• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বড় আকারের কাঁটছাট হচ্ছে উন্নয়ন প্রকল্পে


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ৫, ২০১৮, ০৫:৪৯ পিএম
বড় আকারের কাঁটছাট হচ্ছে উন্নয়ন প্রকল্পে

ঢাকা: চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে বরাদ্দ ছিল ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩৩১ কোটি টাকার। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতি আশানুরূপ না হওয়ায় শতকরা হিসাব ঠিক করতে মূল এডিপি থেকে ৪ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা বাদ দেয়া হচ্ছে।

যা মোট এডিপির ৩ শতাংশ। এই পরিমাণ অর্থের উন্নয়ন কাজ হবে না এবার। মূল এডিপি থেকে কাটছাঁট করে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৩৮১ কোটি টাকায় নামিয়ে আনার প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছে পরিকল্পনা কমিশন। যে টাকা কাটছাঁটের প্রস্তাব করা হচ্ছে, তার পুরোটাই প্রকল্প সহায়তা খাতের বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা কমিশনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

প্রস্তাবটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আগামী ৬ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) বা একনেক সভায় উপস্থাপন করা হবে। তাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করবেন।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. জিয়াউল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনের বর্ধিত সভায় সংশোধিত এডিপির একটি প্রস্তাবনা চুড়ান্ত করা হয়েছে। তবে এটা শুধু প্রস্তাব। এবারের সংশোধিত এডিপি বরাদ্দ বাড়ানো হবে, না কি কমানো হবে, তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য এনইসি সভা।

এনইসি সভায় উপস্থাপনের জন্য তৈরি কার্যপত্রে দেখা যায়, সংশোধিত এডিপির প্রস্তাবে স্থানীয় সম্পদের জোগান ধরা হয়েছে মূল এডিপির মতোই ৯৬ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা। আর বৈদেশিক মুদ্রার জোগান ধরা হয়েছে ৫২ হাজার ৫০ কোটি টাকা।

মুল এডিপিতে বৈদেশিক মুদ্রার জোগান ধরা হয়েছিল ৫৭ হাজার কেটি টাকা। অর্থাৎ এখাত থেকে ৪ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা কমতে যাচ্ছে। নির্বাচনী বছরে সংশোধিত এডিপির প্রস্তাবে মোট বরাদ্দের ২৫ শতাংশেরও বেশি সাড়ে ৩৭ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে সড়ক পরিবহন খাত। এই বরাদ্দ মূল এডিপির চেয়ে ৪ হাজার কোটি টাকা কম।

এর পরই রয়েছে বিদ্যুৎ খাত। এখাতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২২ হাজার ৩৪০ কোটি টাকার বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা প্রস্তাবিত এডিপির আকারের ১৫.০৬ শতাংশ। তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৬ হাজার ৭২২ টাকা বা ১১.২৭ শতাংশ বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে পল্লী উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠান খাতে।

প্রস্তাবে বলা হয়েছে, গ্রামীণ অর্থনীতিতে গতিশীলতা ও অধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে এ বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে। ভৌত পরিকল্পনা, পানি সরবরাহ, ও গৃহায়ন খাতের জন্য চতুর্থ সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ১৪৬ কোটি টাকা বা ১০.২৬ শতাংশ বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে। পঞ্চম সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ১৮৬ কোটি টাকা বা ৯. ৫৬ শতাংশ বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে শিক্ষা খাতের জন্য।

এরপর যথাক্রমে বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের জন্য প্রায় ১২ হাজার ৫৯৩ কোটি টাকা বা ৮.৪৯ শতাংশ, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, জনসংখ্যা ও পরিবার কল্যাণ খাতের জন্য ৯ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা বা ৬.৪৭ শতাংশ এবং কৃষি খাতের জন্য ৫ হাজার ২৮৩ কোটি টাকা বা ৩.৫৬ শতাংশ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।

সংশোধিত এডিপিতে মোট প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে ১ হাজার ৫১১টি। এরমধ্যে ১ হাজার ৩৬৫টি বিনিয়োগ, ১৪৩টি কারিগরি এবং জাপানি ঋণ মওকুফ তহবিলের জন্য ৩টি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। সংশোধিত এডিপিতে নতুন অনুমোদিত প্রকল্প হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে ৩১১টি প্রকল্প। এর মধ্যে ২৮৩টি বিনিয়োগ প্রকল্প। ২৮টি কারিগরি সহায়তা প্রকল্প।

চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের এডিপি থেকে বাদ পড়া ১৩ প্রকল্প থেকে ৬টি পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্বে (পিপিপি) বাস্তবায়নের জন্য এবারের মূল এডিপিতে ৩৬টি প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত থাকলেও প্রস্তাবিত সংশোধিত এডিপিতে ৩০টি প্রকল্পের একটি তালিকা সংযোজন করা হয়েছে।

এদিকে, চলতি অর্থবছরের এডিপিতে স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা কর্পোরেশনের জন্য যে ১০ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকার কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছিল, সেখান থেকে এক হাজার ৫৪০ কোটি টাকা কাটছাঁটের প্রস্তাব করা হয়েছে। অর্থাৎ এখাতের সংশোধিত বরাদ্দের ৯ হাজার ২১৩ কোটি টাকা।

সে হিসাবে চলতি অর্থবছরের জন্য স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা কর্পোরেশনসহ সংশোধিত এডিপির প্রস্তাবিত আকার দাঁড়াচ্ছে ১ লাখ ৫৭ হাজার ৫৯৪ কোটি টাকা। মূল এডিপিতে তা ছিল ১ লাখ ৬৪ হাজার ৮৪ কোটি টাকা।

সোনালীনিউজ/আতা

Wordbridge School
Link copied!