• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
মুভি রিভিউ

‘ভয়ংকর সুন্দর’ না নাটক, না সিনেমা


আবদুল মমিন রনি আগস্ট ৫, ২০১৭, ০৭:০২ পিএম
‘ভয়ংকর সুন্দর’ না নাটক, না সিনেমা

অভিনয়ঃ পরমব্রত চট্টপাধ্যায়,ভাবনা, লুৎফর রহমান জর্জ,সৈয়দ হাসান ইমাম,ফারুক আহমেদ, অ্যালেন শুভ্র।

পরিচালকঃ অনিমেষ আইচ

মূলকাহিনীঃ বিয়ে করবেনা বলে বাড়ি থেকে পালিয়ে আসা ধনীর দুলালী ভাবনা, আর হোটেল বয়ের কাজ করা পরমব্রত ভালোবেসে বিয়ে করে পুরাণ ঢাকায় বস্তিতে বসবাস করা। পানি সংকটে তাদের জীবন যাপনের পরিনতি ও তা থেকে বের হয়ে আসার(প্রতিশোধ)গল্প নিয়েই নির্মিত হয়েছে ভয়ংকর সুন্দর সিনেমাটি।

প্রাপ্তিঃ দুটো গান (মমতাজ এর-ফিরবোনা আর ঘরে, তাহসান আর এলিটার-আমি পড়ে থাকি),একটা ভিন্ন কনসেপ্টের একেবারে সাদামাটা গল্প।

ত্রুটিঃ সিনেমার শুরুতে বাসা থেকে পালিয়ে আসা ভাবনা অপরিচিত ঢাকায় দুইঘন্টা ধরে রিক্সায় ঘুরছে আর পরমব্রত বুড়িগঙ্গায় নৌকায় ভাসছে।প্রশ্ন হলো বুড়িগঙ্গায় বিধ্বস্ত পরমব্রত কেন?(ব্যাকগ্রাউন্ড কোন গল্প পুরো মুভিতে নাই)।একজন হোটেল বয় আর কাস্টমারের লুতুপুতু প্রেমের কাহিনী যেভাবে দেখানো হয়েছে সেটা পুরাতন বাংলা মুভির আইডোলজি থেকে বের হতে না পারা অনিমেষকে পরিচয় করিয়ে দেয়।বস্তিতে বসবাস করা ভাবনা যখন খাবার পানির জন্য গনধোলায় খায় তার আগের ডায়লগটা ছিলো আমি দরকার হলে টাকা দেবো তবুও খাবার পানি দাও। যদি টাকাই দিতে পারে তবে খাবার পানি কিনে কেন খেতে পারেনা?প্রতিদিন পরমব্রত পনের টাকার একবোতল পানি কিনে এনে কেন ভাগ করে খায়? দীর্ঘ সময় বসবাস করেও ভাবনার একই ধরনের ড্রেস থেকে বের না হওয়া,এক সিনে অভাব দেখালে আরেকসিনে অভাব বোঝা না যাওয়া।বরিশাল থেকে সরাসরি বস্তিতে কিভাবে লুৎফর জর্জ চলে এলো?এত বড় ঢাকায় এটা সম্ভব নয়। সংলাপে বললো ভাবনার বাবা আর মা আসবে পরের দৃশ্যে দাদুও চলে আসলো? আগের সংলাপের দরকার কি ছিলো?

সোজাকথা এই মুভিতে এত অসংগতি ধারনার বাইরে।ক্যামেরার কাজ আমার খুব একটা ভালো লাগেনি, কালার কারেকশনও মন ছোঁয়নি।কোন ভালো সংলাপ নেই, সাসপেন্স নেই,গতি নেই,মুভির মেসেজটাও উঁচু মানের মনে হয়নি,অভিনয় যাচ্ছেতাই,সবাক ভাবনার চেয়ে নির্বাক ভাবনার অভিনয় ভালো ছিলো(মোটের উপর সুপার ফ্লপ),পরমব্রত, জর্জ, খায়রুল সবুজ,ফারুক এর প্রতিভার পুরো অপচয়।অনিমেষ আইচের অভিনয় বের করে আনার ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেয়া যায় নির্দ্বিধায়।

এই সিনেমার আরো যে সমস্যা সেটা হলো মদ খেলেই সারাদিন একজন মাতলামি করে এইটা বাংলা মুভি ছাড়া আর কোথাও দেখা যায়না। এই কনসেপ্টটা অনিমেষ ছাড়তে পারেননি।জিরো ডিগ্রী দেখে যেমন হতাশ তারচেয়ে কয়েকগুণ বেশি হতাশ ভয়ংকর সুন্দর দেখে।অনিমেষ আইচকে আমার মনে হয়েছে বাংলা ছবির বাইরে কোন মুভি না দেখা পরিচালক। নইলে পরমব্রতের দুইটা মুভি দেখলেও পরমব্রতকে এই বস্তাপচা অভিনয় করতে হতোনা।

এই ছবির প্রথম একঘন্টা বাদ দিলেও সিনেমার মুলমেসেজ এ কোন সমস্যা হতোনা।এর অর্থ দাঁড়ায় একঘন্টা বাদ দিলে ৫৩ মিনিটের একটা নাটক হয়েছে।

পত্রিকায় পড়েছিলাম ভয়ংকর সুন্দর অনিমেষ আইচের স্বপ্নের ছবি। এটা যদি স্বপ্নের ছবি হয় তবে অনিমেষ আইচকে আজ থেকে আমি বয়কট করলাম।অনিমেষ আইচ এর কাজ পুকুরে বোয়াল মাছের মত(টিভি নাটক) মনে হলেও সমুদ্রে (সিনেমা)চুনোপুঁটির চেয়ে ক্ষুদ্র লেগেছে। এটা না হয়েছে নাটক না হয়েছে সিনেমা।

রেটিং দিতে বললে আমি এই ছবিকে ৩/১০ দেবো। এইটাই আমার কাছে বেশি মনে হচ্ছে।একটা আয়নাবাজির মেকিং এর কাছে ভয়ংকর সুন্দর সুপার ফ্লপ।

সোনালীনিউজ/বিএইচ

 

Wordbridge School
Link copied!