• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মঞ্চ হলো অভিনয়ের আসল বিদ্যাপীঠ : ফারুক আহমেদ


বিনোদন প্রতিবেদক আগস্ট ১৪, ২০১৬, ০৫:৩২ পিএম
মঞ্চ হলো অভিনয়ের আসল বিদ্যাপীঠ : ফারুক আহমেদ

জনপ্রিয় অভিনেতা ফারুক আহমেদ। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দাপটের সঙ্গে অভিনয় করে যাচ্ছেন। মঞ্চ, টেলিভিশন কিংবা চলচ্চিত্র প্রতিটি ক্ষেত্রেই একজন পেশাদার অভিনেতা হিসেবে পদচারণা রয়েছে তার। এ মুহূর্তে ব্যস্ত রয়েছেন একাধিক ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় নিয়ে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাটকগুলো হলো- ‘মিলার বারান্দা’, ‘এই কূলে আমি আর ওই কূলে তুমি’, ‘রূপকথার মা’, ‘বুবুনের সাত সতেরো’সহ প্রভৃতি। প্রতিনিয়তই এসব নাটকের শুটিং নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে ফারুক আহমেদকে।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রচার চলতি ধারাবাহিক নাটকের কাজ নিয়মিত করছি। এই নাটকগুলো ছাড়া আরো কয়েকটি নতুন ধারাবাহিকের কাজও চলছে। সবমিলিয়ে শুটিংয়ে বিরামহীন পথচলায় ডুবে আছি। এ কারণে নিজের জন্য সময় বের করাটা অনেকটা কঠিনই বলা চলে। তারপরও চেষ্টা করি সব মানিয়ে চলার।

এদিকে ধারাবাহিকের পাশাপাশি গত কিছুদিন ধরে আসন্ন কোরবানির ঈদ উপলক্ষে বিশেষ নাটকের অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ফারুক আহমেদ। এরই মধ্যে বেশকটি খন্ড নাটকের শুটিং শেষ করেছেন এ অভিনেতা। গত রোজার ঈদে তার অভিনীত সাগর জাহানের পরিচালনায় ‘অ্যাভারেজ আসলাম’ ধারাবাহিকটি বাংলাভিশনে প্রচার হয়েছিল। এ মুহূর্তে কোরবানির ঈদের জন্য এর সিক্যুয়াল নির্মাণ কাজ চলছে। বর্তমানে শুটিং ইউনিট কক্সবাজার থাকলেও এখন পর্যন্ত ফারুক আহমেদ সেখানে যাননি। তার অংশের দৃশ্যায়ন হবে ১৭ই আগস্ট। সেদিনই কক্সবাজার গিয়ে পৌঁছাবেন বলে জানান তিনি।

সিক্যুয়ালের এ নাটকটিতেও ‘লজ্জাবতী বাহার’ চরিত্রে অভিনয় করছেন জনপ্রিয় এই অভিনেতা। দীর্ঘ সময়জুড়ে অভিনয়ের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা ফারুক আহমেদের এ মাধ্যমটি সম্পর্কে অভিজ্ঞতা ব্যাপক। সে অভিজ্ঞতার আলোকে বর্তমান টিভি নাটকের হালচাল জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন চ্যানেল হয়েছে অনেক। প্রতিযোগিতা হচ্ছে। আগে তো একটা মাত্র চ্যানেল ছিল। এখন সে জায়গায় অনেক চ্যানেল। দিনে দিনে শিল্পীর সংখ্যাও বেড়েছে। নাটক প্রচার হচ্ছে প্রচুর।

অভিনয়শিল্পীরা নিজেদের মূল্যায়ন করতে পারেন। এটা আমার দৃষ্টিতে ইতিবাচকই মনে হয়। আরেকটি ব্যাপার যেটা এখন অনেক ভালো ভালো নির্মাতা তৈরি হয়েছেন। যারা যথেষ্ট মেধাবী ও সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজ করছেন। উন্নত প্রযুক্তি সম্পর্কে তাদের ভালো জ্ঞান রয়েছে। আর সেসব প্রযুক্তি ব্যবহার করেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এর ফলে একটা ভালো প্রোডাশন বের হয়ে আসছে। এটাও একটা ইতিবাচক দিক। তবে সমস্যা হলো আমাদের বাজেট। যে পরিমাণ অর্থের দরকার সেটা নির্মাতারা পাচ্ছেন না। যে কারণে নানা জটিলতা প্রায়ই দেখা দিচ্ছে। বাজেট সমস্যা কেটে গেলে নাট্যাঙ্গনের অস্থিরতা অচিরেই কেটে যাবে।

একটা সময় ফারুক আহমেদ তার সমসাময়িকদের সঙ্গে কাজ করেছেন। এখনও করছেন। তবে তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন অনেক তরুণ শিল্পী। নতুন, পুরাতন সংমিশ্রণ এবং এ সময়ের নাটকের কাজ প্রসঙ্গে অভিজ্ঞতার কথা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, এখনকার শিল্পীদের নিয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই। কারণ তারা যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছেন। ভালো-খারাপ কাজ তো সবাই কম-বেশি করছেন। তবে একটা ব্যাপার আমার মনে হয়েছে, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চললেও অনেকে চর্চার জায়গা থেকে সরে আসছেন। পড়াশোনা কিংবা জানার ব্যাপারটির সঙ্গে অভ্যস্ত নন। সময় পেলে অভিনয়ের চর্চা না করে ফেসবুক নিয়ে ব্যস্ত থাকেন তারা। শেখার জন্য কিংবা জানার জন্য বই পড়তে হয়। এটা এখন অনেকের মধ্যেই দেখা মেলে না। আর শিল্পের চর্চার জন্য মঞ্চে কাজ করা জরুরি। কারণ মঞ্চ হলো অভিনয়ের আসল বিদ্যাপীঠ।

পাশের দেশ ভারত কিংবা অন্য দেশে অভিনয় শেখার জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আমাদের দেশে সেটা না থাকলেও আছে মঞ্চ। টিভি মাধ্যমে অভিনয়ের জন্য থিয়েটারের ছেলেমেয়েরা আসছেন কিন্তু সংখ্যায় কম। সবমিলিয়ে বলছি, একজন অভিনয়শিল্পীকে সবার আগে জানার পরিধি বাড়াতে হবে। সে সঙ্গে চর্চার জায়গাটা ঠিক রাখতে হবে। তাহলেই আদর্শ শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়া সম্ভব।

ক্যারিয়ারে অভিনয়ের পাশাপাশি নির্মাণেও এসেছেন ফারুক আহমেদ। তবে টিভি পর্দায় তিনি নিজের নাম নির্মাতা হিসেবে প্রকাশ করতে চান না। তার পরিচালিত ‘মেঘেদের সংসার’ ধারাবাহিকটি প্রচারের অপেক্ষায় রয়েছে। কিন্তু সেখানে নির্মাতা হিসেবে তার নাম থাকবে না বলেই জানান এ অভিনেতা। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এ নাটকটি এটিএন বাংলায় প্রচার হবে।

তবে আমি নির্মাণ করেছি সেটা সেখানে দেবো না। আমি অভিনেতা। এ পরিচয়ে সবার কাছে থাকতে চাই। তাছাড়া নির্মাতা হিসেবে নাম এলে অনেকে মনে করবেন আমি অভিনয় ছেড়ে দিয়েছি।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!