• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ভোটের মাঠে নেমে পড়েছেন আ.লীগ-বিএনপির প্রার্থীরা


ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি আগস্ট ৪, ২০১৭, ১১:২১ এএম
ভোটের মাঠে নেমে পড়েছেন আ.লীগ-বিএনপির প্রার্থীরা

ময়মনসিংহ : আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ময়মনসিংহ-১১ তথা ভালুকায় দলীয় মনোনয়ন পেতে দু’দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে। ইতোমধ্যে বড় দুই রাজনৈতিক দল মনোনয়নের ব্যাপারে তৃণমূলের অবস্থানকে প্রাধান্য দিচ্ছে। এলাকায় যাদের অবস্থান ভালো সাংগঠনিক হিসেবে দক্ষ, শিক্ষিত, সৎ ও নিষ্ঠাবান গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, তারাই এবার মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে থাকবেন।

অপরদিকে, জনগণ থেকে জনবিচ্ছিন্ন প্রার্থীরা ছিটকে পড়বেন। দলের এমন সিদ্ধান্তে দলীয় মনোনয়ন পেতে এই আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক প্রার্থীরা এলাকায় সক্রিয় হতে শুরু করেছেন। তাদের নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন, দু’দল থেকে কারা পাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন। এ আলোচনা এখন ভালুকাবাসীর মুখে মুখে।

এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন- চার বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. এম আমানউল্লাহ, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ ধনু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়াম্যান গোলাম মোস্তফা, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. মহিউদ্দিন, সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবি ও কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সহ-সভাপতি আশরাফুল হক জর্জ, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান বিপ্লব, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক ছাত্রনেতা রফিকুল ইসলাম পিন্টু, সাবেক এমপি ও ভাষা সৈনিক মোস্তফা এম এ মতিনের মেয়ে উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মনিরা সুলতানা মনি। এরইমধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে এলাকায় কাজ করে যাচ্ছে।

তবে এবার আওয়ামী লীগ থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় যোগ হয়েছে নতুন দুই মুখ। তারা হলেন- বিশিষ্ট শিল্পপতি এমএ ওয়াহেদ, আরেক জন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কেবিএম আসমতের সুযোগ্য সন্তান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. কেবিএম হাদিউজ্জামান সেলিম। ইতিমধ্যে দু’জনই এলাকায় ব্যানার ফেস্টুন ও বিভিন্ন জনস্বার্থমূলক কাজ করে আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি জানান দিচ্ছেন।

খোজ নিয়ে জানা যায়, এ আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দৌড়ে এবারও এগিয়ে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ক্লিন ইমেজ হিসাবে পরিচিত বর্তমান সাংসদ অধ্যাপক এম আমান উল্লাহ। তবে গত নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে মনোনয়ন প্রতিযোগিতায় কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ ধনু অনেকটা এগিয়ে ছিলেন। আসন্ন নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে এবারও ধনু যথেষ্ট আশাবাদী। তবে তৃণমূলের অধিকাংশরাই মনে করেন মনোনয়ন পরিবর্তন হলে এই আসনে কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ ধনু ও আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফার মধ্যে লড়াইটা বেশ জমে উঠবে।

ইতিমধ্যে গোলাম মোস্তফা এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও জনসচেতনতা মূলক কাজ করে জনগনের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। আর তৃণমূল পর্যায়ে সাধারণ প্রার্থী ও ভোটাদের সাথে প্রতিনিয়ত কুশল বিনিময় ও উঠান বৈঠক করে যাচ্ছেন ইঞ্জিনিয়ার মো. মহিউদ্দিন। তিনি ২০০১ সালে দলের টিকেট না পেয়ে এ আসনে স্বতন্ত্র নির্বাচন করে পরাজিত হন। আগামী সংসদ নির্বাচনেও তিনি দলের মনোনয়ন পাওয়ার আশাবাদী।

এ ব্যাপারে  উপজেলা আ.লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি এডভোকেট শওকত আলী বলেন, দলের জন্য ত্যাগী পরিশ্রমী সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে এমন প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়া উচিৎ। তবে এবার এ আসনে মনোনয়ন পরিবর্তনের লক্ষ্যে একটি বৃহৎ অংশ সংঘবদ্ধ হয়ে তৎপরাতা চালিয়ে যাচ্ছে।

অপরদিকে আসনটিতে বিএনপির দলীয় কোন্দল চরমে। দলটি এখন দু’টি গ্রুপে বিভক্ত। একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভালুকা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফখরউদ্দিন আহম্মেদ বাচ্চু। অপর গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন- বিশিষ্ট শিল্পপতি দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মোর্শেদ আলম। তাদের মধ্যে- বাচ্চু ২০০৮ সালের নির্বাচনে আ.লীগের শক্তিশালী প্রার্থী অধ্যাপক ডা. এম আমান উল্লাহর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পরাজিত হন। তবে এবারও তৃণমূলে বিএনপির সাধারণ কর্মীদের মুখে ফখরউদ্দিন আহম্মেদ বাচ্চুর নাম-ই বেশি শোনা যাচ্ছে।

নাম প্রকাশ না কারার শর্তে কয়েকজন স্থানীয় বিএনপি নেতা জানান, গ্রুপিং নয় ফখরউদ্দিন বাচ্চু দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে সাংগঠনিক ভাবে সু-সংগঠিত করেছে। দলের ক্রান্তি লগ্নে তিনি নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। বিপদে যাকে কাছে পাওয়া যায় তাকে মনোনয়ন দেয়া উচিত বলে মনে করেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।

অপরদিকে বিশিষ্ট শিল্পপতি মোর্শেদ আলম জনস্বার্থে এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করে যাচ্ছেন। স্থানীয় বিএনপির একটি অংশ মনে করেন আগামী সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন দৌড়ে মোর্শেদ আলম অনেকটা এগিয়ে রয়েছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম জানান, দলের জন্য ত্যাগী, রাজপথে নেতৃত্ব দানকারী, সাংগঠনিক সৎ যোগ্য কর্মীদের কাছে যার গ্রহণ যোগ্যতা রয়েছে এরকম নেতাকেই মনোনয়ন দেয়া উচিত।

জানা যায়, নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসাবে দলীয় কোন্দল মেটাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের নির্দেশে ইতিমধ্যেই দলের সিনিয়র নেতারা জেলায় জেলায় সাংগঠনিক তৎপরতা শুরু করেছে। তারই অংশ হিসাবে ময়মনসিংহ উত্তর ও দক্ষিণ-এর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানকে। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন- কোন্দল যে কোন দলের জন্য ক্ষতিকর। তবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে দলটির দলীয় কোন্দল না মেটালে আ.লীগের শক্তিশালী প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টিকে থাকা অনেকটাই কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!