• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর আশাবাদ

ভোটে আসবে সব দলই


বিশেষ প্রতিবেদক অক্টোবর ৪, ২০১৮, ০৭:৪৩ পিএম
ভোটে আসবে সব দলই

ঢাকা : আগামী জাতীয় নির্বাচনে সব দল অংশ নেবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে ২০১৪ সালের মতো কেউ বর্জন করলে সরকারের কিছু করার নেই, সেটিও জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগদান শেষে বুধবার (৩ অক্টোবর) বিকালে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আশা প্রকাশ করেন।

চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, ‘আপনি নিজেও চান সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনটা হোক, কিন্তু আপনি কতটা আশাবাদী?’

জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা এটা মনে করি। হ্যাঁ, এবার সব দলই আসবে। এটা আমরা আশা করি। তবে যদি কেউ না আসে, সেটা তাদের দলীয় সিদ্ধান্ত। সেখানে আমাদের কোনো কিছু একটা করণীয় নেই।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচন চায় এবং তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। এখানে এত দল, সেখানে কোন দল আসবে আর কোন দল আসবে না, সেটা তাদের দলীয় সিদ্ধান্ত। তাদের সিদ্ধান্ত তো আর আমি নিতে পারি না। এটা তাদের নিতে হবে।’

আদালতের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের কারণে ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি। এবারও তারা নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবি জানিয়ে যাচ্ছে। আর না হলে ভোটে আসবে না-এমনটাই বলছে।

ওই নির্বাচনে বিএনপিকে আনতে প্রধানমন্ত্রী নানা উদ্যোগ দিয়েছিলেন। তবে এবার তিনি কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন না, সেটি আগেও জানিয়েছেন, গতকাল সংবাদ সম্মেলনেও  জানালেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৮ এর নির্বাচনের পর ২০১৪ এর নির্বাচনের পূর্বে তখন আমার একটা চেষ্টা ছিল যে, তখনকার যারা প্রধান বিরোধীদল ছিল বা অন্যান্য বিরোধী দল, আমি তাদের একটা আস্থার জায়গা সৃষ্টি করার জন্য আহ্বান করেছিলাম, যে আসুন সকলে মিলে একটা সরকার গঠন করে নির্বাচন করি। তখন বিরোধী দল বলতে পার্লামেন্টে যারা ছিল, তারা কিন্তু সাড়া দেয়নি। অন্যান্য যেসব দল সাড়া দিয়েছিল, আমরা তাদেরকে নিয়েই একটা নির্বাচন করি। সেই নির্বাচন ঠেকানোর নামে পুড়িয়ে পুড়িয়ে মানুষ মারা।’

মানুষ পোড়ানো খেলোয়াড়দের জন্য এত মায়াকান্না কেন : সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা চিন্তা করে দেখুন, আপনারা কাদের জন্য এত উদ্বেগ প্রকাশ করছেন? মানুষকে যারা মানুষ হিসেবে গণ্য করে না। মানুষকে যারা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করতে পারে, যারা মানুষের ওপর এত জুলুম করতে পারে, তাদের জন্য এত কান্নাকাটি, এত মায়াকান্না কেন, আমি বুঝতে পারি না। এটা তো দেশবাসীকে বুঝতে হবে। কয়েক হাজার মানুষকে তারা পুড়িয়েছে। আপনারা তো সাংবাদিক। আপনারা কি খোঁজ নিয়েছেন, যারা মারা গেছে, তারা তো মারা গেছে, কিন্তু যারা পুড়ে এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে, তারা পুড়ে এখন কী অবস্থায় আছে?’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৪ সালে বিএনপির আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত অনেকে আমার কাছে আসে। আমি তাদের সাহায্য করি। যাদের কারণে মানুষের এই অবস্থা, তাদের জন্য মায়াকান্নার দরকার আছে বলে আমি মনে করি না।’

তিনি বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে আরও নানা অভিযোগ আছে, মামলা আছে। ওই সব অভিযোগ-মামলার সাক্ষীও আছে অনেক। খালেদা জিয়া, তার ছেলে, তার দলের অনেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে। মানুষ নৌকায় ভোট দেবে। কারণ, একমাত্র নৌকা ক্ষমতায় থাকলে উন্নয়ন হয়।’

‘মিথ্যা তথ্য’ না দিলে সাংবাদিকদের উদ্বেগের কিছু নেই : ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই বলে আশ্বস্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, যেসব সাংবাদিক মিথ্যে কথা লেখেন না, তাদের উদ্বেগের কিছু নেই। তিনি মিথ্যে সংবাদ পরিবেশন করার জন্য সম্প্রতি পাশ হওয়া এই আইনে শাস্তির ব্যবস্থা রাখার পক্ষে মত দেন।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উদ্বিগ্ন তারা বেশি হবে, যারা আমাদের বিরুদ্ধে একটার পর একটা লেখা তৈরি করে আছে। কখন ছাড়বে সেটার অপেক্ষায় আছে তারা।’

তিনি বলেন, কারো বিরুদ্ধে কোনো তথ্য কিংবা সংবাদ প্রকাশ করলে তা প্রমাণ করতে হবে। প্রমাণ করতে না পারলে সেই সাংবাদিক কিংবা সংশ্লিষ্টদের শাস্তি পেতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ওয়ান-ইলেভেনের সময় আমার বিরুদ্ধে কতো মিথ্যা খবর লেখা হল। পদ্মাসেতু নিয়ে এতো মিথ্যা নিউজ হল। যার বিরুদ্ধে লেখা হল, সেটা যদি পরে মিথ্যা হয়, তখন যার বিরুদ্ধে লেখা হল, তার তো যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে যায়, কিন্তু যারা লেখে তারা তো বহাল তবিয়তে থেকে যায়।’

নতুন আইনের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধিতে বিভিন্ন অপরাধের বিচারের বিষয়ে বলা ছিল, সেগুলোর সঙ্গে  ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে অপরাধের বিষয়গুলো যুক্ত করা হয়েছে নতুন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে।

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন দেশের আইনও আমরা দেখেছি। অনলাইনে ছিল। অনেক আলোচনাও হয়েছে। এরপর এসে হঠাৎ উদ্বিগ্ন হয়ে গেলেন, কিসের জন্য?’

সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গে সম্পাদক পরিষদের বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা আলোচনায় গিয়েছে, আমি দেখেছি। যারা একটার পর একটা লেখা তৈরি করে আছে, কখন ছাড়বে আমার বিরুদ্ধে।’

জনগণ ভোট দিলে আছি, না দিলে নাই : দেশের রাজনীতি নিয়ে বিশ্ব নেতারা কোনও পরামর্শ দেননি বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের ব্যাপারে এমন কোনও পরামর্শ আমাকে কেউ দেয়নি।’ এ সময় সাংবাদিকরা হাততালি দিলে তিনি বলেন, ‘তালি বাজানোর কিছু নেই। জনগণ ভোট দিলে আছি, না দিলে নাই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘ অধিবেশনে গিয়ে যার সঙ্গেই কথা বলেছি, তারা বলেছেন, তারা চান আগামীতেও যেন আমাদের সঙ্গে দেখা হয়। কিন্তু আমাদের দেশের নির্বাচন নিয়ে কী হবে না হবে, তা নিয়ে কোনও কথা হয়নি। তবে যাদের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন, আমি যেন পুনরায় ক্ষমতায় আসি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি বলেছি, আমাদের দেশে আগে কী হতো, মিলিটারি ডিক্টেটর থাকতে, নির্বাচন বলতে কী হতো? স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ছবিসহ ভোটার তালিকা, নির্বাচনি পরিবেশের যতটুকু উন্নয়ন হয়েছে, সেটা আমরাই করেছি।আমাদের সরকারের আমলে ছয় হাজারের ওপরে নির্বাচন হয়েছে, কয়টা নির্বাচনে আমরা হস্তক্ষেপ করেছি? বরিশাল সিটি নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশন তদন্ত শুরু করেছে। তারা তদন্ত করে রিপোর্ট দিয়েছে। আমরা তো সেখানে হস্তক্ষেপ করিনি।’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘সিলেটে আমরা হেরে গেছি। সামান্য ভোটে। বিএনপি থাকলে তো সিল মেরেই নিয়ে নিতো। আমরা তো সে পথে যাইনি। কাজেই, আমাদের ওপর মানুষের আস্থা-বিশ্বাস সৃষ্টি হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, আমরা দেশের উন্নয় করি মনের টানে, নিজেদের স্বার্থে রাজনীতি করি না।’

সবাই শান্তিতে আছে : শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে দশ বছর ক্ষমতায় আছি। সবাই শান্তিতে আছে। এটাই তো সব না। যারা ষড়যন্ত্র বা অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীদের দ্বারা উপকৃত, তাদের তো একটা আকাক্সক্ষা থেকেই যায়। তাদের সেই আকাক্সক্ষা পূরণ করতে গিয়েই তো দেশকে বারবার বিপদে পড়তে হয়।’

তিনি  আরও বলেন, ‘৪১ সালের মধ্যে আমরা বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ করবো। ২১০০ সালের ডেল্টা প্ল্যান অনুযায়ী।’

‘আপনি মাত্র এসেই আপনার দলের কর্মীদের বলেছেন, দেশে এখনও ষড়যন্ত্র চলছে।’ আপনি কী ধরনের ষড়যন্ত্রের অনুমান করছেন?’- বিএফইউজে’র মহাসচিব শাবান মাহমুদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ষড়য্ন্ত্র তো একটা থাকবেই। তবে এটা নিয়ে পরোয়া করি না। খালি আমার নেতাকর্মীদের একটু সতর্ক করতে চাই। তারা ভাবছেন, দশ বছর ক্ষমতায় ছিলাম। অনেক ভালো কাজ করেছি। আবারও ক্ষমতায় আসবো। কিন্তু বাংলাদেশ তো সেরকম দেশ না।’

সাম্প্রদায়িক আচরণকারীরা বিকৃতমনা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। আমরাও অসাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করি। যারা এ ধরনের (অন্য ধর্মের মানুষকে) কাজ করে, এরা আসলে বিকৃতমনা। এদের কোনও নীতি নাই। এটা ঠেকাতে সমাজকেই আরও সচেতন হতে হবে। সাংবাদিকদেরকেই ভ‚মিকা রাখতে হবে।’

বিডি নিউজের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদীর ‘সমাজের রেডিকালাইজেশন ঠেকাতে দীর্ঘমেয়াদি কোনও পরিল্পনা আছে কিনা’ প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তৌফিক ইমরোজ খালিদী প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, বাংলাদেশের ক্রিকেটার লিটন দাস সবাইকে পূজার শুভেচ্ছা জানিয়ে দেবীর ছবি দিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিল। তীব্র সমালোচনা এবং অশ্লীল গালিগালাজের মুখে ছেলেটি সেটি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এসব মোকাবিলায় আপনি কী পরামর্শ দেবেন। তখন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এগুলো মোকাবিলার জন্যই তো আমরা সাইবার সিকিউরিটি আইনটি পাস করেছি। এটা আপনাদের জানা দরকার। যে এই সমস্ত নোংরামি যেন না হয়, সেটা মাথায় রেখেই সাইবার সিকিউরিটি আইনটি করা হয়েছে। প্রত্যেকটা দেশেই এটা একটা বিরাট সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। অনেক জায়গায় সামাজিক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।

পারিবারিক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। নানা ধরনের ক্রাইম বা জঙ্গিবাদ এবং পর্ন নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। সেজন্য সবাই প্রচণ্ড উদ্বিগ্ন।আমি তখন জাতিসংঘের অধিবেশনে ব্যস্ত ছিলাম। আমি ফেসবুক ব্যবহার করি না।

কিন্তু, তখন এ কথা শুনেছি। মাঝে মাঝে আমাকে ফেসবুকে এসব চলছে তা দেখানো হয়েছে। আমি দেখেছি। দেখে ব্যথিত হয়েছি। সেই ছেলেটা (লিটন দাস) চমৎকার খেলেছে। তারপরও কেন ছেলেটাকে গালি দেওয়া হলো।’

নতুন জোট হচ্ছে এতে আমি খুশি : জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার জোট প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নতুন জোট হচ্ছে এতে আমি খুশি। এমনকি তাদের কোনো সহযোগিতা লাগলে সেটাও আমি করতে চাই।

কওমি মাদরাসার ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যৎ ঠিকানা করে দিয়েছি : কওমি শিক্ষার স্বীকৃতি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কওমি মাদরাসার ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যৎ ছিল না। তারা কি করতো কোথায় যেত কোন ঠিকানা ছিল না। আমি তাদের জন্য ভবিষ্যৎ ঠিকানা করে দিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমার কোন শত্রু ছিল না। তবে হ্যাঁ ওই হেফাজতের ঘটনার রাতের আগে খালেদা জিয়া সবাইকে আহ্বান জানালো আপনারা সবাই ঢাকা চলে আসেন। আমার মতো চেষ্টা করেছি পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য। ওই রকম পরিস্থিতি যেন বাংলাদেশে না ঘটে। খালেদা জিয়া তাকে ওপেন সমর্থন দিয়েছিলেন, জামায়াত আল্লামা শফিকে সমর্থন দিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, ওই রাতে মতিঝিল শাপলা চত্বরসহ মানুষ যে টেনশনে ছিল তাদেরকে তো টেনশনমুক্ত করেছি। এজন্য আমিতো ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। সে সময় অনেকে বলেছে আমি তো ধর্মেই বিশ্বাস করি না। এ রকম একটা ভাবনা অনেকের মধ্যে ছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাদরাসা শিক্ষার ব্যাপারে বলবো যে, ওখানে লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে পড়াশোনা করে। তাদের কোন স্বীকৃতি ছিল না। তারা নিজেরা নিজেদের মতো করে জীবন যাপন করতো।

তিনি বলেন, আপনারা যদি লক্ষ্য করেন তাহলে দেখবেন, এই অঞ্চলে উপমহাদেশে শিক্ষার যাত্রা শুরু হয় মাদরাসা দিয়ে। হিন্দু ধর্মদের জন্য টং থেকে। কাজেই এটাকে একবারে বাদ দেয়া যাবে না। কারণ ১৪ থেকে ১৫ লাখ ছেলে-মেয়ে লেখাপড়া শিখছে। তাদের জন্য ভবিষ্যৎ ঠিকানা করে দিয়েছি।

আমি ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে : আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহার চান বলে মত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

‘আপনি ইভিএম ব্যবহার কতটুকু সমর্থন করেন’-এ প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ। আপনি সবচেয়ে প্রিয় জিনিস– টাকা মোবাইল ফোনে পাঠাতে পারেন। ভোটটাও আপনার প্রিয় জিনিস, তো ভোটটাও কেন আপনি ইভিএমে দিতে পারবেন না? আমি ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বরং এমন একটি প্রযুক্তি তৈরি করা উচিত, যেন মোবাইল থেকেও মানুষ ভোট দিতে পারে। তাহলে আর ভোটকেন্দ্রে যাওয়া লাগবে না। ইভিএমটা হোক।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা একনেকে (জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ) প্রজেক্ট পাশ করে দিয়েছি। যেহেতু আমরা পাশ করে দিয়েছি, তাহলে বুঝতেই পারেন, আমাদের মানসিকতা কী। জনগণের প্রতি আমাদের আস্থা আছে, বিশ্বাস আছে। জনগণ আমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। তাদের ভোটের অধিকার সুরক্ষিত করা আমাদের দায়িত্ব। আর সেটা মনে করেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ইভিএম ব্যবহারে আমার কোনও আপত্তি নেই।’

তিনি বলেন, ‘ইভিএমে ভোট হলে বেশি সুবিধা। মানুষ সহজে ভোট দিতে পারবে। সঙ্গে সঙ্গে আবার তা গুণে রেজাল্ট পাওয়া যাবে।’

তিনি বলেন, ‘আগে সিল মেরে বাক্স ভরা যেতো। ভোটের বাক্স নিয়ে গেলো একটা গুণ্ডা, ২০টা গুণ্ডা নির্বাচন প্রভাবিত করলো। ইভিএম হলে সেই জায়গা থেকে মুক্তি মিলবে।’

উল্লেখ্য, শেখ হাসিনা গত ২৭ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে ভাষণ দেন এবং জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠক করেন।

প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের পাশাপাশি নেদারল্যান্ডসের রানি ম্যাক্সিমা, এস্তোনিয়ার প্রেসিডেন্ট ক্রেস্টি কালজুলেইদ এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেইওর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেয়া সংবর্ধনা সভায়ও যোগ দেন।

প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকট, সাইবার নিরাপত্তা, শান্তিরক্ষা কার্যক্রম, নারীর ক্ষমতায়ন, নারী শিক্ষা এবং বৈশ্বিক মাদকদ্রব্য সমস্যা নিয়ে কয়েকটি উচ্চপর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা ইন্টার প্রেস সার্ভিস (আইপিএস) প্রদত্ত সম্মানজনক ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণ করেন। মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা নাগরিককে আশ্রয়দানের মাধ্যমে মানবিকতার উদাহরণ সৃষ্টি করায় তাকে এই পদকে ভূষিত করা হয়।

পাশাপাশি দূরদৃষ্টির মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলার জন্য গ্লোবাল হোপ কোয়ালিশন-এর পরিচালনা পর্ষদ তাকে ‘২০১৮ স্পেশাল রিকগনাইজেশন ফর আউটস্ট্যান্ডিং লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’-এ ভূষিত করে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!