• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পেও বাড়ল মেয়াদ-ব্যয়


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ২৩, ২০১৮, ১০:৪৯ পিএম
ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পেও বাড়ল মেয়াদ-ব্যয়

ঢাকা: সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ছোট-বড় অধিকাংশ প্রকল্পতেই মেয়াদ ও প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর জন্য অদক্ষ আমলা ও রাজনৈতিক সুবিধা হাসিলের জন্য এমনটি ঘটে থাকে। তেমনি একটি ঘটনা এ ঘটলো মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন বাস্তবায়নে নেয়া ‘ভ্যাট অনলাইন প্রকল্প’। প্রকল্পটি ২০১৩ সালে হাতে নিয়েছিল সরকার। যার মেয়াদ ছিল ২০১৮ সাল পর্যন্ত, তা বেড়ে এখন হলো ২০২০ সাল পর্যন্ত।

একই সঙ্গে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন ব্যয়ও ২৫ দশমিক ১১ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) রাজস্ব খাতের আলোচিত এ প্রকল্পটির দ্বিতীয় সংশোধনী অনুমোদন করেছে।

মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত একনেক সভায় ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পসহ মোট ১৪টি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ৬ হাজার ২২৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে বলে প্রাক্কলন করা হয়েছে।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেকের চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী, একনেক সদস্যরা, প্রতিমন্ত্রী ও সচিবরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এক সংবাদ সম্মেলনে প্রকল্পগুলো সম্পর্কে সাংবাদিকদের জানান।

ভ্যাট অনলাইন প্রকল্প
ভ্যাট সংক্রান্ত আইনের ফাঁক-ফোকর দূর করে রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য ভ্যাট প্রশাসনকে আধুনিকায়নের জন্য সরকার ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক আইন-২০১২ প্রণয়ন করে। নতুন ভ্যাট আইনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ব্যবসা পরিচালনা সুলভ ও সহজ করা, কর দেন না এমন ব্যক্তিদের করের আওতায় আনা এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের লেনদেন সক্ষমতা বৃদ্ধি ও সেবাভিত্তিক ভ্যাট প্রশাসন চালুর জন্য ২০১৩ সালে ভ্যাট অনলাইন প্রকল্প নেয় সরকার।

৫৫১ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা ছিল। এখন প্রকল্পটির বাস্তবায়ন মেয়াদ দুই বছর বাড়িয়ে ২০২০ সালের ডিসেম্বর করা হয়েছে। আর ব্যয় ১৩৯ কোটি টাকা বাড়িয়ে ৬৯০ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

মসলা উৎপাদন
একনেক বৈঠকে উৎপাদন বাড়ানোর জন্য মসলা জাতীয় ফসলের গবেষণা জোরদার করতে একটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। প্রকল্পের পটভূমিতে বলা হয়েছে, দেশে বছরে প্রায় ৩১ লাখ টন মসলার চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে দেশে মসলা উৎপাদন হয় প্রায় ২০ লাখ টন। এ জন্য মসলার চাষ বাড়াতে গবেষণার জন্য একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ প্রকল্পে খরচ ধরা হয়েছে ৯৪ কোটি টাকা।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, দেশের যেসব জেলায় পেঁয়াজ চাষ বেশি হয়, সেখানকার কৃষকদের প্রণোদনা দেয়ার পরিকল্পনা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।

একনেকে অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে: কুমিল্লা বিভাগের ছয় জেলায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন। এতে ব্যয় হবে এক হাজার ৫২১ কোটি টাকা। পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার গাজনার বিলের সংযোগ নদী খনন, সেচ সুবিধার উন্নয়ন এবং মৎস্য চাষ প্রকল্প নেয়া হয়েছে।

কক্সবাজার জেলার বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে নিরাপত্তা উন্নত করার জন্য উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় নাফ নদী বরাবর পোল্ডারগুলোর পুনর্বাসনে একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় ৪৭ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও ৪৬টি পানি নিষ্কাশন মেরামত ও ৮টি পানি নিষ্কাশন অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। বিভিন্ন সময়ের বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, উচ্চ জোয়ারে এসব বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ বাঁধ সংস্কার হলে বাঁধের ওপর দিয়ে বিজিবির টহল দেয়া সহজ হবে। এতে অনুপ্রবেশ বন্ধ হবে বলে মনে করেন পরিকল্পনামন্ত্রী। এ প্রকল্পে খরচ ধরা হয়েছে ১৪১ কোটি টাকা।

এছাড়া বৃহত্তর নোয়াখালী জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, মরজাল-বেলার সড়ক ও পোড়াদিয়া-বেলাব জেলা মহাসড়ক দুটি যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প, বগুড়া শহর থেকে সেখানকার মেডিকেল কলেজ পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প, ইন্ট্রিগ্রেটেড মেরিটাইম নেভিগেশন সিস্টেম স্থাপন প্রকল্প, গোবরাকুড়া-কড়ইতলী স্থলবন্দর উন্নয়ন প্রকল্প, ইন্ট্রোডাকশন অব মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) এবং মেশিন রিডেবল ভিসা (এমআরভি) ইন বাংলাদেশ প্রকল্পের তৃতীয় সংশোধনী, লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প, বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি প্রকল্প এবং কেমিকেল মেট্রোলজি অবকাঠামো সমৃদ্ধকরণ প্রকল্প অনুমোদন করেছে একনেক।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই

Wordbridge School
Link copied!