• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
হুমকীতে দেশীয় পণ্য

ভারতীয় কাপড়ে সয়লাব ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঈদের বাজার


আল মামুন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জুন ২১, ২০১৭, ০২:৩৫ পিএম
ভারতীয় কাপড়ে সয়লাব ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঈদের বাজার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া : মুসলমানদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতরের আর মাত্র কয়েকদিন বাকী। আর ঈদে চাই নতুন জামা তাই শেষ মূহুর্তের বেচাকেনায় জমে উঠেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঈদের বাজার।

এবারের ঈদের বাজারে ভারতীয় কাপড়ে সয়লাব। আর এতে করে দেশীয় কাপড় রয়েছে হুমকীতে। পাশাপাশি ভিসা সহজলভ্যতার কারণেও ভারতে গিয়েও ক্রেতারা কেনাকাটা করছে পারছেন। ভাল মানসম্পন্ন ভারতীয় কাপড় আমদানী করা হলেও জেলার ক্রেতারা ঝুকছেন আগরতলায়। জেলার বিভিন্ন বিপণী বিতানগুলোতে গ্রাহকদের উপচেপড়া ভিড় থাকলেও ভারতীয় কাপড়ের দামও বেশী বলে অভিযোগ করছেন ক্রেতারা। তারপরেও ক্রেতাদের চাহিদা ভারতীয় কাপড়েই। তাই দোকানীরাও দেদারসে বিক্রি করছেন ভারতীয় কাপড়। আর এতে দেশীয় কাপড় কেনা বেচা কম হচ্ছে বলে জানান দোকানিরা। দাম নিয়েও রয়েছে ক্রেতা বিক্রেতাদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

এদিকে বিপণী বিতানগুলোতে সার্বিক নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য আইনশৃক্সক্ষলা বাহিনীর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সরেজমিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন বিপনী বিতানগুলো ঘুরে দেখা যায়, ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন বিপণী বিতানগুলোতে বাড়ছে ক্রেতাদের ভিড়। তাই শহরের ছোট বড় সব ধরনের শপিং মল, কাপড়ের দোকান গুলোতে বাহারী  কাপড়ের পসড়া সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। ত্রেতারাও তাদের পছন্দসই কাপড় কিনতে ছুটছেন এক দোকান থেকে আরেক দোকানে। এবারের কাপড়ের বাজারে প্রতিবছরের মত ভারতীয় কাপড়ের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ বেশী। তাই দোকানে সাজানো হয়েছে বাহারী ভারতীয় কাপড়ে। সকল বয়সের মানুষের জন্য এখানের রয়েছে বাহরী কাপড়। মেয়েদের জন্য থ্রী-পিচ, শাড়ী ও থান কাপড় ছেলেদের জন্য রয়েছে শার্ট, পাঞ্জাবী, টি-শার্ট, জিন্স বিক্রি চলছে দেদারসে। তবে ক্রেতারা অভিযোগ করেন গত বছরের তুলনায় এবারের কাপড়ের দাম একটু বেশী।

এদিকে জেলার বিভিন্ন বিপনী বিতান গুলোতে আমদানী করা হয়েছে বিপুল পরিমানে ভারতীয় কাপড়। আর এতে করে দেশীয় পণ্যের প্রতি মানুষের আগ্রহ কমেছে। ভারতীয় বিভিন্ন সিরিয়ালের সাথে মিল রেখে বাংলাদেশের বাজার ধরতে তৈরি করা হচ্ছে নাগিন, বাহুবালী-২ সহ নানান নামের কাপড়। আর এতে করে দেশীয় কাপড়গুলোর দিকে ক্রেতাদের আগ্রহ নষ্ট হচ্ছে। তাই দেশীয় পণ্যের বিক্রি অনেক কম হচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

জেলা শহরের সিটি সেন্টার মার্কেটে কাপড় কিনতে আসা মো. আরমান মিয়া জানান, বাচ্চাদের জন্য কাপড় কিনতে আসলাম। যদিও কাপড়ের দাম গত বছরের তুলনায় একটু বেশী। সবসময়ই দেশী পন্য কেনা হয় তাই ঈদে চাই বিশেষ কিছু। আর এজন্যই আমার মেয়েকে থারতীয় ফ্রক কিনে দিয়েছি।

আরেক ক্রেতা তনিমা ইসলাম জানান, ভারতীয় সিরিয়ালের সাথে মিল রেখে এবারের বাজারে এসেছে নাগিন, বাহুবালী-২ জামা। আর এসব কাপড়ের মূল্য অনেক বেশী। তবে দেশীয় কাপড়ের মধ্যে বিভিন্ন বুটিকও এবার এসেছে। ভারতীয় কাপড় কিনতে হলে প্রায় তিন হাজার টাকা থেকে শুরু করতে হচ্ছে।

ব্যবসায়ী মো. আসিফ ইকবাল জানান, এবার ঈদের পোষাক গুলোর দাম কম থাকায় কেনাবেচা ভালোই হচ্ছে। তবে দেশীয় কাপড়ের বিক্রি কিছুটা কম। এছাড়াও ভারতের ভিসা প্রক্রিয়া সহজ হওয়ায় আগরতলায় ছুটছেন জেলার ক্রেতারা। তাই দেশীয় কাপড় নিয়ে আমাদের সমস্যা হচ্ছে।

আরেক ব্যবসায়ী মো. সোহাগ জানান, ভারতীয় কাপড়ের পাশাপাশি দেশীয় তৈরি সুতি ও বুটিক কাজের মধ্যে কাপড় মোটামুটি চলছে। তবে সেটা ভারতীয় কাপড়ের তুলনায় অনেক কম। ভারতীয় কাপড় এখন একচেটিয়া বাজার ধরে রেখেছে বাংলাদেশে। আর এতে করে দেশীয় পন্য এনে ব্যবসায়ীরা লোকসানের পথে।

এদিকে আসন্ন ঈদ উপলক্ষে ক্রেতা বিক্রেতারা যেন নির্বিঘ্নে পন্য ক্রয় বিক্রয় করতে পারে সেজন্য বিপনী বিতাণগুলোতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জেলার পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান জানান। তিনি আরো জানান জেলার  সবকটি বিপণী বিতানে যেন ক্রেতারা তাদের পছন্দসই কাপড় কেনাকাটা করতে পারে সেজন্য জেলায় তিন স্তরের নিরাপত্তা রাখা হয়েছে।

শহরের ইভটিজিং ও ছিনতাই বন্ধ করতে সাদা পোষাকেও পুলিশ ও ডিবিকে বিভিন্ন বিপণী বিতানগুলোতে রাখা হয়েছে। এছাড়াও যেকোন অভিযোগ দিতে একটি অভিযোগ কেন্দ্রও রাখা হয়েছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!