• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতীয় গরু আমদানি হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে খামারিরা


নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ১০, ২০১৮, ০৮:৪৫ পিএম
ভারতীয় গরু আমদানি হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে খামারিরা

ঢাকা : কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে প্রতি বছরের মতো এবারও গড়ে উঠেছে কয়েক হাজার মৌসুমী পশুর খামার। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে হিসেব মতে এই খামারের সংখ্যা ৩ হাজারে কিছু বেশি। ভারতীয় গরু আমদানি না হলে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের গরুর খামারিরা লাভের মুখ দেখবে।

ওইসব খামারে দেশি, নেপালী, সিন্ধি, শংকর জাতীয় গরুসহ মহিষ ও ছাগল পালন করা হচ্ছে। আর এসব খামারের পশুকে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে দেশীয় খাবার খড়, খৈল, ভুষি, গুড়ের চিটা, লবণ, চাল-ডালের ছোলা-গুড়াসহ চাষ করা লিপিয়ার ঘাস খাওয়ানো হচ্ছে। ব্যবহার হচ্ছে না মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর স্টেরয়েড জাতীয় কোনো ইনজেকশন। ফলে উৎপাদিত হচ্ছে সম্পূর্ণ নিরাপদ মাংস বলে খামারিদের দাবি।

ভারতীয় পশুর আমদানি নাহলে লাভবান হবে বলে আশা করছে এখানকার খামারিরা। তাদের দাবি, ভারতীয় পশু আমদানি বন্ধ রাখার বিষয়ে সরকার যেন বিশেষ নজরদারি রাখেন।

ভৈরব উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের নবীপুর গ্রামের খামারি সোহেল মিয়া জানান, প্রতিবছরই আমরা কোরবানীর ঈদ উপলক্ষে গরু মোটাতাজাকরণ করে বাজারে বিক্রি করি। এই বছর আমার খামারে ১২টি গরু মোটাতাজাকরণ করছি। আশা করছি এই বছর ভারতীয় গরু আমদানি কম হবে। তাহলে আমরা গরু বিক্রি করে লাভবান হতে পারবো।

আগানগর গ্রামের খামারি হেলাল উদ্দিন জানান, প্রতিবারই কোরবানী ঈদের মৌসুমে আমি নাটোর ও যশোর থেকে গরু ক্রয় করে ৩-৪ মাস দেশীয় পদ্ধতিতে গরু লালন পালন করে বাজারে বিক্রি করে থাকি। এ বছর আমি ১০টি গরু মোটাতাজা করেছি। সবকিছু ঠিক থাকলে আল্লাহ রহমতে গরু বিক্রি করে লাভবান হতে পারবো।

উপজেলার নবীপুর গ্রামের আরেক খামারি মো. আতর মিয়া জানান, গত বছর ভারতীয় গরু আমদানি হওয়ার কারণে গরু লালন পালন করে লাভবান হতে পারিনি। কোনো রকম পূঁজি পেয়েছিলাম। এই বছর ১ লাখ ৬০ হাজার করে ৭টি গরু কিনেছি। ৩ মাস লালন পালন করে ঈদ বাজারে বিক্রি করবো। আশা করছি প্রতিটি গরু ২ লাখ টাকা করে বিক্রি করতে পারবো। যদি এর কম দামে বিক্রি করি তাহলে লোকসান হবে। কারণ আমার ৭টি গরু মোটাতাজাকরণে ১ লাখ টাকা খরচ হয়েছে।

আগানগর গ্রামের এবি ফার্মের মালিক পাবেল আহমেদ জানান, অল্প সময়ে গরু মোটাতাজাকরণ ব্যবসা একটি লাভজনক ব্যবসা। প্রতিবছরই আমি গরু ও মহিষ মোটাতাজাকরণ করে থাকি। অল্প সময়ে এ ব্যবসাটি করে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছেন।

ভৈরব উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ কামরুল ইসলাম জানান, উপজেলায় এ বছর তিন হাজার খামারে প্রায় ৯ হাজার গরু মোটাতাজাকরণ করা হচ্ছে। সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণ করা হচ্ছে। মানবদেহে ক্ষতিকর কোনো প্রকার বিদেশি ইনজেকশন ব্যবহার না করেই গরু লালন পালন করছে খামারিরা।

উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা অফিস থেকে খামারিদের প্রাকৃতিক খাদ্য, সামগ্রী, কৃমিনাশক ও ভিটামিন ভ্যাকসিন বিতরণসহ হাতে কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়াও সিজিপি মাধ্যমে সার্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে খামারগুলো। তিনি খামারিদের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে জানান, যদি ভারতীয় পশু প্রবেশ ঠেকানো যায় তাহলে লাভজনক হবেন খামারিরা।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!