• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ভেঙে গেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির স্বপ্ন


রাবি প্রতিনিধি অক্টোবর ২৩, ২০১৭, ১১:১৯ এএম
ভেঙে গেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির স্বপ্ন

রাবি: সকাল ৮টা ৪৫। প্রায় ৮-১০ জন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী প্রাণপনে ছুটছে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকার জন্য। তবে নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের কেন্দ্রে ঢুকতে দিলেও অনুমতি পেল না পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে। ব্যর্থ হলো টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে সৃষ্ট ভোগান্তি ও মহাসড়কে জ্যাম উপেক্ষা করে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার লড়াই। এতে স্বপ্নভঙ্গ হয়ে অনেক শিক্ষার্থী কান্নায় ভেঙে পড়ে।

রবিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ‘ই-১’ রোল নম্বরধারীদের অনেকেই ক্যাম্পাসে আসলেও পরীক্ষা দিতে পারেনি। আবার শেষ মুহূর্তে (অতিরিক্ত ১৫ মিনিট) হলে প্রবেশ করেছেন, এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যাও হাজারের কম নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রবেশপথগুলোতে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশ নিতে প্রাণপনে দৌঁড়াতেও দেখা গেছে অনেককে।

শুধু ‘ই-১’ নয়, বরং ‘ই-২’ ও ‘ই-৩’ রোল নম্বরধারীদেরও অনেকেই পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। অনেকেই শেষ মুহূর্তে কোনোরকম বাস থেকে নেমে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।

শিক্ষার্থীরা জানায়, বৈরি আবহাওয়া, মহাসড়ক সংস্কার ও জ্যামের এ সমস্যায় পড়তে হয়েছে। জানা যায়, গত দুইদিনের বৃষ্টিতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়। এতে দীর্ঘ ৪০ কিলোমিটার সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ওইদিন ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে আসা অনেক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীই যানজটে আটকা পড়েন।

ঢাকা থেকে শনিবার সকাল ৬টায় রওনা দেওয়া স্মৃতি নামের এক ছাত্রী জানায়, ‘আমার পরীক্ষা ছিল রবিবার সাড়ে ১০টায়। শুক্রবার রাতে বাস ছাড়ার কথা ছিল। কিন্তু বাস ছাড়ে শনিবার (২১ অক্টোবর) সকাল ৬টায়। এরপর দীর্ঘ যানজট শেষে ক্যাম্পাসের গেটে বাজে ১০টা ৪০। তারপর দৌঁড়ে হলে পৌঁছাই।’

কিন্তু স্মৃতি পরীক্ষা অংশ নিতে পারলেও ক্যাম্পাসে এসে পরীক্ষা দিতে পারেনি আহসান উল্লাহ। ওই ছাত্র জানায়, ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেটে গাড়ি থেকে নেমে তাড়াহুড়ো করে পরীক্ষা দিতে যাই। পাঁচ মিনিট দেরি হওয়ায় আমাকে পরীক্ষায় বসতে দেয়া হয়নি।’

আবার অনেকেই আছে যারা এখনো ক্যাম্পাসে পৌঁছাতে পারেনি। ভর্তিচ্ছু আব্দুর রহমান জানাল, ‘আমি ঢাকা থেকে রাত ১০টায় বাসে উঠি। পরদিন দুপুর পর্যন্ত ক্যাম্পাসে পৌঁছাতে পারিনি। এর মধ্যে সকালের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিকেলের পরীক্ষায় অংশ নিতে পারব কিনা জানি না।’ ওই বাসে এ রকম আরও ২০-২৫ জন আছে বলেও জানায় সে।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় ৯০ শতাংশ ভর্তিচ্ছু পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে বলে দাবি করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা বলেন, ‘আমরা কেন্দ্র ঘুরে দেখেছি, পরীক্ষায় উপস্থিতি ভালো ছিল। প্রায় ৯০ শতাংশ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছে।’

এদিকে, ক্ষোভ ও হতাশা ব্যক্ত করছেন অভিভাবকরাও। তারা বলছেন, ‘সন্তানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ানোর স্বপ্ন তো সবারই থাকে। দীর্ঘদিনের স্বপ্ন যানজটের কারণে শেষ হয়ে গেল।’ এর জন্য তারা সড়কগুলোর সঠিক সংস্কার না হওয়াকে দায়ী করছেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘পরীক্ষা যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে অনুপস্থিতির সংখ্যা ছিল খুব অল্প। বেশি হলে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিতাম।’

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!