়া নিউ জিল্যান্ড ২-০তে এগিয়ে

ম্যান অব দা ম্যাচ: নিল ব্রুম

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!