• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ব্রেক্সিট শুরু: ইইউকে চিঠি দিল ব্রিটেন


আন্তর্জাতিক ডেস্ক মার্চ ২৯, ২০১৭, ১০:১৫ পিএম
ব্রেক্সিট শুরু: ইইউকে চিঠি দিল ব্রিটেন

ঢাকা: জোটের মূল সনদ লিসবন চুক্তির ৫০ ধারা কার্যকর করার জন্য ব্রাসেলসে চিঠি পাঠিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। এই চিঠি দেয়ার মাধ্যমে ব্রেক্সিট বলে পরিচিতি পাওয়া ব্রিটেনের ইইউ ত্যাগের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হল। এখন নির্ধারণ করা হবে, ইইউ ছাড়তে ব্রিটেনের কত বকেয়া দ্রুত পরিশোধ করতে হবে।

ব্রাসেলসে ব্রিটেনের দূত স্যার টিম ব্যারো ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্কের কাছে বুধবার (২৯ মার্চ) এই চিঠি হস্তান্তর করেন। সমকালীন ব্রিটিশ ইতিহাসের এক যুগ-সন্ধিক্ষণ হিসেবে দেখা হচ্ছে দিনটিকে। ব্রেক্সিটের সমর্থক বা বিরোধিতাকারী উভয়পক্ষই এখন স্বীকার করেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এত বড় চ্যালেঞ্জ আর এত বেশি অনিশ্চয়তার মুখে আর পড়েনি ব্রিটেন। 

গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ার পক্ষে রায়টি ভূমিকম্প ঘটিয়ে দিয়েছিল ইউরোপের ভূ-রাজনীতিতে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সংবিধানের ৫০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ব্রাসেলসে চিঠি পাঠিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিচ্ছেদ প্রক্রিয়ারই সূচনা করলেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। যখন ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্কের হাতে তুলে দেয়া হয় তার এই চিঠি, প্রায় একই সময়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে ঘোষণা দেন, এখান থেকে আর পেছন ফেরার কোন সুযোগ নেই।

টেরেসা মে বলেন, ৫০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিচ্ছেদের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং ব্রিটিশ জনগণের ইচ্ছে অনুযায়ী ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য। এখান থেকে আর পেছন ফিরে যাওয়া যাবে না। এটি এক ঐতিহাসিক মূহুর্ত। এখন থেকে আমরা নিজেরাই সব সিদ্ধান্ত নেব, আমরা নিজেরাই আমাদের আইন তৈরি করবো।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেছেন, তিনি আশাবাদী যে-এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তারা ব্রিটেনকে আরো সমৃদ্ধ এবং শক্তিশালী করতে পারবেন বলে আশা করেন। কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা এতে একেবারেই খুশি নন বলে উল্লেখ করেছেন।

টেরেসা মে'র চিঠি পাওয়ার পরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক বলেন, এটি ইউরোপের জন্য এক বিষাদময় দিন। এটা লন্ডন কিংবা ব্রাসেলস কারো জন্যই কোনো সুখের দিন নয়। ইউরোপের সব দেশ, এবং ব্রিটেনেরও প্রায় অর্ধেক জনগণ চেয়েছিলেন, ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়নেই থাকুক। আজকের দিনে আমি সুখী, এমন ভান ধরার কোন চেষ্টাই আমি করবো না।

ব্রেক্সিটের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর এখন আগামী দু’বছর ধরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ব্রিটেনের আলোচনা শুরু হবে। ঠিক কোন প্রক্রিয়ায় আলাদা হওয়ায় যায় এবং অমিমাংসিত বিষয়গুলো কিভাবে সমাধান করা য়ায়, তা নিয়ে আলোচনা হবে এই সময়ে।

এখন ব্রিটেনকে বিচ্ছেদের আলোচনা এবং নতুন একটি বাণিজ্য চুক্তি করতে হবে ইইউর সঙ্গে। কিন্তু এই বিষয় দুটির আলোচনা কি এক সঙ্গে চলবে, না-কি বিচ্ছেদ সম্পন্ন হওয়ার পরই কেবল নতুন চুক্তির জন্য আলোচনা শুরু হবে। তা নিয়ে কোনো সুরাহা হয়নি এখনো।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বড় মতবিরোধ দেখা দিতে পারে, ব্রিটেনকে এখন ঠিক কি পরিমাণ বকেয়া শোধ করতে হবে তা নিয়ে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোন কোন নেতা বলেছেন, এই বিচ্ছেদ বিল হতে পারে ৬০ বিলিয়ন পাউন্ড বা ছয় হাজার কোটি পাউন্ড পর্যন্ত। যদিও ব্রিটেন এতে ঘোরতর আপত্তি জানাচ্ছে।

অন্য যে বিষয়টি নিয়ে সমস্যা হতে পারে তা হলো, ব্রিটেনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের যে নাগরিকরা থাকেন এবং কাজ করেন এবং একইভাবে ইউরোপে যে ব্রিটিশরা থাকেন, কাজ করেন, তাদের কি হবে? আশা করা হচ্ছে, আগামী বছরের অক্টোবর নাগাদ একটা চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছানো যাবে। যাতে করে ২০১৯ সালের মার্চ নাগাদ সেটি ইউরোপীয় পার্লামেন্টে অনুমোদন করা যায়।

গত জুন মাসে এক গণভোটে সিংহভাগ ভোটার ব্রেক্সিটের পক্ষে অর্থাৎ ইইউ জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে মত দেয়। এর পরই দেশটির প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুন পদত্যাগ করেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আতা

Wordbridge School
Link copied!