• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভাল নেই গ্রেনেড হামলায় নিহতদের পরিবার


মাদারীপুর প্রতিনিধি আগস্ট ২১, ২০১৬, ০৬:২২ পিএম
ভাল নেই গ্রেনেড হামলায় নিহতদের পরিবার

ভাল নেই ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউ-এ শেখ হাসিনার সমাবেশে বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলায় মাদারীপুরের নিহত ও আহত পরিবারের সদস্যরা। 

খোঁজ নিতে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার হোসেনপুর ইউনিয়নের চানপট্টি গ্রামের যুবলীগ নেতা নিহত লিটন মুন্সির বাড়ি গেলে এক হৃদয় বিদারক ঘটনার সৃষ্টি হয়। এ সময় লিটন মুন্সির মা আছিয়া বেগম, বাবা আইয়ুব আলী মুন্সি, বোন ইসমতআরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। 

কান্না জড়িত কন্ঠে মা আছিয়া বেগম বলেন, আমার বাবা (লিটন মুন্সি) বলেছিল, মা তোমার পেটের পাথর অপারেশন করে আনবো। মাত্র ১০ দিন অপেক্ষা করো। ৯ দিনের মাথায় বাবা লাশ হয়ে ফিরেছে। 

লিটনের বাবা আইয়ুব আলী মুন্সী জানান, ‘আমার ছেলের তো কোন দোষ ছিল না। আমার একমাত্র ছেলেকে কবরে শুইয়ে রেখে কিভাবে বেঁচে আছি বলতে পারেন? 

নিহত লিটন মুন্সীর স্ত্রী মাফিয়া আক্তার জানান, আগামী ১ সেপ্টেম্বর মিথিলার বয়স ১৩ বছর পূর্ণ হবে। ২০০৪ সালে মিথিলার প্রথম জন্মদিন উপলক্ষে জামা-কাপড় নিয়ে তার বাবার মাদারীপুর শহরের ফেরার কথা ছিল। মিথিলার জন্মদিনের পোষাক আর তার আনা হয়নি।

শুধু লিটন মুন্সিই নয় ওই দিন মাদারীপুরের আরও তিনজন নিহত হন। এরা হলো- শ্রমিক লীগ নেতা নাসিরউদ্দিন। তার বাড়ি মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার কয়ারিয়া ইউনিয়নের রামপোল গ্রামে। নাছিরউদ্দিন থাকতেন ঢাকার হাজারিবাগে। সেই নাসিরউদ্দিনের বৃদ্ধ মা-বাবা-স্ত্রী-সন্তানদের খবর কেউ রাখেনা।  

গ্রেনেড হামলায় নিহত অপর যুবলীগ নেতা মোস্তাক আহম্মেদ ওরফে কালা সেন্টু। তার বাড়ি কালকিনি উপজেলার ক্রোকিরচর গ্রামে। এছাড়া গ্রেনেড হামলায় অন্যদের মধ্যে নিহত সুফিয়া বেগমের বাড়ি রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ি ইউনিয়নের মহিষমারি গ্রামে। 

অপরদিকে, কালকিনি পৌরসভার বিভাগদী গ্রামের মোহাম্মাদ আলী হাওলাদারের ছেলে হালান হাওলাদারের একটি পা গ্রেনেড হামলায় নষ্ট হয়ে গেছে। আজীবন পঙ্গুত্ব নিয়ে বেচে থাকতে হবে তাকে। 

কালকিনির ঝাউতলা গ্রামের ওয়াহেদ সরদারের ছেলে সাইদুল হক সরদার শরীরে স্পিলিন্টার নিয়ে যন্ত্রণাকর জীবন-যাপন করছে। বর্তমানে চোখে ঝাপসা দেখছে। বাঁচার তাগিদে বিভিন্ন কাজ কর্ম করেও ভালো কিছু করতে না পারায় তিন বছর আগে মালোশিয়ায় যায়। শেষ সম্বল জমিটুকু বিক্রি করে বিদেশ গেলেও শরীরে স্পিলিন্টারের যন্ত্রণা নিয়ে সেখানেও কিছু করতে পারেনি। ফিরে আসতে হয়েছে দেশে। এখন পথে পথে ঘোরা ছাড়া তার আর কিছুই করার নেই।

এছাড়াও গ্রেনেড হামলায় কালকিনির কৃষ্ণনগর গ্রামের কবির হোসেনের ডান হাত বাঁকা হয়ে গেছে। সে ঢাকার এক বস্তিতে থাকে। সেখানে সে দিনমজুরের কাজ করেন। 
আহতরা জানান, আজও সেই দৃশ্য মনে পড়লে শরীর শিউরে উঠে। মাঝরাতে ঘুম ভেঙ্গে যায় সেদিনের সেই চিকিৎসারের শব্দে। 

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!