• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
নির্বাচনকালীন সরকার

বড় গণতান্ত্রিক দেশই আ. লীগের কাছে অনুসরণীয়


নিজস্ব প্রতিবেদক জুলাই ৩, ২০১৭, ০৪:১২ পিএম
বড় গণতান্ত্রিক দেশই আ. লীগের কাছে অনুসরণীয়

ঢাকা : বিশ্বের উন্নত ও গণতান্ত্রিক বড় রাষ্ট্রগুলোর নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থাকে অনুসরণ করতে চায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার। এই ক্ষেত্রে দলটির পক্ষ থেকে এরই মধ্যে বলা হয়েছে, নির্বাচনকালীন সময়ে দলীয় সরকারই সহায়ক সরকারের ভুমিকা পালন করবে।

নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। আর নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী সব ধরনের সহায়তা দেবে এই সরকার। আর এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ভারতের নির্বাচনকালীন সময়ে সরকারের ভুমিকার বিষয়টিই সামনে আনছে ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতারা।

ক্ষমতাসীন মহাজোট সরকার শুরু থেকেই বলে আসছে, সংবিধান অনুযায়ী দলীয় সরকারের অধীনেই একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই অবস্থানে এখনো অনড় সরকার। তবে সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচন পরিচালনা করতে গিয়ে নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী সব ধরনের সহায়তা দেবে শেখ হাসিনার সরকার।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এখনো দেড় বছর বাকি থাকলেও এই নির্বাচন সময়ে সরকারের ভূমিকা কী হবে তা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর তর্ক-বিতর্ক। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সংসদের বাইরে থাকা দেশের বড় দল বিএনপি তুলে ধরতে শুরু করেছেন তাদের নিজ নিজ অবস্থান।  

তবে দলীয় সরকার নাকি সহায়ক বা অর্ন্তবর্তী সরকার না কি বর্তমান শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে, তা নিয়ে বড় দুই দলের মধ্যে আনুষ্ঠানিক কোন আলোচনা শুরু হয়নি। তারপরেও বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন ক্রমেই উত্তপ্ত হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে আগামী বছরের শুরুতে এ বিষয়ে রাজনৈতিক আরও অঙ্গন উত্তপ্ত হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে। কিন্তু দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ না নেয়ার কথা বলছে বিএনপি। তবে সবশেষ এই সংসদের বাইরে থাকা এই দলটির নেতারা বলেছেন, রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার চায় তারা।  

এদিকে রাজনৈতিক দলগুলো দাবির বিপরীতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমঝোতায় একটি প্রভাবমুক্ত নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পক্ষে বিশেষজ্ঞরা।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন হবে। আর নির্বাচন সময়ে শেখ হাসিনার সরকারই সহায়ক সরকারের ভূমিকা পালন করবে। এটাই আমাদের সংবিধানের নিয়ম।
তিনি বলেন, বিএনপি সহায়ক সরকার নিয়ে যেসব কথা বলছেন তা সংবিধান পরিপন্থি। বিএনপিকে দলীয় অস্তিত্ব রক্ষা করতেই নির্বাচনে আসতে হবে। সহায়ক সরকার বলতে পৃথিবীতে কিছু নেই উল্লেখ করে কাদের বলেন, পৃথিবীর উন্নত বৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোতেও একই পদ্ধতি বহাল রয়েছে।

তিনি বলেন, ওইসব দেশে নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আর সেসময়ে ক্ষমতায় থাকা দলীয় সরকারই নির্বাচনে সহযোগিতা করে। তিনি বলেন, নির্বাচনে অংশ নেয়া খালেদা বা বিএনপির অধিকার। কারও করুণা নয়। তারা নির্বাচনে আসলে হেরে যাবে বলেই নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।

আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের শরীক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপিকে একাদশ সংসদ নির্বাচনে আনার জন্য ছাড় দিতে রাজি নয় আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ নেতারা ভাবছেন, রাজনৈতিক অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনেই নির্বাচনে আসবে বিএনপি। তারা বলেন, সংবিধানের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করার কোন অবকাশ নেই। আর বিএনপি এরইমধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও মনে করছেন তারা।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলীয় জোটের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম এ বিষয়ে বলেন, নির্বাচনের ব্যাপারে আমরা কোনো আবদার শুনব না। সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক্ষেত্রে নির্বাচনে কে এলো কে এলো না এটা কোনো ব্যাপার নয়।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার আগামী নির্বাচনে সহায়ক সরকারের ভূমিকা পালন করবে। বাংলার মাটিতে ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারির আগে যেকোনো দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে এবং নির্বাচন কমিশনারের কর্তৃত্বে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি বলেন, নির্বাচনকালীন সময়ে সমস্ত ক্ষমতা থাকবে নির্বাচন কমিশনের হাতে। তারা জেলা প্রশাসক বদলি করতে পারবেন, তারা ওসি বদলি করতে পারবেন, এসপি বদলি করতে পারবেন, সব ক্ষমতা তাদের থাকবে। সুতরাং এখানে অন্য কারও ক্ষমতা দেখানোর কোনো সুযোগ থাকবে না।

নির্বাচন হবে এবং সে নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু হবে উল্লেখ করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মত বড় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোতে দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন হয়। সেখানেতো কোন ঝামেলা হয় না।

তিনি বলেন, মনমোহন সিংয়ের অধীনে ভারতে, থেরেসা মের অধীনে যুক্তরাজ্যে এবং বারাক ওবামার অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওইসব নির্বাচন নিয়ে কোন কথা ওঠেনি। বরং নির্বাচন সুষ্ঠুই হয়েছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই/জেডআরসি

Wordbridge School
Link copied!