• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

ভিমরুলিতে জমে উঠেছে ভাসমান আমন বীজের হাট


মো. আমিনুল ইসলাম, ঝালকাঠি সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৮, ১২:২৭ পিএম
ভিমরুলিতে জমে উঠেছে ভাসমান আমন বীজের হাট

ঝালকাঠি: জেলার ভিমরুলি হাটে প্রতিদিন বসে ভাসমান আমন বীজের হাট। উপকুল জুড়ে আমন বীজের সংকট মোকাবেলায় বিপন্ন কৃষক ছুটছেন ভিমরুলি হাটে এর ওই ভাসমান বীজের হাটে। আমন মৌসুমের বীজ বিক্রয়ের এ হাটে প্রায় ৩/৪ লাখ টাকার আমন চারা বিক্রয় হয়েছে বলে বীজ ব্যবসায়ীরা জানান।
 
ফ্লোটিং মার্কেট বা ভাসমান বাজার। যা দেখতে অনেকেই হয়তো মালদ্বীপ ও থাইল্যান্ডে যান, বিভিন্ন কারণে অনেক আবার সেখানে যেতে না পেরে আফসোসও করেন। তবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলা বরিশাল-পিরোজপুর ও ঝালকাঠির কিছু অংশ নিয়ে বিশাল আকারে বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে ভাসমান বাজারে বাণিজ্য।

সারাবছর ধরেই ওইসব অঞ্চলে মানুষ হাট-বাজারে যেমন যান নৌকায় চরে, তেমনি তাদের উৎপাদিত ফসল ও পণ্য আনা-নেওয়া, ক্রয়-বিক্রয়ও করে থাকেন নৌকায় করে। ফলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এসব ভাসমান বাজার দেশের অর্থনীতিতে বেশ ভালোই অবদান রাখছে।

পাশাপাশি বর্তমানে ভাসমান এ হাটকে ঘিরে পর্যটকদের আনাগোনাও বিগত সময়ের চেয়ে অনেকটাই বেড়েছে। তবে ভাসমান এসব হাট-বাজারে কর্মচাঞ্চল্যতা কিংবা প্রাকৃতিক প্রকৃত সৌন্দর্য অনেকটাই বেড়ে যায় বর্ষার মৌসুমে। যেখানে এসে খালের জলে ডিঙি নৌকায় ঘুরে নিজেকে মুহুর্তেই হারিয়ে ফেলতে পারেন অপরিসীম স্বর্গীয় সৌন্দর্যে।

বরিশাল বিভাগের ঝালকাঠি সদর উপজেলার ভিমরুলিতে, পিরোজপুরের আটঘর-কড়িয়ানা, নাজিরপুরের বৈঠাকাঠা ও বরিশালের বানারীপাড়ার সদর উপজেলা, উজিরপুর উপজেলার হারতা এলাকায় ঘুরলে দেখা যাবে শান্ত জলে মানুষের জীবন-জীবিকায় বৈঠার নৌকার ভূমিকা কতটা প্রবল। আর এসব এলাকায়ই ব্যবসা-বাণিজ্যের বৃহৎ অংশ ঘটে জলে বসে। তাই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বরিশাল, পিরোজপুরে আর ঝালকাঠিতে গড়ে উঠেছে অনেক ভাসমান হাট-বাজার।

ঝালকাঠি জেলার ভিমরুলি হাট মূলত খালের একটি মোহনায় বসে। সারাবছর ধরে প্রতিদিন চলা এ হাট জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বেশি জমজমাট থাকে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলা এ হাটে ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই খালের মধ্যে ডিঙি নৌকা নিয়ে চলাচল করে। একইভাবে পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ উপজেলার আটঘর, কুড়িয়ানা, জিন্দাকাঠি খালে স্বাভাবিক সময়ে সপ্তাহের নির্ধারিত সময়ে (সোম ও শুক্রবার) হাট বসে। তবে এ হাট ভোর হওয়ার আগে শুরু হয়ে সকাল ৯টার মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। ভিমরুলি আর আটঘর, কুড়িয়ানা ও জিন্দাকাঠি খালে পেয়ারার মৌসুম ছাড়াও বছরের অন্য সময়ে উৎপাদিত ফসল, যেমন-শাক-সবজি, লেবু, মরিচ, কচু, ডাব, মিষ্টি কুমড়া, কলা, আমড়া, কড়ল্লাসহ বিভিন্ন ফসল বিক্রি হয়ে থাকে। যে নব পণ্য পাইকারিরা কিনে সড়ক নয়তো নৌপথে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যান।

ঝালকাঠি জেলায় এখন আমন চাষের সৌসুম। কৃষকরা তাই মহা ব্যস্ত। এবারের অতি বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে ঝালকাঠি জেলার অনেক এলাকার আমন বীজতলা ডুবে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে সেসব স্থানে আমন বীজের মারাত্মক সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। এটিকে উপলক্ষ্য করে ঝালকাঠি জেলার ভিমরুলি হাটে জমে উঠেছে আমন বীজ বিক্রয়ের ভাসমান হাট।

এখানে পিরোজপুর, বরগুনা, ঝালকাঠি, মঠভাড়িয়া, বামনা, রামনা,ও পাথরঘাটার  কৃষক ও বীজ ব্যবসায়ীরা এ হাটে বীজ কিনতে আসছেন। পরিবহনে অসুবিধার কারণে নৌকা ও ট্রলারে করে ব্যবসায়ীরা ও কৃষকরা এখানে বীজের হাটে আসেন।

বিজ ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান জানান,  ভাসমান বীজের হাটে  ১পন বা ২০ হালি ( ৮০ ) মুটি আমন চারা ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকা করে বিক্রয় হয়েছে যা গতসপ্তাহে বিক্রয় হয়েছে ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকা দরে। এ বীজ আবার অন্য অঞ্চলে আরো বেশী দামে বিক্রয় করা হবে।

স্থানীয়রা বলেন, নৌ পথে যাতায়াত সুবিধা হওয়াতে এ হাটে বিভিন্ন অঞ্চলের চাষীরা এ ভাসমান হাটে বীজ কিনতে আসেন।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!