• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ভালো ফলনেও হতাশ দক্ষিণের আমনচাষীরা


যশোর প্রতিনিধি নভেম্বর ২৯, ২০১৬, ১০:৫৫ পিএম
ভালো ফলনেও হতাশ দক্ষিণের আমনচাষীরা

যশোর : অতিবর্ষণে বৃহত্তর যশোর-কুষ্টিয়ার ৬ জেলায় আমনের ক্ষতির পরও আমনের ভাল ফলন হয়েছে। তবে বাজারে ধানের সরবরাহ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পাইকারি সিন্ডিকেট ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছে। ফলে কৃষকের সোনালী ধানের হাসি বাজারে এসে ম্লান হয়ে যাচ্ছে। ন্যায্য মূল্য পেতে কৃষকরা তাই এখন সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে দাবি জানিয়েছেন।

যশোরস্থ আঞ্চলিক কৃষি অফিস সূত্র জানিয়েছে, যশোর, মাগুরা, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গা এই ছয় জেলায় এ বছর রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ২০ হাজার ৭৫৩ হেক্টর। আবাদ করা হয় ৪ লাখ ৮ হাজার ৪১৫ হেক্টর। আমন রোপনের সময়ই অতিবর্ষণের কারণে ১৯ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমির ধানের চারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অবশিষ্ট জমির ধানে ভাল ফলন হয়েছে। বিঘা প্রতি ১৮ থেকে ২০ মণ ধান হয়েছে। ভাল ফসল উৎপাদনে কৃষক খুশি হলেও দাম নিয়ে বরাবরের মতো তাদের হাসি ম্লান হয়ে যাচ্ছে।

যশোর সদর উপজেলার হাশিমপুরের কৃষক সাইদুর রহমান ও শার্শার পাকশিয়া গ্রামের শরিফুল ইসলাম  জানান, আড়তে ধান যত বেশি আসছে, দাম তত পড়ছে। প্রথমদিকে যে দাম পাওয়া যাচ্ছিল, দিনকে দিন তা কমছে। গত তিন দিনে দাম কমেছে প্রায় একশ টাকা। এভাবে দাম কমতে থাকলে খরচ ওঠানো কঠিন হবে।

মাগুরার শালিখার কৃষক মনিরুল ইসলাম বলেন, তিনি তিন বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করেছেন। যখন ধান উঠেছিল তখন প্রতি মণ ধানের দামি ছিল ৮৫০ টাকা। এখন দাম কমে গেছে। ৮৫০ টাকা দামের সেই ধান এখন ৭৬০/৭৭০ টাকা চাওয়া হচ্ছে।

যশোর সদর উপজেলার খোলাডাঙ্গা এলাকার বরকত আলীও জানালেন বাজারের দাম নিয়ে হতাশার কথা। তিনি বলেন, জমিতে লাঙ্গল দেয়া, আইলবান্ধা, বীজ, সার, সেচ, ধান কাটা, মাড়াই-মজুরি ও যন্ত্রপাতি বাবদ প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে ৯ হাজার টাকার বেশি। তাই খরচ ওঠানো নিয়েই দুশ্চিন্তা তার। কারণ গত দুই দিনে যে হারে দাম কমেছে, আগামীতে আরো কত কমবে তা বলা কঠিন।

যশোরাঞ্চলের সবচে বড় ধানের মোকাম পুলেরহাট। পুলেরহাটের নিপুন এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী মাসুদুর রহমান বলেন, হাটে যোগানের সঙ্গে সঙ্গে দাম বৃদ্ধি বা কমার সম্পর্ক রয়েছে। আমন উঠতে শুরু করার পরপরই দাম সাড়ে আটশ’র কাছাকাছি ছিল। এখন ৭৭০ টাকার মত দাম চলছে। তবে ভালো মানের ধানের দাম একটু বেশিই থাকছে।

এদিকে, এখানে ধান বিক্রি করতে আসা কৃষকরা তাই দাম নিয়ে ব্যক্ত করছেন হতাশা। ধান বেচাকেনার প্রথম পর্যায়েই দাম কমতে থাকায় খরচ ওঠানো নিয়েও শঙ্কা তাদের।

পুলেরহাটে ধান বিক্রি করতে আসা কৃষকরা জানান, ‘গত বছরের থেকে একটু বেশি পেলেও ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না তারা।’ কৃষক বরকত আলী, সিদ্দিক গাজীর মতো আরও অনেকের ধারণা, ন্যায্য মূল্য কৃষকের হাতে তুলে দিতে সরকারি পদক্ষেপ না থাকলে গত বছরের মতো এবারো ধানের দাম পতনের চরম সীমায় পৌঁছাবে। 

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!