• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

মনোনয়ন হারাচ্ছেন আ.লীগের ১৩৭ এমপি!


সোনালী বিশেষ জানুয়ারি ৮, ২০১৮, ০৩:৪৪ পিএম
মনোনয়ন হারাচ্ছেন আ.লীগের ১৩৭ এমপি!

ঢাকা : একাদশ জাতীয় সংসদের প্রস্তুতি চলছে। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের ডিসেম্বরেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে, নির্বাচনের জন্য প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

ছয়টি মাঠ জরিপের ভিত্তিতে দুটি পৃথক তালিকা তৈরি করা হয়েছে। দুটি বিষয় মাথায় রেখে তালিকা করা হচ্ছে। একটি তালিকা করা হয়েছে, যদি বিএনপি বেগম খালেদার নেতৃত্বে নির্বাচন করে তার জন্য। অন্য তালিকা যদি বিএনপি খন্ডিতভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সেক্ষেত্রে।

দুটি তালিকাতেই দলের সভাপতি শেখ হাসিনার জন্য তিনটি আসনে প্রার্থীতার কথা বলা হয়েছে। তবে শেখ হাসিনা ছাড়া একটির বেশি আসনে কাউকে রাখা হয়নি। আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ সবাই একটি করে আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

আওয়ামী লীগের তৈরি করা তালিকায় তরুণদের জয়জয়কার। অন্তত ৭৫টি আসনে তরুণদের মনোনয়নের প্রস্তাব করা হয়েছে। দুটি তালিকাতেই অন্তত ২২ জন বর্তমান মন্ত্রী বাদ পড়েছেন। বিএনপি অংশগ্রহণ করলে আওয়ামী লীগ বর্তমান এমপিদের ১৩৭ জনকে আর মনোনয়ন দেবে না।

আর বিএনপি অংশগ্রহণ না করলে বর্তমান এমপিদের ৭৫ জন আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিট পাবেন না। আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে তার শরীকদের জন্য ২৫টি আসন রেখেছে। আর বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ না নেয় বা খন্ডিতভাবে অংশ নেয় সেক্ষেত্রে একক নির্বাচনের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সূত্রগুলো এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। প্রার্থীতা চূড়ান্তের কথা স্বীকার করেছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় একাধিক নেতা। তবে তাঁদের মতে, এই তালিকাও শেষ মুহূর্তে পরিবর্তিত হতে পারে।

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলছে, আওয়ামী লীগের সর্বশেষ জরিপ সমাপ্ত হয়েছে গত ১৫ ডিসেম্বর। ওই জরিপে দেখা গেছে তালিকা ‘ক’ অনুযায়ী প্রার্থিতা দেওয়া হলে, আওয়ামী লীগ ১৭৩ থেকে ১৮৫ আসনে বিজয়ী হবে। তালিকা ‘ক’ অর্থ হলো বিএনপি বেগম জিয়ার নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশ নেয়।

তালিকা ‘খ’ অনুযায়ী অর্থাৎ বিএনপি যদি খন্ডিতভাবে নির্বাচনে অংশ নেয় সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ ২১০ থেকে ২২৫ টি আসনে জয়ী হতে পারে। ওই জরিপের ভিত্তিতে দুটি প্রার্থী তালিকাতেই শেখ হাসিনাকে গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট এবং রংপুরের একটি আসনে রাখা হয়েছে। শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয় কিংবা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না।

দুটি তালিকাতেই তারুণ্যের জয়জয়কার। অন্তত ৭৫ জন তরুণ এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাচ্ছেন। এদের মধ্যে প্রাক্তন ছাত্রলীগের নেতা আছেন অন্তত ৪০ জন। বাকি ৩৫ জন হলেন তরুণ ব্যবসায়ী, খেলোয়াড়, অভিনয় শিল্পী, সঙ্গীত শিল্পী ইত্যাদি।

এবারের মনোনয়ন তালিকাতে শীর্ষস্থানে আছেন ব্যবসায়ী, শিল্পপতি বৃন্দ। দুটি তালিকাতেই কমবেশি ১০০ অর্থাৎ প্রায় এক তৃতীয়াংশ আসনে ব্যবসায়ী, শিল্পপতিদের মনোনয়নের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এরপরই আসে পেশাজীবী।

আইনজীবী, শিক্ষক, চিকিৎসক, কৃষিবিদ রয়েছেন অন্তত ৬০ থেকে ৭০ জন। অন্তত ১২ জন প্রাক্তন সামরিক কর্মকর্তা এবার আওয়ামী লীগের টিকিটেই নির্বাচন করবে বলেই তালিকার তথ্য বলছে। এদের মধ্যে অন্তত দুজন সাবেক সেনাপ্রধান রয়েছেন।

তবে আওয়ামী লীগের ভেতরে কোণঠাসা হয়ে থাকা জেনারেল অব. শফিউল্লাহ এবং এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) এ কে খন্দকার এবার আওয়ামী লীগের টিকিট পাচ্ছেন না। আবার আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত দুজন লতিফ সিদ্দিকী টাঙ্গাইল থেকে এবং অধ্যাপক আবু সায়ীদ পাবনার একটি আসন থেকে মনোনয়ন তালিকায় রয়েছেন।

আওয়ামী লীগের অনেক প্রবীণ সদস্যই এবারের মনোনয়ন তালিকায় নেই। সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর নাম ‘ক’ তালিকায় (বিএনপি অংশগ্রহণ করলে) নেই। অবশ্য ‘খ’ তালিকায় এই প্রবীণ নেতার নাম আছে। সাবেক ডেপুটি স্পিকার শওকত আলীর নাম দুই তালিকার কোনোটিতেই নেই।

আওয়ামী লীগের আরেক প্রবীণ এডভোকেট সাহারা খাতুনের নামও ‘ক’ তালিকায় নেই, তবে ‘খ’ তালিকায় তাঁর নাম ঢাকার একটি আসনের বিপরীতে রয়েছে। তালিকায় বর্তমান অর্থমন্ত্রীর নামও অনুপস্থিত।

আওয়ামী লীগ সূত্রগুলো বলছে, এই দুটি তালিকার ভিত্তিতে দলের সভাপতি নিজে কিছু কাজ করবেন, তারপর এটি অনুযায়ী নির্বাচনী প্রচারণায় নামবে আওয়ামী লীগ। তবে চূড়ান্ত হবার পরও পরবর্তী মাঠ জরিপে বড় পরিবর্তন হলে তালিকারও পরিবর্তন হবে।

আওয়ামী লীগের সূত্রমতে, অন্তত ২০০ জন প্রার্থীকে ইতিমধ্যে দলের সভাপতি ‘সবুজ সংকেত’ দিয়েছেন। তাঁরা এলাকায় কাজ করছেন।

সোনালীনিউজ/জেডআরসি

Wordbridge School
Link copied!