দিনাজপুর : সবার মন জয় করা অনন্য স্বাদের টসটসে লাল দিনাজপুরী লিচু এখন বাজারে। আর দিনাজপুরী লিচু মানেই অন্যরকম মিষ্টি ও রসালো স্বাদ। আর বৈশিষ্ট্য নিয়ে বিভিন্ন জাতের লিচুর মধ্যে বেদানা, বোম্বাই, মাদ্রাজি, চায়না-থ্রি আর দেশী লিচু এখন গাছে গাছে। বাগানগুলোতে মৌ মৌ গন্ধ। দিনাজপুরী লিচু যার নাম শুনলে অনেকে ঠিক থাকতে পারে না। গোটা দেশে যার চাহিদা-বাজার রয়েছে।
দিনাজপুরের নিউমার্কেটে ফলের আড়তে মাদ্রাজী লিচু উঠেছে। যদিও লিচু প্রকৃতভাবে পাকেনি তারপরেও বাজারে কদরের কমতি নেই। সময়ের আগে বাজারে আসা লিচুর স্বাদ তেমন পাওয়া না গেলেও চাহিদা কম নাই। আগামী সপ্তাহে বাজারে নামতে শুরু করবে লিচু। তবে আবহাওয়ার কারণে এবার লিচুর ফলন কম হয়েছে বলে জানায় লিচু চাষীরা।
বিরলের কাশিডাঙ্গা এলাকার বেলালসহ চাষীরা জানায়, বাজারে মাদ্রাজী প্রতি শত লিচুর মুল্য ১৮০ থেকে ২০০টাকা। যদিও পর্যাপ্তভাবে বেদনা ও চাইনা থ্রিসহ অন্যান্য জাতের লিচু নামেনি। ১০/১২দিন পর পুরোদমে লিচু বাজারে আসবে।
লিচু চাষী বেলাল উদ্দিন জানান, গত মৌসুমে আমার ১৯টি লিচু গাছে ৪ লাখ লিচু পাওয়া গেলেও এবার পাবো ৬০/৭০ হাজার লিচু। মুকুলের সময় বৃষ্টি-ঝড় হওয়ায় এ ফলন কমে গেছে।
দিনাজপুর শহরের ফলমার্কেট এর ইমন ফল ভান্ডার জানায়, লিচু বাজারে কেনাবেচা পুরোদমে শুরু হবে আগামী সপ্তাহে।
বিরলের অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা আশরাফুল আলম জানান, এখানে বোম্বে লিচুর চাষ বেশী হয়। তবে এ জাতের লিচুটি একবছর ভাল হলে পরের বছর একটু ফলন কমে যায়। এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তবে এরপরেও প্রতিটি গাছে শতকরা ৭০/৭৫ভাগ লিচু পাওয়া যাবে। এখন বাজারে নেমেছে মাদ্রাজী জাতের লিচু।
লিচু পল্লী বলে খ্যাত মাসিমপুর এলাকার মোসাদ্দেক জানায়, বাগানের গাছে থোকায় থোকায় লিচুতে আলতো সিদুর রঙে রঙিন হয়ে ডালে ডালে ঝুলছে। এবার ঝড়-বৃষ্টিতে ফলন কমে গেছে।
জেলা কৃষি সমপ্রসারন বিভাগ জানায়, দিনাজপুর জেলায় ৪৭৭০ হেক্টর জমিতে ছোট-বড় নিয়ে প্রায় ৫ হাজার ৪১৮টি লিচুর বাগান রয়েছে। বাগান ছাড়াও কিছু সংখ্যক বাড়ী, বাড়ী সংলগ্ন ভিটা জমিতে ২/৪টি করে লিচু গাছ রয়েছে বলে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়।
দিন দিন লিচুর ফলন এবং দাম ভাল পাওয়ায় এ চাষের জমি বাড়ছে। বাগান ছাড়াও কিছু সংখ্যক বাড়ী, বাড়ী সংলগ্ন ভিটা জমিতে ২/৪টি করে লিচু গাছ রয়েছে।
উল্লেখ্য, এক দশক যাবত বৃহত্তর দিনাজপুরের বিভিন্ন উপজেলায় অবিশ্বাস্য গতিতে লিচুর চাষাবাদ বাড়ছে। মৌসুমে রাজধানী থেকে আগত লিচু ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন বাগান থেকে সরাসরি প্রতিদিন ২৫/৩০ লাখ লিচু কিনে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠায়। যদিও এর বেচাকেনা এখনও পুরোদমে শুরু হয়নি। গত বছর যেখানে ১শ বেদানা লিচু ৭৫০ টাকায় বিক্রি হয়, সেখানে সমসংখ্যক চায়না-থ্রি লিচু ৭০০/৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :