• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভ্যাট আইন বাস্তবায়নে নরম সুরে এনবিআর


জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক অক্টোবর ৮, ২০১৭, ০৮:৩৩ পিএম
ভ্যাট আইন বাস্তবায়নে নরম সুরে এনবিআর

ঢাকা: অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বলেছেন, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই প্রস্তাব দিয়েছে নতুন ভ্যাট আইনের প্রভাব নির্ণয় করতে। এ বিষয়ে এনবিআর নতুন প্রক্রিয়ায় কাজ শুরু করেছে।

রোববার(৮ অক্টোবর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনে জাতীয় অর্থনীতিতে মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইনের অভিঘাত বিষয়ে গবেষণা বিষয়ক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় তিনি বলেন, বিভিন্ন সংস্থা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিয়ে রাজস্ব সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে যৌথভাবে কাজ করতে চায় এনবিআর।

তিনি বলেন, নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নে যে সব চ্যালেঞ্জ ছিল সেগুলোকে অপরচুনিটি হিসেবে দেখছি। সমস্যাগুলোকে ধরে আমরা এ আইনের আরও গভীরে যেতে চাই। এফবিসিসিআই আমাদের যে প্রস্তাব দিয়েছে তা নিয়ে আমরা এক সঙ্গে কাজ করতে চাই বলেও মন্তব্য করেন এনবিআর চেয়ারম্যান।

নজিবুর রহমান বলেন, ২০১৫ সালে এফবিসিসিআইর সঙ্গে এনবিআরের তিনটি (ট্যাক্স, ভ্যাট ও কাস্টমস) যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ হয়। এটি আবারও সক্রিয় করতে হবে। এখন থেকে যা হবে, সব যৌথভাবে হবে।

তিনি বলেন, এককভাবে নয়, ব্যবসায়ী সমাজকে নিয়ে আমরা একসঙ্গে কাজ করব। আমরা আয়কর আইন নিয়ে কাজ শুরু করেছি। এটা নিয়েও আমরা যৌথভাবে কাজ করতে চাই। এ আইন নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসতে চাই। কোথায় সমস্যা আছে তা নির্ধারণ করে সমাধান করা হবে।

তিনি বলেন, কাস্টমস্ আইনের চূড়ান্ত খসড়া নিয়েও এফবিসিসিআইয়ের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইনডো অথরাইজ ইকোনোমিক অপারেটর, গ্রীণ চ্যালেঞ্জ, পোস্ট জিআরএম অডিট- এসব নিয়ে আমরা দুই পক্ষ একসঙ্গে কাজ করতে চাই।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ভ্যাট আইন বাস্তবায়নে চারটি বিষয়ে রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ব্যবসায়ীদের সহায়তা, দেশীয় শিল্পের সুরক্ষা, আন্তর্জাতিক বাজারে নিজেদের অবস্থান টিকিয়ে রাখা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা।

সভায় এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, ভ্যাট আইন নিয়ে আমরা অনেক আলোচনা করেছি। কিন্তু তা ফলপ্রসূ হয়নি। আলোচনা ফলপ্রসূ হলে বাস্তবায়নে সমস্যা হত না। ভ্যাটের টাকার উদ্দেশ্য যদি মহৎ হয় তাহলে আমাদের দিতে আপত্তি নেই। নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করতে হলে ব্যবসায়ী ও সরকারের মধ্যে আস্থার জায়গা তৈরি করতে হবে। আমাদের মধ্যে পারস্পারিক সহযোগিতা বজায় রাখতে হবে।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যেসব সমস্যা রয়েছে তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। বিভিন্ন মহল থেকে ভ্যাট হার ১২ শতাংশ করার দাবি আসছে। এটি কমলে ২৪ হাজার কোটি টাকা কর আহরণ কমবে। এ অর্থ কোন জায়গা থেকে আসবে তা নির্ধারণ করতে হবে। কারণ আমাদের রাজস্ব বাড়াতে হবে।

এসময় কর ব্যবস্থা আধুনিকায়নের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, এটা হলে হয়রানি কমবে। একই সঙ্গে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়বে। তাই হয়রানি ও দুর্নীতি রোধে কর ব্যবস্থা অটোমেশনের বিকল্প নেই।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নে জন্য যেসব বাধা আছে আগে সেগুলোর ওপর গবেষণা করতে হবে। এ আইন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ভ্যাট না বাড়িয়ে, তা যেন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ও আধুনিক হয় সেদিকে নজর দিতে হবে।

তিনি বলেন, কর প্রশাসনের কাছ থেকে ব্যবসায়ীদের হেনস্থা বা হয়রানি করা হয় বলে প্রায়ই অভিযোগ পাওয়া যায়। কেন তারা এমন পরিস্থিতির শিকার হন তা নির্ধারণ করতে হবে। একই সঙ্গে ভ্যাট বিষয়ে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে ছোট ছোট খাত ভিত্তিক গবেষণার পরামর্শ দেন তিনি।

এনবিআরের সদস্য ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, মধ্যম আয়ের দেশ হতে হলে জিডিপির ১৫ শতাংশ রাজস্ব আহরণ প্রয়োজন হয়। বর্তমানে এখাত থেকে আমাদের অবদান ১০ শতাংশেরও নিচে। তাই এটি বাড়াতে ফরমাল ইকোনমিতে যেতে হবে। ইনফরমাল ইকোনমি কমিয়ে আনতে হবে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আতা

Wordbridge School
Link copied!